ঋষভ পন্থ আহত হওয়ার পর ভারতীয় টেস্ট দলে উইকেটরক্ষক পদে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছিলো তা পূরণে কোচ রাহুল দ্রাবিড় বেছে নিয়েছিলেন কে এস ভরতকে (KS Bharat)। বাংলার ঋদ্ধিমান সাহা’কে বাতিল করে অন্ধ্রের ভরতের হাতেই দস্তানা তুলে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কোচ আস্থা দেখালেও আশানুরূপ পারফর্ম করতে পারেন নি দক্ষিণ ভারতীয় ব্যাটার। ২০২৩-এ অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে অভিষেক হয় তাঁর। বর্ডার-গাওস্কর ট্রফিতে বেশ কিছু ক্যাচ ফস্কান, ব্যাট হাতেও আহামরি পারফর্ম করতে পারেন নি। সেই বছর বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের (WTC) ফাইনালেও ব্যর্থ হন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধেও প্রত্যাশাপূরণে ব্যর্থ হন তিনি। ২০২৪-এর গোড়ায় তাঁকে আরও একটা সুযোগ দিয়েছিলেন কোচ দ্রাবিড়। কিন্তু বিশাখাপত্তনমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও দাগ কাটতে পারেন নি তিনি। এরপর জাতীয় দলের দরজা বন্ধ হয় ভরতের (KS Bharat) জন্য।
Read More: ৬, ৬, ৬, ৬, ৬…ঈশান কিষণের তাণ্ডবে কেঁপে উঠলো বাইশ গজ, ধুন্ধুমার দ্বিশতরান তরুণ তুর্কি’র !!
রঞ্জিতে ত্রিশতক ভরতের-
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আশানুরূপ পারফর্ম করতে না পারলেও ঘরোয়া ক্রিকেটের আঙিনায় নিঃসন্দেহে সেরা পারফর্মারদের একজন কে এস ভরত(KS Bharat) । ২০১৫ সালে দুর্দান্ত ত্রিশতরান’ও করেছিলেন তিনি। গ্রুপ-সি’র ম্যাচে গোয়ার বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছিলো অন্ধপ্রদেশ। সাধারণত মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করেন ভরত। সেদিন তাঁকে ব্যাটিং অর্ডারের উপরের দিকে তুলে এনেছিলেন কোচ। আস্থার দাম দিতে কোনো ভুল করেন নি উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। প্রশান্ত কুমারের সাথে ওপেনিং জুটিতে ১৬৪ রান স্কোরবোর্ডে যোগ করেন তিনি। ৬৩ করে প্রশান্ত ফিরলেও টলানো যায় নি ভরতকে (KS Bharat)। এমইউবি শ্রীরামের সাথে নতুন জুটি গড়েন তিনি। স্কোরবোর্ডে যোগ করেন আরও ৩৩৩ রান। ১৪৪ রানের ইনিংস খেলে শ্রীরাম (MUB Sriram) যখন ফিরছেন সাজঘরে তখনও অপর প্রান্তে অদম্য ভরত।
শতক, দ্বিশতকের গণ্ডী পেরিয়ে শেষমেশ ত্রিশতরানের মাইলস্টোনও পেরিয়ে যান কে এস ভরত (KS Bharat)। ৩১১ বলে ৩০৮ রান করে যখন আউট হন, তখন অন্ধ্রের স্কোরবোর্ডে ৫ উইকেটের বিনিময়ে ৫৪৩। দলের রান ৫৪৮ ছুঁতেই ডিক্লেয়ার করে দেন অধিনায়ক মহম্মদ কাইফ (Mohammad Kaif)। জবাবে ব্যাট করতে নেমে তারকাহীন গোয়া ১৯৮ রানে গুটিয়ে যায়। তাদের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৬ রান করেন দর্শন মিশল। প্রতিপক্ষকে ফলো-অন করানোর সিদ্ধান্ত নেয় অন্ধ্রপদেশ। ওপেনার অমোঘ সুনীল দেশাইয়ের ৫৭ রান সত্ত্বেও অন্ধ্রের রানের ধারেকাছেও পৌঁছতে পারে নি গোয়া। তাদের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয় ২১৪-এ। দুই ইনিংস মিলিয়ে দুভভারাপু শিবা কুমার ৮ উইকেট নেন অন্ধ্রের হয়ে। ইনিংস ও ১৩৬ রানের ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে নেয় ভরতের (KS Bharat) দল।
KS ভরতের কেরিয়ার পরিসংখ্যান-
দেশের হয়ে ৭টি টেস্ট ম্যাচে ২০.০৯ গড়ে ২২১ রান করেছেন কে এস ভরত (KS Bharat)। একটিও শতরান বা অর্ধশতরান করতে পারেন নি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১০৪ টি ম্যাচে করেছেন ৫৫৯১ রান। গড় ৩৬.৩০। ১০টি শতরান ও ৩১টি অর্ধশতরানও করেছেন তিনি। লিস্ট-এ ক্রিকেটে ৭৬ ম্যাচে ৩৭.৩৪ গড়ে ভরত (KS Bharat) করেছেন ২৫০২ রান। ৮টি শতক ও ৯টি অর্ধশতক করেছেন তিনি। কুড়ি-বিশের ক্রিকেটে ৮১ ম্যাচে ২৩.১৩ গড়ে ১৫৭৩ রান করেন তিনি। ক্ষুদ্রতম ফর্ম্যাটে ১০টি অর্ধশতরান করেছেন তিনি। আইপিএল-এ ১০ ম্যাচে ২৮.৪২ গড়ে ১৯৯ রান করেছেন ভরত। এর মধ্যে একটি দুর্দান্ত ৭৮* রানের ইনিংসও রয়েছে। তিনি গায়ে চাপিয়েছেন দিল্লী ক্যাপিটালস ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর জার্সি। ২০২৪-এ কলকাতা নাইট রাইডার্স তাঁকে স্কোয়াডে সামিল করেছিলো ঠিকই, কিন্তু একটি ম্যাচেও মাঠে নামার সুযোগ পান নি ভরত।