আজকাল ললিত কুমার মোদী (Lalit Modi) আলোচনার মধ্যে রয়েছেন। সম্প্রতি অভিনেত্রী সুস্মিতা সেনের সঙ্গে সম্পর্কের কথা বিশ্বের সামনে তুলে ধরেন তিনি। এখন যদিও ললিত মোদি বিদেশে জীবন কাটাচ্ছেন, কিন্তু একটা সময় ছিল যখন ভারতীয় ক্রিকেটে শেষ কথা বলতেন মোদি। তিনি এক বছরের মধ্যে ভারতীয় ক্রিকেটকে মিলিয়ন থেকে বহু বিলিয়ন ডলারের শিল্পে রূপান্তরিত করেছিলেন। ২০০৮ সালে যখন দেশে আইপিএল শুরু হয়েছিল তখন ললিত মোদিই লাইমলাইটে ছিলেন।
আইপিএল ললিত মোদীর মস্তিষ্কপ্রসূত
ভারতীয় ক্রিকেটে আইপিএল শুরু হতে না হতেই আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করেন ললিত মোদী। আজ বিশ্ববিখ্যাত আইপিএলকে তার নিজের মস্তিষ্কের আবিষ্কার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আইপিএল শুরু হওয়ার পর যা ঘটেছিল তা কারও কাছে গোপন নয়। ক্রিকেট ধীরে ধীরে ব্যবসায় পরিণত হয় এবং আইপিএলে কারচুপি ও ম্যাচ ফিক্সিংয়ের খবর আসতে থাকে। এই সমস্ত ঘটনার ধারাবাহিকতায় প্রথমে ললিত মোদী অভিযুক্ত হন এবং তারপর তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।
বিশ্ববিদ্যালয়ে বহুবার জেল খেটেছেন
ললিত মোদির সঙ্গে বিতর্কের পুরনো সম্পর্ক রয়েছে। পড়াশোনার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক বিক্রির দায়ে ১৯৮৫ সালে তিনি প্রথম কারাগারে যান। এরপর তাকে অস্ত্রসহ হামলার অভিযোগে গ্রেফতারও করা হয়। শুধু তাই নয়, কলেজ চলাকালীন এক ছাত্রকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে মোদীর বিরুদ্ধে। তিনি দুই বছরের জেল থেকে পালিয়ে গেলেও আবার আদালতে পৌঁছে চিকিৎসার কারণে ভারতে যাওয়ার অনুমতি চান। আদালত তাকে সমাজসেবা করার নির্দেশ দেন এবং তারপর তাকে দেশে ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়।
গাড়ির টাকা দিয়ে মার্সিডিজের কিস্তি দেওয়া
ললিত মোদি দিল্লির এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ী শ্রেণির পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার দাদা, রাজ বাহাদুর গুজারমাল মোদী, গাজিয়াবাদের কাছে একটি শহর মোদীনগরের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন এবং তিনি মোদি এন্টারপ্রাইজেস চালু করেছিলেন। ললিত আমেরিকায় পড়াশোনার জন্য জোর দিয়ে গাড়ি কেনার জন্য জেদাজেদি করেন। পরিবার তাকে পাঁচ হাজার ডলার দেয় এবং একটি সস্তা গাড়ি নেওয়ার পরামর্শ দেয়। কিন্তু ললিত সস্তার গাড়ি না নিয়ে মার্সিডিজ গাড়ি ইন্সটলেশনে নেন এবং প্রথম কিস্তি হিসেবে ৫ হাজার ডলার দেন।
মায়ের বন্ধুর সাথে বিয়ে
আমেরিকা থেকে ভারতে ফিরে আসার পর ললিত মোদী পারিবারিক ব্যবসার হাল ধরেন। কিন্তু এই ব্যবসা তার পছন্দ হয়নি। এর পর তিনি ভারতের অন্যতম বড় তামাক কোম্পানি গডফ্রে ফিলিপস ইন্ডিয়াতে কাজ করেন। সেখানে তিনি নির্বাহী পরিচালক ছিলেন। মায়ের বন্ধুর প্রেমে পড়েছিলেন ললিত মোদি। পরিবারের লোকজনকে বোঝানোর পরও তিনি তার জেদ না হারান এবং ১৯৯১ সালে তার মায়ের বন্ধু মীনালকে বিয়ে করেন। মীনাল তার থেকে ১০ বছরের বড় ছিল। পরে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান মিনাল।
বিজয় মালিয়ার মেয়েকে ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে নিয়োগ
ললিত মোদির অগাধ সম্পদ ছিল। আইপিএল চেয়ারম্যান হওয়ার পর তিনি দেশ ও বিশ্ব ভ্রমণের জন্য একটি প্রাইভেট জেট রেখেছিলেন। সেটি একটি বিলাসবহুল 8 সিটার জেট ছিল। বলা হয়, তিনি প্রাইভেট জেটটিকে ট্যাক্সি হিসেবে ব্যবহার করতেন। আইপিএলে যখন কারচুপি ও ফিক্সিং উন্মোচিত হয়, তখন লায়লা মাহমুদ নামে এক মহিলার নাম সামনে আসে। ললিত মোদির ব্যক্তিগত সহকারী ছিলেন এই মহিলা। পরে জানা যায় লায়লা ব্যবসায়ী এবং পলাতক বিজয় মাল্যের সৎ কন্যা।