IPL 2025: বিশাখাপত্তনমে দিল্লীর বিপক্ষে জয়ের খুব কাছাকাছি পৌঁছেও হারতে হয়েছিলো লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টসকে (LSG)। আজ শেষমেশ সাফল্যের স্বাদ পেলো তারা। ৫ উইকেটের ব্যবধানে জিতলো সানরাইজার্সের বিরুদ্ধে। টসে জিতে প্রথম প্রতিপক্ষকে ব্যাটিং-এর আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ঋষভ পন্থ। পাওয়ার-প্লে’তে শার্দুল ঠাকুরের দেওয়া জোড়া ধাক্কা সামলাতে বেশ খানিকটা সময় লেগে গিয়েছিলো অরেঞ্জ আর্মি’র। হেড, নীতিশ রেড্ডি’রা চেষ্টা করলেও চেনা ছন্দে ফেরাতে পারেন নি দল’কে। নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৯০তে শেষ হয় হায়দ্রাবাদের (SRH) ইনিংস। রান তাড়া করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট খুইয়েছিলো লক্ষ্ণৌ’ও। কিন্তু গুটিয়ে যায় নি তারা। বরং নিকোলাস পুরান ও মিচেল মার্শ ফিরিয়ে দেন আগ্রসন। গড়েন ১১৬ রানের জুটি। আয়ুষ বাদোনি, ঋষভ পন্থরা অল্প রানে আউট হলেও আব্দুল সামাদের ঝলমলে ক্যামিও জয় এনে দেয় সুপারজায়ান্টস শিবিরকে।
Read More: “অতি আত্মবিশ্বাস পতনের কারণ…” লখনৌয়ের বিরুদ্ধে ১৯০ রানে শেষ হলো সানরাইজার্সের ব্যাটিং, সমাজ মাধ্যমে শুরু হলো চর্চা !!
১) শার্দুলের জোড়া ধাক্কায় বেসামাল SRH-

সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের (SRH) সর্বজনবিদিত ওপেনিং জুটিকে বেশীদূর এগোতে দেন নি শার্দুল ঠাকুর (Shardul Thakur)। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই তিনি ফিরিয়ে দেন অভিষেক শর্মা’কে। ৬ বলে ৬ করেই আউট হন তিনি। একই ওভারে ঈশান কিষণকেও আউট করেন মহারাষ্ট্রের অলরাউন্ডার। গত রবিবার রাজস্থানের বিপক্ষে ১০৬ করেছিলেন তরুণ উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। আজ গোল্ডেন ডাক করেই সাজঘরে ফিরতে হয় তাঁকে।
২) ধারাবাহিকতা বজায় রাখলেন হেড-
মরসুমের প্রথম আইপিএল ম্যাচে ৬৭ করেছিলেন ট্র্যাভিস হেড। আজ লক্ষ্ণৌর বিরুদ্ধেও আগ্রাসন থেকে সরে এলেন না তিনি। অভিষেক ও ঈশান সাজঘরে ফেরার পরেও ধুন্ধুমার ইনিংস খেলেন তিনি। মারেন ৩টি ছক্কা ও ৬টি চার। ২৮ বলে ৪৭ রান করে শেষমেশ বোল্ড হন তিনি। অজি তারকার অফ ও মিডল স্টাম্প উড়িয়ে দেন তরুণ পেসার প্রিন্স যাদব।
৩) মিডল অর্ডারের মান রাখেন নীতিশ-ক্লাসেন-
ট্র্যাভিস হেড আউট হওয়ার পর হায়দ্রাবাদ ইনিংসের হাল ধরেন নীতিশ কুমার রেড্ডি ও হেনরিখ ক্লাসেন। ২৬ রান করেন প্রোটিয়া তারকা। তিনি দুর্ভাগ্যজনক ভাবে রান-আউট না হলে হয়ত আরও খানিক বাড়তে পারত তাঁদের জুটি। উইকেটের এক প্রান্ত আঁকড়ে ব্যাটিং করছিলেন নীতিশ কুমার রেড্ডি। শেষমেশ তাঁকে সাজঘরে ফেরান রবি বিষ্ণোই। তরুণ লেগস্পিনারের বল নীতিশের রক্ষণ ভেঙে আছড়ে পড়ে স্টাম্পে। ২৮ বলে ৩২ রান করেন তিনি।
৪) চেনা ছন্দে পাওয়া গেলো না হায়দ্রাবাদকে-

সানরাইজার্স মানেই ধুন্ধুমার ব্যাটিং, ২০০ বা ২৫০’র বেশী রান। সাম্প্রতিক অতীতে আইপিএলের আসরে বারবার দেখা গেছে এমনই দৃশ্য। কিন্তু আজ রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামের ব্যাটিং সহায়ক বাইশ গজে তাদের দুর্দান্ত ভাবে রুখে দিলো লক্ষ্ণৌ। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৯০ রানই তুলতে পারে অরেঞ্জ আর্মি। বল হাতে সফল শার্দুল ঠাকুর। ৩৪ রানের বিনিময়ে ৪টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। এছাড়া ১টি করে সাফল্য আবেশ খান, রবি বিষ্ণোই, প্রিন্স যাদব ও দিগভেশ যাদবের।
৫) দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট তোলেন শামি-
১৯১ রান তাড়া করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছিলো লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টসকে। মহম্মদ শামি’র বলে প্যাট কামিন্সের হাতে ধরা পড়েন এইডেন মার্করাম। ৪ বলে ১ রানের বেশী এগোতে পারেন নি প্রোটিয়া ওপেনার। সুপারজায়ান্টস শিবির যখন প্রথম উইকেট হারায় তখন তাদের স্কোরবোর্ডে ৪ রানই।
৬) প্রত্যাঘাত পুরান-মার্শ জুটির-

৪ রানের মাথায় প্রথম উইকেট খোয়ানোর পরেও গুটিয়ে যায় নি লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টস। সানরাইজার্স বোলিং-কেই পালটা চাপে ফেলেন নিকোলাস পুরান ও মিচেল মার্শ। অনবদ্য ছন্দে রয়েছেন দুজনেই। শামি, কামিন্স, অভিষেকদের বারবার গ্যালারিতে আছড়ে ফেলেন তাঁরা। মাত্র ২১ বলে অর্ধশতক সম্পূর্ণ করেন নিকোলাস পুরান। কামিন্সের বলে লেগ বিফোর হওয়ার আগে ২৬ বলে ৭০ রানের ধুন্ধুমার ইনিংস খেলেন তিনি। মেরেছেন ৬টি চার ও ৬টি ছক্কা। পিছিয়ে ছিলেন না মার্শ’ও। চলতি আইপিএল মরসুমের দ্বিতীয় অর্ধশতরান করেন তিনি। ৩১ বলে ২টি ছক্কা ও ৭টি চারের সাহায্যে ৫২ করে কামিন্সের দ্বিতীয় শিকার হন তিনি। ১১৬ রানের জুটি গড়েন তাঁরা।
৭) দ্বিতীয় ম্যাচেও ব্যর্থ ঋষভ পন্থ-

পুরান ও মার্শের দাপটে একটা সময় সহজ জয়ের দিকে এগোচ্ছিলো লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টস। পরিস্থিতি বদলায় তাঁরা সাজঘরে ফেরার পর। অ্যাডাম জাম্পাকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে বসেন আয়ুষ বাদোনি। অনেকখানি ছুটে এসে দুর্দান্ত ক্যাচ তালুবন্দী করেন হর্ষল প্যাটেল। খানিক পর লক্ষ্ণৌ অধিনায়ক ঋষভ পন্থকেও আউট করেন তিনিই। শর্ট থার্ড ম্যানে মহম্মদ শামির হাতে ধরা পড়েন তিনি। হর্ষলের ডেলিভারিটি কোমরের উপরে ছিলো না তা নিয়ে দ্বিধা ছিলো আম্পায়ারের মনে। নট-আউট দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু রিভিউ নেয় হায়দ্রাবাদ। দেখা যায় বৈধ ছিলো হর্ষলের বল’টি। ১৫ বলে ১৫ করে আউট হন ঋষভ। দিল্লীর পর সানরাইজার্সের বিপক্ষে ব্যর্থ ২৭ কোটির তারকা।
৮) ম্যাচ জিতিয়ে নায়ক আব্দুল সামাদ-
আচমকা জোড়া উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে গিয়েছিলো লক্ষ্ণৌ। কিন্তু ডেথ ওভারে ‘মুশকিল আসান’ হয়ে দেখা দেন আব্দুল সামাদ। কাশ্মীরের তরুণ এবারই সানরাইজার্স ছেড়ে যোগ দিয়েছেন সুপারজায়ান্টস স্কোয়াডে। পুরনো দলের ‘পথের কাঁটা’ হয়ে উঠলেন তিনি। মাত্র ৮ বলে অপরাজিত ২২ রান করে লক্ষ্ণৌকে চলতি আইপিএলের প্রথম জয় এনে দেন তিনি। ২টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ইনিংস সাজিয়েছেন সামাদ। ১৩ করে অপরাজিত থাকেন ডেভিড মিলার’ও।
Also Read: IPL 2025: সানরাইজার্সের ‘পথের কাঁটা’ শার্দুল, হায়দ্রাবাদের ব্যাটিং স্বর্গে ১৯০তেই থামতে হলো অরেঞ্জ আর্মি’কে !!