IPL 2024: গতকাল থেকে শুরু হয়েছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের (IPL) সপ্তদশতম মরসুম। প্রথম ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে হারিয়েছে গতবারের চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই সুপার কিংস। আজ, অর্থাৎ টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় দিনে রয়েছে জোড়া ম্যাচ। দিনের প্রথম খেলায় পাঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে দিল্লী ক্যাপিটালস। এর আগে মোহালির আই এস বিন্দ্রা স্টেডিয়ামেই হোম ম্যাচগুলি খেলত প্রীতি জিন্টার দল। এবার ঘর বদলেছে তারা। সরে গিয়েছে মহারাজা যাদবিন্দ্র সিং ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। নতুন হোমগ্রাউন্ডে টস ভাগ্য সহায় হলো পাঞ্জাবের। অধিনায়ক শিখর ধাওয়ান প্রথমে বোলিং-এর সিদ্ধান্ত নেন। শুরুটা আশা জাগিয়ে করলেও একটা সময় পরপর উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছিলো দিল্লী। শেষমেশ বাংলার অভিষেক পোড়েলের বিস্ফোরক ইনিংস নির্ধারিত ২০ ওভারে তাদের পৌঁছে দেয় ১৭৪ রানে।
Read More: কামব্যাক ম্যাচে ব্যার্থ ঋষভ পন্থ, ১৮ রান বানিয়ে ফিরতে হলো প্যাভিলিয়নে !!
মিডল অর্ডারের ব্যর্থতা প্রকট দিল্লী ব্যাটিং-এ-
পৃথ্বী শ-কে বাদ দিয়ে আজ মাঠে নেমেছিলো দিল্লী ক্যাপিটালস। ওপেনিং-এ দেখা যায় দুই অস্ট্রেলীয়-ডেভিড ওয়ার্নার ও মিচেল মার্শ’কে। ব্যাট হাতে শুরুতে বিধ্বংসী হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মার্শ। ২টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে পৌঁছেছিলেন ২০ রানে। কিন্তু আর্শদীপ সিং-এর বলে এরপর ফিরতে হয় তাঁকে। ১২ বলে ২০ করেন তিনি। এরপর ফেরেন ডেভিড ওয়ার্নার। প্রথমে খানিক সময় নিলেও পরে ছন্দ খুঁজে নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন অভিজ্ঞ ওপেনার’ও। তাঁকেও বেশীদূর এগোতে দিলো না পাঞ্জাব। হর্ষল প্যাটেলের বলে উইকেটরক্ষক জিতেশ শর্মার হাতে ধরা পড়েন ২১ বলে ২৯ রান করে। তিনে নেমেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ তারকা শে হোপ। ৩৩ রান করে রাবাডার শিকার হন তিনি।
সড়ক দুর্ঘটনায় ক্রিকেট কেরিয়ারই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিলো ঋষভ পন্থের। চূড়ান্ত প্রতিকূলতা দূর করে ৪৫৩ দিন পর মাঠে ফিরলেন তিনি। মোহালির ক্রিকেটজনতা জয়ধ্বনির মাধ্যমে স্বাগত জানান তরুণ উইকেটরক্ষক-ব্যাটারকে। প্রত্যাবর্তন ম্যাচে জনতার মন জিতলেও দীর্ঘ ইনিংস খেলতে পারলেন না দিল্লী অধিনায়ক। ১৩ বলে ১৮ করেই সাজঘরের পথ দেখেন তিনিও। ঋষভ ফেরার পরেই দিল্লী ব্যাটিং-এ ভাঙন ধরে আজ। তরুণ রিকি ভুঁই ও ট্রিস্টান স্টাবস রান পান নি। যথাক্রমে ৩ ও ৫ করেন তাঁরা। গত মরসুমের মত এবারও লড়াইয়ের প্রয়াস করেছিলেন অক্ষর প্যাটেল। ১৩ বলে ২১ রান করে ফেরেন তিনিও। ‘ফিনিশার’ হিসেবে সুমিত কুমারকে ভেবেছিলেন সৌরভ-পন্টিং-রা। হতাশ করেন তিনিও। একটা সময় ঘোর সমস্যায় পড়েছিলো দিল্লী।
নজর কাড়লেন বাংলার অভিষেক, লড়াইতে রাখলেন দিল্লী’কে-
নিয়ন্ত্রিত বোলিং-এ একটা সময় দিল্লীকে লড়াইয়ের বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছিলো পাঞ্জাব কিংস। তাদের হয়ে ২টি করে উইকেট তুলে নেন আর্শদীপ সিং ও হর্ষল প্যাটেল। একটি করে উইকেট পান রাহুল চাহার, কাগিসো রাবাডা, হরপ্রীত ব্রার’ও। যে গতিতে এগোচ্ছিলো ইনিংস, তাতে ১৫ ওভারের পর বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বলছিলেন ১৪০ থেকে ১৫০-এর ভিতরে ঘোরাফেরা করবে দিল্লী ক্যাপিটালসের স্কোর। সেখান থেকে নির্ধারিত ২০ ওভারের শেষে স্কোর যে পৌঁছলো ১৭৪-এ, তার নেপথ্যে এক বঙ্গসন্তান-অভিষেক পোড়েল। বাংলার বাম হাতি উইকেটরক্ষক-ব্যাটারকে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে ব্যবহার করলো দিল্লী। নয় নম্বরে ব্যাট করতে নামেন তিনি। ম্যাচের মোড়ই বদলে দিলেন অভিষেক।
২০তম ওভারের শুরুতে অভিষেকের রান সংখ্যা ছিলো ৭। হর্ষল প্যাটেলের প্রথম বলটিকে পুল করে ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়্যার লেগ দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠান তিনি। দ্বিতীয় ডেলিভারিটিকে আছড়ে ফেলেন মিড উইকেটের উপর দিয়ে দর্শকাসনে। হতভম্ব হর্ষলের তৃতীয় ডেলিভারিটকেও বাউন্ডারির ঠিকানায় পাঠিয়ে দেন অভিষেক। আরও একবার পুল শটের সাহায্য নেন তিনি। এরপর চতুর্থ বল অফস্টাম্পের বাইরে রাখার চেষ্টা করেছিলেন হর্ষল। বাউন্সকে কাজে লাগিয়ে শর্ট-থার্ড ম্যানের মাথার উপর দিয়ে তুলে দেন তরুণ ব্যাটার। অর্জন করেন চার রান। পঞ্চম বলেও স্কোয়্যার লেগের উপর দিয়ে আরও একটি ছক্কা হাঁকান তিনি। শেষ বলে আসে একটি রান। মাত্র ১০ বলে অভিষেকের ৩২* রানের ইনিংসই লড়াইয়ের মঞ্চ গড়ে দিলো দিল্লীর জন্য।