IPL 2024: বিশ্ব ক্রিকেটের প্রায় সব শৃঙ্গ স্পর্শ করলেও আইপিএল (IPL) ট্রফির স্বাদ পাওয়া থেকে এবারও বঞ্চিতই থেকে যেতে হলো বিরাট কোহলিকে (Virat Kohli)। ভারতীয় মহাতারকা ব্যাট হাতে গোটা টুর্নামেন্টে অসাধারণ খেলেছেন। করেছেন ৭৪১ রান। গড় প্রায় ৬২। একমাত্র ভারতীয় হিসেবে দুটি মরসুমে ৭০০-র বেশী রানের রেকর্ড গড়েছেন। স্ট্রাইক রেট নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিলো তাঁকে। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে গোটা মরসুমে ১৫৪.৬৯ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করেছেন তিনি। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের কমলা টুপি শোভা পাচ্ছে তাঁরই মাথায়। খুব অঘটন না ঘটলে সেই মসনদ থেকে এই মরসুমে কেউই সরাতে পারবেন না তাঁকে। মেরেছেন মোট ৩৮টি ছক্কা। এবারের আইপিএলে তাঁর চেয়ে বেশী ছক্কা মেরেছেন কেবল অভিষেক শর্মা। কিন্তু যথেষ্ট হলো না এত কিছু। হেরেই বিদায় নিতে হচ্ছে তাঁকে।
চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে হেরেই আইপিএলের শুরুটা করেছিলো বিরাটের বেঙ্গালুরু। দ্বিতীয় ম্যাচে পাঞ্জাব কিংসকে হারালেও এরপর একটানা হেরেই চলেছিলো তাঁরা। বিশেষজ্ঞদের অধিকাংশই ধরে নিয়েছিলেন যে প্রথম দল হিসেবেই আইপিএল থেকে ছিটকে যাবে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স। কিন্তু ক্রিকেট যে গ্লোরিয়াস গেম অফ আনসার্টেনটি তার প্রমাণ দিয়ে যেন ঘুরে দাঁড়ায় তারা। সানরাইজার্সের বিরুদ্ধে জয়ের পর টানা দুইবার হারায় গুজরাতকে। এরপর পাঞ্জাব ও দিল্লীর বাধা টপকানোর পর আচমকাই প্লে-অফের আলোচনায় জায়গা করে নিয়েছিলো বেঙ্গালুরু। শেষ ম্যাচে প্রতিপক্ষ ছিলো চেন্নাই। তাদের ২৭ রানের ব্যবধানে হারিয়ে শেষ চারে পা রেখে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স। যে গতিতে ছুটছিলো তাদের অশ্বমেধের ঘোড়া, তাতে ফাইনাল, এমনকি খেতাবও দূর অস্ত বলে মনে হচ্ছিলো না। কিন্তু শেষমেশ থামতে হলো এলিমিনেটরেই।
Read More: IPL 2024: “শব্দদূষণ বন্ধ হলো…” রাজস্থানের বিরুদ্ধে থামলো বেঙ্গালুরুর জয়রথ, নেটদুনিয়ায় তুমুল কটাক্ষের মুখে কোহলিরা !!
IPL না জেতার বেদনা পরিষ্কার কোহলির চোখেমুখে-
‘ডু অর ডাই’ ম্যাচে আজ রাজস্থান রয়্যালসের মুখোমুখি হয়েছিলো বেঙ্গালুরু। জিতলে সুযোগ ছিলো দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের মুখোমুখি হওয়ার। কিন্তু বিধি বাম। আজ আর ভাগ্য সাহায্য করলো না ফাফ দু প্লেসির দলকে। টসে জিতে প্রথমে বোলিং-এর সিদ্ধান্ত নেন রাজস্থান অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন। শুরুটা ভালো হয় নি বেঙ্গালুরুর। প্রথমে আউট হন অধিনায়ক দু প্লেসি। এরপর ৩২ রান করে ফেরেন স্বয়ং কোহলি। এরপর ক্যামেরন গ্রিন, রজত পতিদার, মহীপাল লোমরোর’রা ক্যামিও ইনিংস খেললেও দলের রান ১৭২-এর বেশী টেনে নিয়ে যেতে পারেন নি। আধুনিক টি-২০’র যুগে এই রান যে যথেষ্ট নয় তা ইনিংসের বিরতিতেই জানিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। বাস্তবেও দেখা গেলো তেমনটাই। যশস্বী জয়সওয়াল, রিয়ান পরাগ, শিমরণ হেটমায়াররা জিতিয়ে দিলেন রাজস্থানকে।
এর আগে বেশ কয়েকবার ফাইনাল খেলেছিলো বেঙ্গালুরু। এবার থামতে হলো এলিমিনেটরে। রোভম্যান পাওয়েলের শটটি বাউন্ডারি লাইনের বাইরে আছড়ে পড়ার পরেই ক্যামেরার ফ্রেমবন্দী হলেন বিরাট কোহলি। মাথায় শোভা পাচ্ছে কমলা টুপি, কিন্তু কোহলির মুখ থেকেই পরিষ্কার যে ব্যক্তিগত অর্জন নয়, দলের আরও একবার ট্রফি না জেতার বেদনা কুরে কুরে খাচ্ছে তাঁকে। দিনকয়েক আগে অবিশ্বাস্য জয়ে প্লে-অফে পৌঁছে আনন্দে উদ্বেল হয়ে উঠতে দেখা গিয়েছিলো তাঁকে। আজ হেরে কিন্তু মাঠে বিশেষ প্রতিক্রিয়া দিলেন না তিনি। থমথমে মুখে এগিয়ে যান প্রতিপক্ষের দিকে। আগের ম্যাচে চেন্নাই তারকাদের সাথে হ্যান্ডশেক না করা নিয়ে জলঘোলা হয়েছে। আজ নিজেই রাজস্থানের ক্রিকেটারদের সাথে হাত মেলান তিনি। জড়িয়ে ধরেন অশ্বিনকে। তারপর একবুক হতাশা ও যন্ত্রণা নিয়ে মাঠ ছাড়েন ‘কিং কোহলি।’