IPL 2025: গত দশকে আইপিএলের (IPL) আঙিনায় দাপট দেখিয়েছিলো মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (MI)। ২০১৩ থেকে ২০২০-র মধ্যে তারা জিতেছিলো পাঁচটি ট্রফি। নতুন দশকের অবশ্য তাদের পারফর্ম্যান্স বিশেষ ভালো নয়। চার মরসুম ট্রফিহীন মুকেশ আম্বানির দল। এর মধ্যে দুইবার পয়েন্ট তালিকায় সবার নীচে শেষ করার লজ্জাও ভোগ করতে হয়েছে টুর্নামেন্টের সফলতম ফ্র্যাঞ্চাইজি’কে। ২০২৪ মরসুমের আগে বড়সড় রদবদলের পথে হেঁটেছিলো মুম্বই টিম ম্যানেজমেন্ট। তারা সরিয়ে দিয়েছিলো দীর্ঘদিনের অধিনায়ক রোহিত শর্মা’কে (Rohit Sharma)। বদলে নেতার দায়িত্ব দেওয়া হয় হার্দিক পান্ডিয়ার হাতে। ব্যুমেরাং হয়ে ফিরেছিলো এই সিদ্ধান্ত। মুখ থুবড়ে পড়ে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (MI)। নেতা পরিবর্তনে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিলো সমর্থকদের মধ্যে। বিভাজন সৃষ্টি হয় দলের অন্দরেই। তার প্রতিফলন দেখা গিয়েছে পারফর্ম্যান্সে।
Read More: নেতৃত্বের দৌড়ে নেই কেএল রাহুল, আরও একবার অধিনায়ক করা হচ্ছে হার্দিককে !!
বিতর্ক বাড়িয়েছিলেন কোচ বাউচার-
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ফ্র্যাঞ্চাইজির কোচের দায়িত্বে এই মুহূর্তে রয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার মার্ক বাউচার (Mark Boucher)। মরসুম শুরুর আগেই অধিনায়ক বদলের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকাতে একটি পডকাস্ট অনুষ্ঠানে তাঁর করা মন্তব্যগুলি বেশ বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলো। তিনি জানান, , “…মুম্বই ইন্ডিয়ান্স শিবিরের সাথে আলোচনার পর আমি ঠিক করি যে ক্রিকেটার হিসেবে ওর শেষ বছরটা ও যেন মাঠে নেমে উপভোগ করতে পারে। হার্দিকের নির্বাচন প্রসঙ্গে জানান, , “এটা একটা পুরোপুরি ক্রিকেটীয় বিষয়। আমরা দেখেছিলাম হার্দিককে ফেরানোর এটাই সুযোগ। তার সদ্ব্যবহার করেছি। এটা একটা রদবদলের সময়। ভারতে অনেকেই ব্যাপারটা বোঝে না। ওরা খুবই আবেগপ্রবণ। কিন্তু আপনি জানেন যে আপনাকে আবেগ বাদ দিয়ে ভাবতে হবে।”
গোটা ঘটনায় বেশ ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন রোহিত শর্মা’র (Rohit Sharma) স্ত্রী ঋতিকা সাজদেহ। তিনি যে পেজ থেকে ইনস্টাগ্রামে বাউচারের ঐ মন্তব্য পোস্ট করা হয়েছিলো, সেখানে লেখেন, ”এর মধ্যে অনেক কিছু আপত্তিজনক রয়েছে।” রোহিত পত্নীর রোষের মুখে পড়ে সেই পোস্টটি ডিলিট করে দেওয়া হয়। তবে বাউচারের অদূরদর্শী সিদ্ধান্ত যে আদতে দলের উপকারের বদলে ক্ষতিই করেছে তা পারফর্ম্যান্স থেকে স্পষ্ট। দল দলের টুর্নামেন্টে সবার নীচে শেষ করেছে মুম্বই। জিতেছে কেবল ৪টি ম্যাচ। হার দশ ম্যাচে। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর মিলেছে যে সাজঘরেও দুই আলাদা শিবিরে ভাগ হয়ে গিয়েছিলেন ক্রিকেটাররা। আভ্যন্তরীন তরজা সাফল্যের শিখর থেকে ব্যর্থতার অন্ধকারে ডুবিয়েছিলো দল’কে। ২০২৫-এর আইপিএলের (IPL) আগে গতবারের ভুল আর করতে চান না আম্বানিরা। সরিয়ে দিতে পারেন কোচ’কে।
নতুন দলের সন্ধানে রিকি পন্টিং-
২০১৮ থেকে গত সাতটি মরসুম দিল্লী ক্যাপিটালসের (DC) কোচ ছিলেন অস্ট্রেলীয় কিংবদন্তি রিকি পন্টিং (Ricky Ponting)। ট্রফি জেতাতে না পারলেও ২০২০ সালে ফাইনালে দলকে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তবে ২০২৪-এ ছয় নম্বরে শেষ করার পর পন্টিং-কে ‘পিঙ্ক স্লিপ’ ধরিয়েছে দিল্লী ফ্র্যাঞ্চাইজি। তাদের ডায়রেক্টর অফ ক্রিকেট অপারেশনস সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন ভারতীয় কোচের সন্ধানে রয়েছে দল। দিল্লী তাঁকে সরিয়ে দিলেও আইপিএলে (IPL) কাজ করতে যে তিনি এখনও আগ্রহী তা সম্প্রতি আইসিসি’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন পন্টিং। বাউচার’কে বাতিল করে যদি নতুন কোচের সন্ধান করে মুম্বই, সেক্ষেত্রে তাদের পছন্দের তালিকায় থাকতে পারেন তিনি। এর আগে ২০১৩ সালে মুম্বই ফ্র্যাঞ্চাইজিতে ছিলেন পন্টিং (Ricky Ponting)। পুরনো দলে কোচের ভূমিকায় ফিরে মানিয়ে নিতে অসুবিধা হবে না তাঁর।
রিকি পন্টিং কোচের মসনদে বসলে অধিনায়কত্ব নিয়ে কি সিদ্ধান্ত নেন সেদিকে নজর থাকবে। ২০১৩ সালে তিনি মরসুমের মাঝপথে নিজে সরে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব তুলে দিয়েছিলেন রোহিত শর্মা’র (Rohit Sharma) হাতে। ‘মাস্টার ট্যাকটিশিয়ান’-এর সিদ্ধান্তে যে কোনো ভুল ছিলো না তার প্রমাণ পাঁচটি আইপিএল ও একটি চ্যাম্পিয়ন্স লীগ টি-২০ ট্রফি। বিশেষজ্ঞদের ধারণা কোচের পদে ফিরেও তিনি নিজের ‘তুরুপের তাস’-এর উপরেই আস্থা রাখতে পারেন। এক যুগ আগে তরুণ রোহিতকে (Rohit Sharma) নেতা হিসেবে গড়ে উঠতে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। ২০২৫-এ অভিজ্ঞ রোহিতকে তিনি চাইবেন অধিনায়কের পদে। সেক্ষেত্রে রিলিজও করে দেওয়া হতে পারে হার্দিক পান্ডিয়াকে। গুজরাত টাইটান্স ছেড়ে মুম্বই প্রত্যাবর্তনের এক বছরের মধ্যেই দল ছাড়তে হত এপারে তাঁকে।