IPL 2024: এগিয়ে আসছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের (IPL) নয়া মরসুম। ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা বিসিসিআই-এর পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে আগামী ২২ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে টুর্নামেন্ট। ২০০৮-এ আইপিএলের প্রথম মরসুম থেকে টুর্নামেন্টের অংশ রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। ক্রিস গেইল (Chris Gayle), বিরাট কোহলি, এবি ডিভিলিয়ার্সের মত টি-২০ ক্রিকেটের মহারথীরা বিভিন্ন সময় গায়ে চাপিয়েছেন বেঙ্গালুরু (RCB) জার্সি। কিন্তু একবারও সাফল্যের স্বাদ পায় নি তারা। ফাইনালে গেলেও জেতা হয় নি আইপিএল ট্রফি। সপ্তদশ মরসুমে পূর্বের ব্যর্থতা ভুলে সামনের দিকে তাকাতে চায় বেঙ্গালুরু। সেইমত নিলাম থেকে একঝাঁক নামিদামী ক্রিকেটারকে দলেও সামিল করেছে তারা। খাতায় কলমে স্কোয়াডে ভারসাম্য থাকলেও মাঠের পারফর্ম্যান্সে বেঙ্গালুরুকে (RCB) ভোগাতে তিন তারকা।
Read More: IPL 2024: আইপিএল শুরুর আগে লখনউয়ের বড় সিদ্ধান্ত, এই কিংবদন্তির হাতে তুলে দেওয়া হল গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব !!
দীনেশ কার্তিক-

বছর ৩৮-এর দীনেশ কার্তিককে (Dinesh Karthik) এবারের আইপিএলে ৫.৫ কোটি টাকার বিনিময়ে ধরে রেখেছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভারতীয় দলের দরজা তাঁর জন্য বন্ধ হয়েছে আগেই। ঘরোয়া ক্রিকেটেও তামিলনাড়ুর হয়ে মাঠে নামেন না তিনি। ক্রিকেটের বাইশ গজের তুলনায় ধারাভাষ্যের মাইক হাতেই আজকাল বেশ সাবলীল তিনি। ২০২২ মরসুমে ভালো পারফর্ম করলেও গত বছর একেবারেই ভালো কাটে নি তাঁর। ১৩ ম্যাচে ১১.৬৭ ব্যাটিং গড়ে করেছলেন মাত্র ১৪০ রান। ‘ফিনিশার’ হিসেবে তাঁকে ব্যবহার করার স্ট্র্যাটেজি ব্যুমেরাং হয়ে ফিরেছিলো বেঙ্গালুরুর (RCB) জন্য।
২০২৪ সালেও সম্ভবত উইকেটরক্ষক হিসেবে কার্তিক’ই (Dinesh Karthik) থাকতে চলেছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর একাদশে। বয়স এবং অফ ফর্ম এবারও বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে কার্তিকের (Dinesh Karthik) জন্য। দিনকয়েক আগেও ভারত বনাম ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজে জিও সিনেমার ধারাভাষ্য প্যানেলের অংশ ছিলেন তিনি। ধর্মশালায় শেষ টেস্ট শুরুর আগে কমেন্ট্রি ছেড়ে ফিরেছেন ক্রিকেট মাঠে। ডি ওয়াই পাতিল টি-২০ টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ডি ওয়াই পাতিল ব্লু দলের হয়ে ব্যাট করতে নেমে টাটা স্পোর্টস ক্লাবের বিরুদ্ধে ০ রান করে আউট হয়েছেন দীনেশ কার্তিক (Dinesh karthik)। তাঁর ফর্মের দিকে তাকিয়ে মনে করা হচ্ছে আসন্ন মরসুমে ফের একবার আরসিবি’র ভিলেন হয়ে উঠতে পারেন তিনি।
লকি ফার্গুসন-

তালিকায় দ্বিতীয় নাম হতে পারে নিউজিল্যান্ডের লকি ফার্গুসন (Lockie Ferguson)। গত মরসুমে কলকাতা নাইট রাইডার্সে ছিলেন তিনি। গুজরাত টাইটান্স (GT) থেকে বিরাট অর্থের বিনিময়ে লকি’কে ট্রেড করেছিলো কলকাতা। কিন্তু দলকে পর্যাপ্ত ‘সার্ভিস’ দিতে পারেন নি তিনি। নিউজিল্যান্ডের তারকাকে মাত্র ৩ ম্যাচ খেলাতে পেরেছিলো কলকাতা (KKR)। ৯৬ গড় ও ১২.৫২-এর ইকোনমিতে ১টি মাত্র উইকেট তুলতে পেরেছিলেন তিনি। হতশ্রী পারফর্ম্যান্সের পর কলকাতা তাঁকে ধরে রাখে নি আর। কিউই এক্সপ্রেস পেসারকে গত ১৯ ডিসেম্বরের মিনি নিলাম থেকে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (RCB) দলে নিয়েছে ২ কোটি টাকার বিনিময়ে। এই সিদ্ধান্তও ডোবাতে পারে ফাফ দু প্লেসি, বিরাট কোহলির দলকে।
ভারতের মাটিতে লকি’র সাম্প্রতিক ফর্ম বিশেষ ভালো নয়। গত বছরের বিশ্বকাপে (ICC World Cup 2023) কেবল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একটি স্পেল ছাড়া কার্যকরী বোলিং তেমন করতে পারেন নি তিনি। ৭ ম্যাচে ১০ উইকেট পেয়েছিলেন। বোলিং গড় ছিলো ৩০.১। এমনকি ২০২৩-এর গোড়ায় নিউজিল্যান্ডের ভারত সফর চলাকালীনও ওডিআই ও টি-২০তে তিনি বিশেষ দাগ কাটতে পারেন নি। বোলিং বিভাগ নিয়ে এমনিতেই খানিক ব্যাকফুটে বেঙ্গালুরু। উপমহাদেশের পিচে নতুন বল হাতে মহম্মদ সিরাজের (Mohammed Siraj) জুড়িদার হিসেবে লকি ফার্গুসনের উপর ভরসা রাখতে ভুগতে হতে পারে তাদের।
আলঝারি জোসেফ-

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে (RCB) সমস্যায় ফেলতে পারেন আলঝারি জোসেফ (Alzarri Joseph)। ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেসারকে বেঙ্গালুরু দলে সামিল করেছে ১১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে। আইপিএলের (IPL) মিনি নিলামে সর্বোচ্চ মূল্য পাওয়া ক্রিকেটারদের তালিকায় রয়েছেন তিনি। কিন্তু এই বিনিয়োগ কতদূর সঠিক হয়েছে, তা নিয়ে সন্দিহান ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। আলঝারির (Alzarri Joseph) সাম্প্রতিক ফর্ম মোটেই আহামরি নয়। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তিনটি টি-২০তে তাঁর পরিসংখ্যান যথাক্রমে ২/৪৬, ১/৩১ ও ০/৩৮। যা মোটেই আশাপ্রদ নয় বেঙ্গালুরুর জন্য। ওডিআই সিরিজেও সাফল্য পান নি তিনি। সিডনিতে ৭৪ রান অবধি খরচ করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
আইপিএল (IPL) কেরিয়ারে আলঝারির পারফর্ম্যান্স’ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (RCB) সমর্থকদের মধ্যে বিশেষ আশা জাগাতে পারছে না। ২০১৯ সালে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে নজর কেড়েছিলেন তিনি। ১৪.৫০ গড়ে ৩ ম্যাচে নিয়েছিলেন ৬ উইকেট। কিন্তু এরপর ২০২২ ও ২০২৩ মরসুমে গুজরাত টাইটান্স জার্সিতে চমকপ্রদ কোনো পারফর্ম্যান্স নেই তাঁর। ২০২২-এ ৩৭.৭১ গড়ে ৬ ম্যাচে নিয়েছিলেন ৬ উইকেট ও ২০২৩ সালে ৩২.১৪ গড়ে ৭ ম্যাচে নেন ৭ উইকেট। ইকোনমি ছিলো যথাক্রমে ৮.৮০ ও ৯.৩৮। এবারে নিজের পারফর্ম্যান্সে বদল আনতে না পারলে বেঙ্গালুরুর (RCB) বোঝা হতে পারেন তিনিও।