লিডসে ভারত বনাম ইংল্যান্ড (IND vs ENG) সিরিজের প্রথম টেস্টটিতে সুযোগ পান নি আকাশ দীপ (Akash Deep)। থাকতে হয়েছিলো রিজার্ভ বেঞ্চে। এজবাস্টনে জসপ্রীত বুমরাহ বিশ্রাম নেওয়ায় শিকে ছেঁড়ে তাঁর ভাগ্যে। হঠাৎ এসে যাওয়া সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে দেরী করেন নি বাংলার তারকা। ব্যাটিংবান্ধব বাইশ গজেও গতির ঝড় তোলেন তিনি। অনবদ্য সিম পজিশনিং-কে কাজে লাগিয়ে প্রথম ইনিংসে তুলে নেন চার উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে সেই সাফল্যকেও ছাপিয়ে যান আকাশ। তাঁর ঝুলিতে জমা পড়ে ছয় উইকেট। ১৯৮৬ সালে ইংল্যান্ডের মাঠে একটি টেস্ট ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়ে নজির গড়েছিলেন চেতন শর্মা। প্রায় চার দশক পর সেই সাফল্য ভাগ বসালেন আকাশ দীপ (Akash Deep)। তাঁর পারফর্ম্যান্সের প্রশংসায় আপাতত পঞ্চমুখ ক্রিকেটদুনিয়া। তৃতীয় টেস্টের একাদশেও কার্যত নিশ্চিত তিনি।
Read More: ENG vs IND: তৃতীয় টেস্টে ফিরছেন জসপ্রীত বুমরাহ, ভালো খেলেও দল থেকে বাদ আকাশ দীপ !!
বিবৃতি জারি করেছে এমসিসি-

এজবাস্টনে অসামান্য বোলিং করে যেমন কুর্নিশ আদায় করে নিয়েছেন আকাশ দীপ (Akash Deep), তেমন জায়গা করে নিয়েছেন বিতর্কের কেন্দ্রেও। দ্বিতীয় ইনিংসে জো রুট’কে (Joe Root) যে বলটিতে আউট করেন তিনি, চর্চা চলছে সেটি নিয়েই। পিচে পড়ার পর সোজা থেকে গিয়েছিলো ডেলিভারিটি। ইংল্যান্ড তারকার রক্ষণ ভেঙে তা আছড়ে পড়ে স্টাম্পে। সাজঘরে ফিরতে হয় তাঁকে। তবে পরে ভিডিওতে ধরা পড়েছে যে বোলিং করার সময় আকাশ দীপের (Akash Deep) পিছনের পা অর্থাৎ ব্যাকফুটটি রিটার্ন ক্রিজ ছুঁয়েছিলো। বেআইনি ডেলিভারিতে উইকেট পেয়েছেন আকাশ দীপ, ফায়দা তুলেছেন আম্পায়ারের ভুলের, ম্যাচের পর আওয়াজ তুলতে শুরু করেছিলো ইংল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে বাধ্য হয়েই ক্রিকেটের নীতি নির্ধারক সংস্থা মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাবকেও (এমসিসি) বিবৃতি জারি করতে হয়েছে বিষয়টি নিয়ে।
কোনো ‘ভুল’ করেন নি আকাশ দীপ (Akash Deep)। এক বিবৃতিতে এমসিসি জানিয়েছে, “গত সপ্তাহের ভারত বনাম ইংল্যান্ড টেস্টের চতুর্থ দিনে আকাশ দীপ যে বলটিতে জো রুট’কে বোল্ড করেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে,। সমর্থক ও ধারাভাষ্যকারদের একটা অংশ সেটিকে নো-বল বলে মনে করছেন। (আকাশ) দীপের ল্যান্ডিং-টা এমন জায়গায় হয়েছিলো যেটা সচরাচর দেখা যায় না এবং তাঁর পিছনের পা রিটার্ন ক্রিজ ছুঁয়ে আছে বলেও মনে হয়েছিলো। তা সত্ত্বেও তৃতীয় আম্পয়ার নো-বল ঘোষণা করেন নি। এমসিসি জানাতে চায় যে সেই সিদ্ধান্ত একদমই আইনসিদ্ধ ছিলো।” ব্যাকফুট নো-বলের ক্ষেত্রে ল্যান্ডিং-এর ‘পয়েন্ট অফ কন্ট্যাক্ট’ বা পা মাটি ছোঁয়ার মুহূর্তটি গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছে তারা। এজবাস্টনে ল্যান্ডিং-এর মুহূর্তে আকাশ দীপের পা রিটার্ন ক্রিজ স্পর্শ করে নি, ফলে ডেলিভারিটি ‘বৈধ’ ছিলো বলেই জানিয়েছে তারা।
দেখুন ডেলিভারিটি-
OH MY GOD AKASH DEEP! WHAT A DELIVERY TO GET ROOT! HOW DO YOU EVEN PLAY THAT? #EngvInd #IndvEng pic.twitter.com/wh4ilWD0fT
— Prantik (@Pran__07) July 5, 2025
দিদিকে সাফল্য উৎসর্গ আকাশের-

ডেলিভারি বিতর্ক নিয়ে মাথা ঘামাতে রাজী নন আকাশ দীপ (Akash Deep)। এজবাস্টনে ভারতকে জিতিয়ে আবেগে ভাসছেন তিনি। খেলা শেষের পর চেতেশ্বর পূজারাকে সাক্ষাৎকারে দিতে গিয়ে রীতিমত আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন বাংলার ক্রিকেটার। দুই মাস ধরে ক্যান্সারে ভুগছেন তাঁর দিদি। তাঁকেই এই সাফল্য উৎসর্গ করেছেন তিনি। বলেছেন, “আমি কাউকে বলি নি যে আমার দিদি ক্যান্সার আক্রান্ত হয়েছেন। দুই মাস আগেই রোগ ধরা পড়েছে ওনার। এখন উনি ভালো রয়েছেন, স্থিতিশীল রয়েছেন। আমার পারফর্ম্যান্সে খুব খুশি হবেন নিশ্চয়ই। ওনার মনের উপর দিয়ে বহু ঝড়ঝাপ্টা বয়ে গিয়েছে। আমি আমার পারফর্ম্যান্স ওনাকে উৎসর্গ করছি। শুধু ওনাকে একটু খুশি করতে চেয়েছিলাম। দিদি, এটা তোমার জন্য। যখনই বল হাতে তুলে নিয়েছি, শুধু তোমার কথা ভাবছিলাম। তোমার মুখটা ভেসে উঠছিলো। আমরা সবাই তোমার পাশে আছি।”