রবীন্দ্র জাদেজা, ইউসুফ পাঠান, জসপ্রীত বুমরাহ, হার্দিক পান্ডিয়া থেকে হালের রিঙ্কু সিং। আইপিএল বরাবরই একের পর এক নতুন তারকা উপহার দিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটকে। চলতি মরসুমে নজরকাড়া তরুণদের মধ্যে রয়েছেন মায়াঙ্ক যাদব (Mayank Yadav)। সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে (SMAT) দারুণ বোলিং করার পর দিল্লী ও চেন্নাই দলের ট্রায়ালে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সুযোগ মেলে নি। একটা সময় ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে নৌ-বাহিনীর চাকরিতে যোগ দেওয়ার কথাও ভেবেছিলেন। কিন্তু বাইশ গজের আকর্ষণ এড়াতে পারেন নি দিল্লীর তরুণ। শেষমেশ লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টস মেন্টর গৌতম গম্ভীরের (Gautam Gambhir) চোখে পড়েন তিনি। সুযোগ হয় ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-২০ লীগে। গত মরসুমেই খেলতে পারতেন আইপিএল, কিন্তু প্রস্তুতি ম্যাচে চোট পাওয়ায় ছিটকে যেতে হয়।
বছর ২১-এর পেসারকে ২০২৪-এর আইপিএলে সুযোগ দিয়েছে লক্ষ্ণৌ (LSG)। অভিষেকেই ঝড় তুলেছেন মায়াঙ্ক (Mayank Yadav)। প্রথম ম্যাচে পাঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে গতির তুফান তুলেছেন তিনি। স্পিডোমিটারের কাঁটা ছুঁয়েছিলো ১৫৫.৮ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা। ১৪ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেটও তুলে নেন। দ্বিতীয় ম্যাচে বেঙ্গালুরুর বিপক্ষেও অনবদ্য ছিলেন তিনি। ফের তিন উইকেট তুলে নেন তিনি। গতির ঝড়’ও জারি থাকে চিন্নাস্বামীর পিচে। ১৫৬.৭ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা বেগে বোলিং করে চলতি আইপিএলের দ্রুততম ডেলিভারির মালিক হন মায়াঙ্ক (Mayank Yadav)। অনুরাগীরা তাঁকে ভালোবেসে ডাকছেন ‘বন্দে-ভারত এক্সপ্রেস’ নামে। সবকিছু ঠিক থাকলে আসন্ন টি-২০ বিশ্বকাপে আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের মাটিতেও গতির আগুন ছোটাতে দেখা যাবে মায়াঙ্ককে।
Read More: IPL 2024, RR vs GT, Match-24: জয়ের সরণিতে ফিরতে বদ্ধপরিকর গুজরাত টাইটান্স, রাজস্থানের জয়রথ থামাতে ব্রহ্মাস্ত্র হতে পারেন এই ক্রিকেটার !!
কুড়ি-বিশের বিশ্বকাপে খেলতে পারেন মায়াঙ্ক-

এক্সপ্রেস ফাস্ট বোলারের অভাব ভারতীয় টিমে বরাবরের। ২০২২ সালে উল্কার বেগে উমরান মালিকের উত্থান হলেও সময় যত এগিয়েছে ততই লাইমলাইট থেকে সরে গিয়েছেন তিনি। গতি থাকলেও লাইন-লেন্থ সমস্যা ভুগিয়েছে উমরান’কে। মায়াঙ্ককে (Mayank Yadav) আলাদা মনে হচ্ছে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের। গতি তাঁর সহজাত। তার সাথে নিয়ন্ত্রণেও নিখুঁত তিনি। যেভাবে এক্সপ্রেস গতিতে স্যুইং মিশিয়ে বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধ আউট করেছেন ক্যামেরন গ্রিন’কে, তা নজর কেড়েছে। এছাড়াও তাঁর আত্মবিশ্বাসও ও আলাদা করে ঝরে পড়েছে প্রতিটি ডেলিভারিতে। মায়াঙ্ককে (Mayank Yadav) সঠিকভাবে গড়ে তুলতে পারলে ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য তা মঙ্গলজনক হবে বলে মত অনেকেরই। আইপিএলের পরের ধাপ কি টি-২০ বিশ্বকাপ? তাই নিয়ে চলছে চর্চা।
জুন মাসের শুরুতেই রয়েছে টি-২০ বিশ্বকাপ। সম্ভবত মে মাসের প্রথম সপ্তাহে দল ঘোষণা করতে পারে অজিত আগরকারের নেতৃত্বাধীন নির্বাচক কমিটি। পেসার হিসেবে জসপ্রীত বুমরাহ (Jasprit Bumrah) যে দলে থাকছেন তা নিশ্চিত। সুযোগ পেতে পারেন মহম্মদ সিরাজও। ক্রিকেট পরিসংখ্যান সংক্রান্ত ওয়েবসাইট ক্রিকবাজে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী বুমরাহ-সিরাজদের সাথেই ভারতীয় পেস ব্যাটারির ধার বাড়াতে জুড়ে দেওয়া হতে পারে মায়াঙ্ক যাদবকেও (Mayank Yadav)। নির্বাচকেরা নাকি নজর রাখছেন তাঁর দিকে। তাঁর গতি ও নিয়ন্ত্রণ নিঃসন্দেহে পক্ষে যাচ্ছে মায়াঙ্কের। তবে রয়েছে বিরুদ্ধমতও। সাধারণত ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে অপেক্ষাকৃত মন্থর উইকেট পাওয়ার সম্ভাবনা, সেখানে মায়াঙ্ক কতদূর কার্যকর হবেন তা নিয়ে রয়েছে সন্দেহ। ভাবাচ্ছে তাঁর অনভিজ্ঞতা ও চোট প্রবণতাও।