২০১৬ সালে ভারতের জার্সিতে অভিষেক হয়েছিলো করুণ নায়ারের (Karun Nair)। চেপকে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ত্রিশতরান করে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন কর্ণাটকের ব্যাটার। মিডল অর্ডারের স্তম্ভ হয়ে উঠতে পারেন করুণ, ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু প্রত্যাশিত পথে এগোয় নি তাঁর কেরিয়ার। ২০১৭-এর গোড়ায় অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ব্যর্থতার পর জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েন তিনি। এরপর ঘরোয়া ক্রিকেটেও ক্রমেই নীচের দিকে নামতে থাকে তাঁর কেরিয়ার গ্রাফ। কর্ণাটক রঞ্জি দল থেকে ছেঁটে ফেলা হয় করুণকে। ধাক্কা খেতে খেতে একটা সময় দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিলো তাঁর। মরিয়া হয়েই সেই সময় ট্যুইট করেছিলেন, “প্রিয় ক্রিকেট আমায় আর একটা সুযোগ দাও।” সেই মিনতি যেন শুনতে পেয়েছিলেন ক্রিকেট ঈশ্বর। কর্ণাটক ছেড়ে বিদর্ভে যোগ দেওয়ার পর ভাগ্য বদলে যায় করুণের (Karun Nair)। দেখেন সাফল্যের মুখ।
দেখুন করুণের সেই আবেগঘন ট্যুইট-
Dear cricket, give me one more chance.🤞🏽
— Karun Nair (@karun126) December 10, 2022
Read More: পাক ক্রিকেটারের সাথে গোপনে সেরেছেন বিয়ে ? ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অকপট অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া !!
ডাক পেয়েছিলেন জাতীয় দলেও-

২০২৩-এ বিদর্ভে যোগ দিয়েছিলেন করুণ (Karun Nair)। ২০২৪-২৫ মরসুমে ঘরোয়া ক্রিকেটে অনবদ্য পারফর্ম্যান্স করেন তিনি। রঞ্জি ট্রফিতে চতুর্থ সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন তিনি। ৯ ম্যাচে প্রায় ৫৪ গড়ে ৮৬৩ রান। চারটি শতক ও ২টি অর্ধশতক এসেছিলো তাঁর ব্যাট থেকে। কেরলকে হারিয়ে বিদর্ভের ট্রফি জয়ের অন্যতম কারিগর ছিলেন তিনি। ফাইনালে দুই ইনিংসে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিলো যথাক্রমে ৮৬ ও ১৩৫। এরপর বিজয় হাজারে ট্রফিতেও স্বপ্নের ফর্ম ধরে রেখেছিলেন তিনি। ৯ ম্যাচে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিলো ৭৭৯ রান। ৮ ইনিংসের মধ্যে ৬ বার নট-আউট থেকেছিলেন করুণ। ব্যাটিং গড় দাঁড়ায় ৩৮৯.৫০। করেন পাঁচটি শতরান ও ১টি অর্ধশতক। ফাইনালে কর্ণাটকের বিরুদ্ধে হারলেও টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছিলেন ডান হাতি ব্যাটার।
২০১৭ তে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ব্যর্থ হয়ে সেই যে বাদ পড়েছিলেন, তারপর আর করুণের (Karun Nair) কথা ভেবেও দেখেন নি জাতীয় নির্বাচকেরা। কিন্তু রঞ্জি ও বিজয় হাজারে ট্রফির অবিশ্বাস্য পারফর্ম্যান্স নতুন করে তাঁকে জায়গা করে দেয় আলোচনায়। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে জায়গা পাবেন করুণ? কৌতূহল ছিলো ক্রিকেটজনতার মধ্যে। আইসিসি টুর্নামেন্টের স্কোয়াডে শেষমেশ রাখা হয় নি তাঁকে। তবে তিনি যে রেডারে রয়েছেন তা মেনে নিয়েছিলেন মুখ্য নির্বাচক অজিত আগরকার। প্রাক্তন পেসার যে সত্যিই বলেছিলেন তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিলো ইংল্যান্ড সফরের স্কোয়াড ঘোষণা হতেই। রোহিত, বিরাটের মত দুই মহারথীর অবর্তমানে অভিজ্ঞ মুখ হিসেবে করুণকে (Karun Nair) ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো বিসিসিআই। ইংল্যান্ড লায়ন্সের বিপক্ষে ভারত-এ’র জার্সিতে দ্বিশতক করে প্রত্যাশা বহুগুণ বাড়িয়েছিলেন তিনি।
প্রত্যাবর্তন সুখের হয় নি করুণের-

করুণ নায়ারকে (Karun Nair) নিয়ে আকাশছোঁয়া প্রত্যাশা ছিলো ভারতীয় সমর্থকদের। আন্তর্জাতিক কেরিয়ারের প্রথম অধ্যায়ে একটি ত্রিশতক ছাড়া বিশেষ কিছু করে উঠতে পারেন নি তিনি। দ্বিতীয় সুযোগে কি করেন সেদিকে তাকিয়ে ছিলেন অনেকেই। কিন্তু অ্যান্ডারসন-তেন্ডুলকর ট্রফিতে হতাশই করলেন করুণ। লিডসে ছয় আট বছর পর টেস্ট খেলতে নেমে শূন্য করে সাজঘরে ফেরেন। দ্বিতীয় ইনিংসে করেন ২০। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট খুইয়ে দলকে বিপদে ফেলেন তিনি। এজবাস্টন ও লর্ডসেও আহামরি রান পান নি। ম্যাঞ্চেস্টারে প্রথম একাদশ থেকেই ছেঁটে ফেলা হয় করুণকে। যদিও ওভালে ফের মাঠে নেমেছিলেন। সিরিজে একটি ৫৭ রানের ইনিংস ছাড়া বিশেষ কিছু করে উঠতে পারেন নি তিনি। ২৫.৬২৫ গড়ে করেছেন মাত্র ২০৫ রান। এরপর তাঁকে আর ‘তৃতীয় সুযোগ’ আদৌ দেওয়া হবে কিনা তা নিয়ে রয়েই যাচ্ছে প্রশ্ন।