TOP 4: ২০০৮ সালে আইপিএলের (IPL) সূচনালগ্ন থেকে টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে আসছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (RCB)। দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছে সতেরো বছর। কিন্তু এখনও ট্রফি জেতার সৌভাগ্য হয় নি তাদের। ৪ বার ফাইনালে পা রেখেছে তারা। কিন্তু প্রতিবারই হাতছাড়া হয়েছে খেতাব। ২০২৪ মরসুমে তাদের মেয়েদের দল উইমেন্স প্রিমিয়ার লীগ (WPL) ট্রফি জেতায় আশা জেগেছিলো সমর্থকদের বুকে। দীর্ঘ হতাশার অধ্যায় পেরিয়ে অবশেষে পুরুষ দল’ও ট্রফি জিতবে বলে স্বপ্ন দেখেছিলেন অনেকে। কিন্তু শেষমেশ সেই স্বপ্ন আর পূরণ হয় নি। শুরুতে পিছিয়ে পড়েও টানা ছয় ম্যাচ জিতে প্লে-অফের যোগ্যতা আরসিবি (RCB) অর্জন করেছিলো ঠিকই। কিন্তু ছিটকে যায় এলিমিনেটরেই। ২০২৫-এর আইপিএলের (IPL) আগে থাকছে মেগা অকশন। ট্রফি জয়ের রসদ সেখান থেকেই জুটিয়ে নিতে চায় বেঙ্গালুরু ফ্র্যাঞ্চাইজি। পুরনো স্কোয়াডের কেবল চারজনকে ধরে রাখতে পারে তারা।
Read More: আবার শুরু হচ্ছে ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সিরিজ, জয় শাহের কাছে প্রস্তাব রাখলো PCB !!
বিরাট কোহলি-
তালিকার প্রথম নামটি অবশ্যই বিরাট কোহলির (Virat Kohli)। ২০০৮ সালে সদ্য অনুর্দ্ধ-১৯ বিশ্বকাপ জিতে আসা বিরাট প্রথম যোগ দিয়েছিলেন বেঙ্গালুরু ফ্র্যাঞ্চাইজিতে। এরপর সতেরো বছরে মহাতারকা হয়ে উঠেছেন তিনি। একইসাথে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর সাথে যেন সমার্থক হয়ে উঠেছেন তিনি। একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে আইপিএলের (IPL) সতেরো মরসুম একই ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে খেলে গিয়েছেন তিনি। ২০২৫-এও তাতে বদল আসবে না বলেই মনে করছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। ২০২৪ সালে দ্বিতীয় বারের জন্য সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের কমলা টুপি জিতেছেন তিনি। প্রায় ৬২ গড় ও ১৫৫ স্ট্রাইক রেট সহ করেছেন ৭৪১ রান। তাই তাঁকে রিটেন না করার কোনো কারণ নেই বেঙ্গালুরুর (RCB)। আন্তর্জাতিক টি-২০ থেকে অবসর নিয়েছেন কোহলি। তবে আইপিএল (IPL) নিশ্চিত ভাবেই খেলবেন। আর নিশ্চিতভাবেই তাঁকে খেলতে দেখা যাবে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স জার্সিতেই।
রজত পতিদার-
মধ্যপ্রদেশের রজত পতিদার (Rajat Patidar) রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর (RCB) মিডল অর্ডারের অন্যতম ভরসাযোগ্য ব্যাটার। ২০২১ সাল থেকে তিনি রয়েছেন দলে। প্রথম বছর বিশেষ সুযোগ পান নি। তবে জাত চেনান দ্বিতীয় বছরে। মাত্র ৮ ম্যাচ খেলেই করেন ৩৩৩ রান। এলিমিনেটর ম্যাচে তাঁর দুর্দান্ত ১১২* রানের ইনিংসের ভর করে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টসকে (LSG) পরাজিত করেছিলো রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে ২০২৩ মরসুমে চোটের কারণে ছিটকে যেতে হয়েছিলো তাঁকে। কিন্তু ২০২৪-এ ফের ঝড় দেখা যায় রজতের ব্যাটে। প্রথম কয়েকটি ম্যাচে রান না এলেও আইপিএলের (IPL) দ্বিতীয় পর্বে অনবদ্য ব্যাটিং করেন তিনি। ৫টি অর্ধশতকের সৌজন্যে ৩৯৫ রান করেন তিনি। স্ট্রাইক রেট ছিলো ১৭৭.১৩। গড় ৩৪-এর কাছাকাছি। বিশেষজ্ঞদের ধারণা আরসিবি নিজেদের দ্বিতীয় রিটেনশন স্লটটি ব্যবহার করবে রজতের জন্য।
মহম্মদ সিরাজ-
বিরাট, রজতদের মতই গত কয়েক বছরে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর (RCB) ‘ঘরের ছেলে’ হয়ে উঠেছেন মহম্মদ সিরাজ (Mohammed Siraj)। ২০১৭ সালে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের জার্সিতে আইপিএল কেরিয়ার শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু ২০১৮ থেকেই রয়েছেন বেঙ্গালুরুতে। ২০২২ নিলামের আগে তাঁকে ছেড়ে দিলেও ফের ৭ কোটি টাকা খরচ করে দলে সামিল করেছিলো ফ্র্যাঞ্চাইজি। কর্মকর্তাদের আস্থার বিনিময়ে দারুণ পারফর্ম্যান্স করে দেখিয়েছেন সিরাজ (Mohammed Siraj)। হয়ে উঠেছেন বেঙ্গালুরু বোলিং-এর প্রধান মুখ। বিশেষ করে পাওয়ার প্লে’তে উইকেট নেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ মুন্সীয়ানা দেখিয়েছেন তিনি। ২০২৩-এর আইপিএলে (IPL) নিয়েছিলেন ১৯ উইকেট। ২০২৪-এর টুর্নামেন্টেও ১৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি। হয়েছেন দলের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী। লাগাতার ভালো পারফর্ম্যান্সের পুরষ্কার পাবেন সিরাজ। তাঁকেও ‘রিটেন’ করবে দল।
উইল জ্যাকস-
বিসিসিআই-এর তরফে প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে সর্বোচ্চ কতজন ক্রিকেটারকে ‘রিটেন’ করার ছাড়পত্র দেওয়া হবে তা নিশ্চিত নয়। তবে যদি চারজনকে ধরে রাখার সিদ্ধান্ত সিলমোহর দেন জয় শাহ, রজার বিনি’রা, তাহলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু হয়ত ‘রিটেন’ করতে পারে ইংল্যান্ডের উইল জ্যাকসকে (Will Jacks)। তাঁর সাথে দৌড়ে থাকতে পারতেন ফাফ দু প্লেসি (Faf du Plessis) ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল’ও (Glenn Maxwell)। কিন্তু দুজনের সাম্প্রতিক ফর্ম বিচার করে জ্যাকসকেই সম্ভবত বেছে নেবেন কোচ অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার। এছাড়াও দু প্লেসির বিপক্ষে যেতে পারে তাঁর বয়সও। ইংল্যান্ডের স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার জ্যাকস (Will Jacks) ক্রিকেটদুনিয়ায় ঝোড়ো ইনিংস খেলার জন্য প্রসিদ্ধ। তার নমুনা তিনি রেখেছিলেন গত আইপিএলে গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক শতরান করে। এছাড়াও প্রায়শই উইকেট তুলে জুটি ভাঙতেও তিনি সিদ্ধহস্ত। ২০২৫-এর আইপিএলে তাঁর থেকেও ভালো পারফর্ম্যান্সের আশায় থাকবে বেঙ্গালুরু ফ্র্যাঞ্চাইজি।