নয়া শতকের গোড়ার দিকে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের হাত ধরে উত্থান হয়েছিলো একঝাঁক তরুণ তুর্কির। যুবরাজ সিং, মহম্মদ কাইফদের পাশাপাশি সেই তালিকায় নাম থাকবে ইরফান পাঠানেরও (Irfan Pathan)। ২০০৩-০৪ মরসুমে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে অ্যাডিলেডে অভিষেক হয় তাঁর। স্যুইং-এর কারিকুরিতে অল্প সময়ের মধ্যেই নজর কেড়ে নিয়েছিলেন তিনি। ২০০৪-এ পাকিস্তানের মাঠে টেস্ট হ্যাটট্রিক করে শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন ইরফান (Irfan Pathan)। ২০০৭-এ টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালেও পেয়েছিলেন ম্যাচের সেরার পুরস্কার। সাফল্য সত্ত্বেও তাঁর কেরিয়ার অবশ্য দীর্ঘস্থায়ী হয় নি। ২০০৮-এর পর আর টেস্ট দলে সুযোগ পান নি। ২০১২তে তাঁকে ছেঁটে ফেলা হয় সাদা বলের দুই ফর্ম্যাট থেকেও। কেন বাদ পড়েছিলেন? লাল্লানটপকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেই প্রসঙ্গে নিজের মতামত ব্যক্ত করেছেন বরোদার অলরাউন্ডার।
Read More: Top 10: দশজন পাক ক্রিকেটার যাদের সঙ্গে বলিউড অভিনেত্রীদের প্রেমের সম্পর্ক আলোচিত হয়েছিল !!
অধিনায়কের অঙ্গুলিহেলনেই বাদ, দাবী ইরফানের-

ভালো খেলেও মেলে নি সুযোগ, সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে তেমনটাই ইঙ্গিত করেছেন ইরফান পাঠান । পুরনো প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেছেন, “২০০৯-এর ঘটনা, আমরা নিউজিল্যান্ডে ছিলাম। তার আগে আমার দাদা (ইউসুফ পাঠান) এবং আমি শ্রীলঙ্কাতে ভারতকে ম্যাচ জিতিয়েছিলাম। একটা ম্যাচে এমন পরিস্থিতি থেকে জিতিয়েছিলাম যে আমাদের জায়গায় অন্য কেউ হলে অন্তত এক বছর তাদের সরানো অত না। একটি ম্যাচে আমাদের ২৭-২৮ বলেই ৬০ রান তাড়া করতে হত, আমরা সেই জায়গা থেকে জিতিয়েছিলাম। কিন্তু নিউজিল্যান্ডে আমি প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচে মাঠের বাইরে ছিলাম। চতুর্থ ম্যাচটি বৃষ্টিতে ড্র হয়। ওটাই শেষ ম্যাচ ছিলো না যদিও। তখন আমি কোচ গ্যারি কার্স্টেন’কে প্রশ্ন করি যে আমি কেন খেলছি না। যদি আমায় কোথাও উন্নতি করতে হত তাহলে উনি আমায় বলতে পারেন। আমি জানতে চেয়েছিলাম কেন বাদ পড়েছি।”
অধিনায়ক ধোনি’র (MS Dhoni) অপছন্দের তালিকায় থাকাই যে বিপক্ষে যাচ্ছে ইরফানের (Irfan Pathan), ইঙ্গিতে তা নাকি সেই সময় বুঝিয়ে দিয়েছিলেন কোচ কার্স্টেন। সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন অলরাউন্ডার জানিয়েছেন, “(গ্যারি) কার্স্টেন আমায় দু’টো কারণ দিয়েছিলেন। ‘কিছু কিছু জিনিস আমার হাতে নেই,’ ঠিক এই কথাগুলোই গ্যারি সেদিন বলেছিলেন। আমি প্রশ্ন করেছিলাম, আদতে কার হাত রয়েছে তাহলে? কিন্তু উনি আমায় বলেন নি। যদিও আমি জানতাম কার হাতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। প্লেয়িং ইলেভেন ঠিক করা হত অধিনায়কের ইচ্ছা অনুযায়ী। সিদ্ধান্তটা নেওয়ার ভারত থাকে অধিনায়ক, কোচ ও টিম ম্যানেজমেন্টের উপর। ধোনি সেই সময় অধিনায়ক ছিলেন। ঐ সিদ্ধান্ত’টা (ইরফান’কে বাদ দেওয়া) সঠিক ছিলো না ভুল, সেই বিতর্কে এখন যাব না কারণ প্রত্যেক অধিনায়কের অধিকার রয়েছে নিজের দলকে নিজের মত করে চালানোর।”
‘পথের কাঁটা’ হন দাদা ইউসুফ ?

জাতীয় দলে জায়গা পাওয়ার পথে তাঁর দাদা ইউসুফ’ই যে বড় বাধা, তাও সেদিন ইরফানকে (Irfan Pathan) জনিয়েছিলেন কার্স্টেন (Gary Kisten)। সাক্ষাৎকারে তাঁর স্বীকারোক্তি, “দ্বিতীয়ত ওনারা (টিম ম্যানেজমেন্ট) সাত নম্বরে একজন ব্যাটিং অলরাউন্ডার খুঁজছিলেন। ঠিক আছে। আমার দাদা একজন ব্যাটিং অলরাউন্ডার। আমি একজন বোলিং অলরাউন্ডার ছিলাম। আমরা দু’জনে বেশ আলাদা ছিলাম একে অপরের থেকে। কিন্তু সেই সময়ে দলে একজনেরই জায়গা হচ্ছিলো।” টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় ছিলো না তাঁর। তবে গত দশ-পনেরো বছরে বদলে গিয়েছে পরিস্থিতি। অলরাউন্ডারদের কদর বেড়েছে ক্রিকেটদুনিয়ায়, মনে করেন ইরফান। তাঁর মূল্যায়ন, “এখনকার দিনে আপনাকে যদি কেউ প্রশ্ন করেন যে দলে দু’জন অলরাউন্ডার লাগবে কিনা, তাহলে সকলেই হাসিমুখে দু’জনকেই বেছে নিতেন।”
Also Read: বুমরাহ নয় বরং ভারতীয় দলের এই সদস্যকে ‘সবচেয়ে বিপজ্জনক বোলার’ আখ্যা দিলেন স্টিভ স্মিথ !!