IPL 2024: ক্রিকেটজনতার ফোকাসে এখন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের (IPL) সপ্তদশ মরসুম। গত ১৯ ডিসেম্বর ছিলো আইপিএলের মিনি নিলাম। সেখানেও দেখা গেলো জমজমাট উত্তেজনা। আগের যাবতীয় রেকর্ড ভেঙে ২০ কোটি টাকার গণ্ডি পেরিয়ে গেলেন প্যাট কামিন্স ও মিচেল স্টার্ক। যথাক্রমে ২০.৫০ ও ২৪.৭৫ কোটি টাকায় সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ ও কলকাতা নাইট রাইডার্সে নাম লেখালেন তাঁরা। বিশ্বজয়ী দুই অজি তারকার রেকর্ড অঙ্কের চুক্তির পরেও আলোচনার কেন্দ্রে রয়ে গেলো মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। পাঁচ বারের আইপিএল জয়ী দলের সাজঘরের অন্তর্দ্বন্দ্ব নিয়ে চলছে জোর জল্পনা।
Read More: IPL 2024: হাঁটু ভাঙা ঘোড়ার ওপর বাজি ধরলেন আরসিবি কোচ অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, দেবেন আইপিএল ট্রফি !!
রুদ্ধশ্বাস দলবদলে মুম্বইতে প্রত্যাবর্তন হার্দিকের-
২০১৫ সালে মাত্র ১০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স জার্সি গায়ে চাপিয়েছিলেন হার্দিক পান্ডিয়া। এরপর চমকপ্রদ উত্থান হয়েছে বরোদার অলরাউন্ডারের। ব্যাটিং হোক বা বোলিং, সাদা বলের ফর্ম্যাটে বিশ্বের সেরাদের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। পাল্লা দিয়ে বাড়ে তাঁর অর্থমূল্য’ও। মুম্বইয়ের হয়ে চারটি আইপিএল ট্রফি জয়ের পর হার্দিক ২০২২ মরসুমের আগে দল ছাড়েন। নাম লেখান নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি গুজরাত টাইটান্সে। অধিনায়ক করা হয়েছিলো তাঁকে। নেতা হিসেবে প্রথম মরসুমেই ট্রফি জিতে চমকে দিয়েছিলেন হার্দিক। ২০২৩ মরসুমেও হার্দিকের অধিনায়কত্বে আইপিএলের ফাইনাল খেলেছিলো গুজরাত টাইটান্স।
গুজরাত টাইটান্সের হয়ে হার্দিকের কেরিয়ার বিশেষ লম্বা হয় নি। সপ্তদশ আইপিএলের ট্রেডিং উইন্ডো খোলার পর থেকেই শোনা গিয়েছিলো মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ঘরে ফেরাতে চায় নিজেদের পুরনো ক্রিকেটারকে। গুজরাতের সাথে হার্দিকের মনোমালিন্যের খবরও উড়ছিলো হাওয়ায়। ২৬ নভেম্বর রিলিজ-রিটেনশন তালিকায় গুজরাতের রিটেনড তালিকায় হার্দিকের নাম দেখে অনেকেই ভেবেছিলেন এই নাটকে যবনিকা পড়েছে বোধহয়৷ কিন্তু সেইদিনই সন্ধ্যেবেলা ক্রিকবাজ সূত্রে জানা গিয়েছিলো যে হার্দিকের মুম্বইতে ফেরা কেবল সময়ের অপেক্ষা। পরদিন দুই ফ্র্যাঞ্চাইজির তরফ থেকেই সরকারী ঘোষণার মাধ্যমে দলবদলে সিলমোহর দেওয়া হয়। মুম্বই ফিরে হার্দিক চেপে রাখেন নি উচ্ছ্বাস। ‘ঘরে ফিরলাম যেন’ মন্তব্য করেছিলেন তিনি।
হার্দিককে ফেরাতে ১০০ কোটি খরচ মুম্বইয়ের?
গুজরাত টাইটান্সের সাথে হার্দিক পান্ডিয়ার চুক্তির অঙ্ক ছিলো ১৫ কোটি টাকা। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হয়েছিলো এই সমমূল্যের অর্থই ট্রান্সফার ফি হিসেবে গুজরাত টাইটান্সকে দিয়েছে মুম্বু ইন্ডিয়ান্স। অর্থের প্রয়োজনে ১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকায় দলে নেওয়া ক্যামেরন গ্রিনকে অবধি ছেড়ে দিতে হয়েছিলো তাদের। কিন্তু সম্প্রতি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে প্রকৃত ট্রান্সফার ফি এখনও অবধি গোপন রাখা হয়েছে। একমাত্র দুই ফ্র্যাঞ্চাইজি, IPL কর্তৃপক্ষ ও বিসিসিআই ছাড়া কারও জানা নেই প্রকৃত তথ্য। টাকার অঙ্কে সংখ্যাটা ১০০ কোটি হওয়াও অস্বাভাবিক নয়। গুজরাত টাইটান্স দলের মালিক CVC ক্যাপিটালস। তাদের সম্পূর্ন আয়-ব্যয়ের হিসেব সামনে এলেই প্রকৃত তথ্য জানা যাবে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞমহলের।
হার্দিকের ‘হোমকামিং’ ঘিরে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের অন্দরে দেখা দিয়েছে এক ঝাঁক বিতর্ক। আচমকাই দীর্ঘসময়ের অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে সরিয়ে নেতার আসনে বসানো হয়েছে হার্দিককে। এই সিদ্ধান্ত ঘিরে দ্বিধাবিভক্ত মুম্বই সাজঘর। রোহিতের প্রতিক্রিয়া পাওয়া না গেলেও সূর্যকুমার যাদব, জসপ্রীত বুমরাহ’রা যে খুশি নন,তার আঁচ পাওয়া গিয়েছে ইতিমধ্যেই। অন্যদিকে বিশ্বকাপ চলাকালীন গোড়ালিতে গুরুতর চোট পেয়েছিলেন হার্দিক। তিনি আইপিএল খেলবেন কিনা তা নিয়েও রয়েছে ধন্ধ। সবমিলিয়ে বেশ বেকায়দায় মুম্বই শিবির।