গত ডিসেম্বর থেকেই চর্চায় রয়েছেন ঈশান কিষণ (Ishan Kishan)। ভারতীয় বোর্ডের সাথে রীতিমত ঠাণ্ডা যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের মাঝপথে মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতির কারণ দেখিয়ে দেশে ফিরে এসেছিলেন ঝাড়খণ্ডের ক্রিকেটার। কিন্তু এরপর দুবাইতে তাঁর পার্টিতে যোগদান বা বিসিসিআই-এর অনুমতি ছাড়াই বেসরকারী টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানে হাজির হওয়ার মত ঘটনাগুলি ভালো চোখে দেখেন নি বোর্ড কর্তারা। বিতর্ক চরমে পৌঁছায় ঈশান (Ishan Kishan) ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে রাজী না হওয়ায়। জাতীয় দল থেকে বাদ দেওয়া হয় তাঁকে, পাশাপাশি ছেঁটে ফেলা হয় কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকেও। প্রায় আট মাস কেবল আইপিএল (IPL) ছাড়া কোনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচেই সুযোগ দেওয়া হয় নি তাঁকে। শেষমেশ অগস্টে এসে পালটায় পরিস্থিতি। কামব্যাকের পর ছন্দেই রয়েছেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটার।
Read More: CT 2025: “পাকিস্তানে খেলতে আসুন, তবে…” বিসিসিআই-কে অভূতপূর্ব ‘দিল্লী’ প্রস্তাব দিলো পিসিবি !!
দারুণ ফর্মে রয়েছেন ঈশান কিষণ-
দীর্ঘ বিরতির পর অবশেষে বুচিবাবু টুর্নামেন্ট দিয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটের আঙিনায় প্রত্যাবর্তন ঘটান ঈশান কিষণ (Ishan Kishan)। মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচেই লড়াকু শতরান করেছিলেন বাম হাতি ব্যাটার। দ্বিতীয় ইনিংসে চাপের মুখে একা কুম্ভ হয়ে দাঁড়িয়ে জয় এনে দেন দল’কে। অপরাজিত থাকেন ৪১ রান করে। এরপর দলীপ ট্রফিতেও ঈশানকে সুযোগ দেওয়ার কথা ভেবেছিলো বিসিসিআই। প্রথমে ভারত-ডি স্কোয়াডে জায়গা পান তিনি। তবে চোটের কারণে খেলতে পারেন নি প্রথম ম্যাচ। দ্বিতীয় ম্যাচে তিনি মাঠে নামেন ভারত-সি’র জার্সিতে। ভারত-বি’র বিরুদ্ধে আবির্ভাবেই ঝড় তোলেন ঈশান (Ishan Kishan)। মাত্র ১২৬ রানে ১৪টি বাউন্ডারি ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে করেন ১১১ রান। বোর্ডের সাথে দূরত্ব যে কমছে ঝাড়খণ্ডের তারকার তার প্রমাণ মেলে ঈশান ইরানী কাপে অবশিষ্ট ভারত দলে জায়গা পাওয়ায়। ৩৮ করেন তিনি।
রঞ্জি ট্রফিতে শতরান ঈশানের-
শুরু হয়েছে ২০২৪-২৫ রঞ্জি মরসুম। ঈশান কিষণকে (Ishan Kishan) অধিনায়ক করে মাঠে নেমেছে ঝাড়খণ্ড। এলিট-ডি গ্রুপে রয়েছে তারা। প্রথম ম্যাচে অসমের বিরুদ্ধে ৩ পয়েন্ট পেয়েছে ঈশানের দল। পয়েন্ট তালিকায় উপরের দিকে উঠতে দ্বিতীয় ম্যাচে সরাসরি জয় চাইছে তারা। রেলওয়েজের বিরুদ্ধে ‘মাস্ট উইন’ ম্যাচেই জ্বলে উঠতে দেখা গেলো অধিনায়ককে। ছয় নম্বরে ব্যাট করতে নেমেছিলেন ঈশান (Ishan Kishan)। ধুন্ধুমার ইনিংস খেলে রেল’কে রীতিমত বেলাইন করে দেন তিনি। বুচিবাবু টুর্নামেন্ট বা দলীপ ট্রফিতে যে ফর্ম দেখা গিয়েছিলো তাঁর ব্যাটে, রঞ্জি ট্রফিতেও তা ধরে রাখলেন তরুণ উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। ১৩টি চার ও ২টি বিশাল ছক্কা হাঁকান তিনি। ১৫৮ বলে খেলেন ১০১ রানের চমৎকার ইনিংস। এই নিয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অষ্টম শতরান করলেন তিনি। সামনে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া সিরিজ। ঈশানের আগুনে ফর্ম সম্ভাব্যদের তালিকায় জায়গা করে দেবে তাঁকে।
বড় রান তোলার পথে ঝাড়খণ্ড-
রেলওয়েজের বিরুদ্ধে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং-এর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঝাড়খণ্ড। অধিনায়ক ঈশানের (Ishan Kishan) এই পদক্ষেপ ফলপ্রসূ হওয়ার পথে। ওপেনার মহম্মদ নাজিম দুর্দান্ত ৯৬ রানের ইনিংস খেলেন। আর্য্যমান সেন, উৎকর্ষ সিং’রা যদিও রান পান নি। সাজঘরে ফেরেন যথাক্রমে ০ ও ৩ করে। চার নম্বরে ব্যাট করতে নেমে সাফল্যের মুখ দেখেন নি কুমার সুরজ’ও। ৪৬ বলে ১৪ করেই তিনি আউট হন হিমাংশু সাঙ্গওয়ানের বলে। কিন্তু এরপর বিরাট সিং-কে নিয়ে রুখে দাঁড়ান ঈশান কিষণ। অধিনায়কের পাশাপাশি শতরান করেন বিরাট’ও (Virat Singh)। ২৫০ বলে ১২৮ রানের চমৎকার ইনিংস খেলেন তিনি। মারেন ১২টি চার ও ২টি ছক্কা। প্রতিবেদন লেখার সময় অবধি ঝাড়খণ্ডের স্কোর ৭ উইকেটের বিনিময়ে ৩৮৮। অন্তত ৩ পয়েন্ট নিশ্চিত করতে প্রথম ইনিংসে ৪০০ বা ৪৫০ তুলে নিতে চাইবে তারা।