২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়া সিরিজের মাঝপথেই টেস্ট থেকে অবসর নেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। নেতৃত্বের দায়িত্ব কাঁধে চাপে বিরাট কোহলির (Virat Kohli)। ব্যাটিং-এ যে আগ্রাসন তাঁর পছন্দের অস্ত্র, অধিনায়কত্বের মধ্যেও তার আমদানি করেন বিরাট। দেশের পাশাপাশি বিদেশে নিজেদের পারফর্ম্যান্স উন্নত করার দিকে নজর দেন তিনি। জোর দেন ফাস্ট বোলিং-এ। বিপক্ষের কুড়ি উইকেট না তুলতে পারলে জয় যে আসবে না বিদেশের মাঠে, তা সতীর্থদের স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন তিনি। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড হোক বা দক্ষিণ আফ্রিকা-কঠিন পরিস্থিতিতে কোহলির (Virat Kohli) নেতৃত্বাধীন ভারত নজর কাড়ে লাল বলের ফর্ম্যাটে। প্রায় আট বছর টেস্ট দলের দায়িত্ব সামলেছেন বিরাট। ৪০ ম্যাচ জিতে আদায় করে নিয়েছেন সফলতম টেস্ট অধিনায়কের মুকুট।
নেতা হিসেবে দুইবার অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজ জিতেছেন কোহলি (Virat Kohli)। ভারতকে নিয়ে গিয়েছেন ২০২১-এর টেস্ট বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে। যখন বোর্ডের সাথে মতানৈক্যের কারণে ২০২২-এর শুরুতে পদত্যাগ করেন বিরাট, তখন তাঁর জুতোয় পা গলানোর কাজটা মোটেই সহজ ছিলো না। সেই চ্যালেঞ্জটাই গ্রহণ করেন রোহিত শর্মা (Rohit Sharma)। ২০২১-এ সাদা বলের ফর্ম্যাটে রোহিতকে দায়িত্ব দিয়েছিলো বোর্ড। ২০২২ থেকে তিন ফর্ম্যাটেই নেতার আসন গ্রহণ করেন তিনি। ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে রোহিতের নেতৃত্বে সিরিজ জিতেছে ভারত। অ্যাওয়ে সিরিজ জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে। প্রথমবার টেস্ট জিতেছে কেপ টাউনের মাঠে। গত দেড় বছরে নানাবিধ সাফল্য থাকা সত্ত্বেও ক্যাপ্টেন কোহলির সাথে নেতা রোহিতের (Rohit Sharma) তুলনা এড়ানো যায় নি। ক্রিকেটমহলে চলতে থাকা বিতর্কে অংশ নিতে দেখা গেলো ইরফান পাঠানকেও (Irfan Pathan)।
Read More: IND vs ENG: দুরন্ত দ্বিশতক যশস্বী’র, বিশাখাপত্তনমে ভারতের প্রথম ইনিংস থামলো ৩৯৬ রানে !!
পছন্দের নেতা বাছলেন ইরফান পাঠান-
একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন ইরফান পাঠান (Irfan Pathan)। সাংবাদিকরা ঘিরে ধরে ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ে নানান প্রশ্ন করতে থাকেন তাঁকে। সেই সময়ই ওঠে রোহিত-বিরাট (Virat Kohli) প্রসঙ্গ। টেস্ট ক্রিকেটে অধিনায়ক হিসেবে সেরা কে? প্রশ্ন করা হয় ইরফান’কে। দুজনকেই খুব কাছ থেকে দেখেছেন বরোদার ক্রিকেটার। নিজের মতামত অকপটে জানাতে দেরী করেন নি তিনি। ক্যাপ্টেন কোহলির পরিসংখ্যানের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি প্রথমে বলেন, “দেখুন বিরাট কোহলি যেভাবে অধিনায়কত্ব করেছিলো, যে সব বদলগুলো নিয়ে এসেছিলো দলে, সেটা প্রশংসার যোগ্য। অধিনায়ক হিসেবে বহু বছর ওনার নাম মনে রাখা হবে। পাঁচ দিন ধরেই একটা আলাদা আগ্রাসন বজায় রাখতেন উনি।”
এরপরেই নেতা রোহিতের (Rohit Sharma) স্ট্র্যাটেজি, দল চালানোর পদ্ধতি বিশ্লেষণ করার পথে হেঁটেছেন ইরফান (Irfan Pathan)। বলেন, “…রোহিত শর্মার অধিনায়কত্ব আলাদা ধরণের। ও অনেক বেশী ট্যাকটিকাল। অনেক বেশী নিয়োজিত থাকে। বিরাট যতটা আগ্রাসন দেখাতেন ততটা আগ্রাসন উনি (রোহিত) দেখান না। বিরাটের সময় দল অন্য ভাবে পরিচালিত হত, এখন অন্যভাবে চলছে…” হায়দ্রাবাদে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারত টেস্ট হারায় সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে (Rohit Sharma)। অনেকেই তাঁর অপসারণ চেয়ে সরব হয়েছেন। প্রাক্তন সতীর্থের পাশেই দাঁড়িয়েছেন ইরফান। তিনি জানান, “…আশা থাকবে ভারতীয় দল এই সিরিজে প্রত্যাবর্তন ঘটাবে। আমার মনে হয় সেটা ওরা করেও ফেলতে পারবে।”
দেখুন কি জানালেন ইরফান পাঠান-
https://www.instagram.com/reel/C2zSVLDvGvi/?utm_source=ig_web_button_share_sheet
কি বলছে পরিসংখ্যান?
২০১৪ সালের অস্ট্রেলিয়া সিরিজের মাঝপথে দায়িত্ব পেয়েছিলেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। ছাড়েন ২০২২-এর জানুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের মাঝপথে। এর মধ্যবর্তী সময়কালে তিনি ভারতকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ৬০টি টেস্টে। এর মধ্যে জয়ের সংখ্যা ৪০। হারতে হয়েছে ১৭টি টেস্টে। ১১ ম্যাচ থেকেছে অমীমাংসিত। বিরাট (Virat Kohli) নেতা থাকাকালী ৪০ জয়ের মধ্যে ২৪টি এসেছে ঘরের মাঠে। বিদেশে ১৬টি ম্যাচ জিতেছে ভারত। মোট সাফল্যের শতকরা হার ৭০.১৭। কোহলি দায়িত্ব ছাড়ার পর অধিনায়কত্বের ব্যাটন তুলে দেওয়া হয় রোহিত শর্মার হাতে। ইংল্যান্ড সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের আগে এখনও অবধি লাল বলের ফর্ম্যাটে ১৩টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন রোহিত (Rohit Sharma)। জিতেছেন ৬টিতে। হার ৪ ম্যাচে। বাকিগুলি থেকেছে অমীমাংসিত। এর মধ্যে বিদেশে জয়ের সংখ্যা ২। বাকি জয়গুলি এসেছে ঘরের মাঠে।