IPL 2025: গতকাল গ্বালিয়রের শ্রীমন্ত মাধবরাও সিন্ধিয়া স্টেডিয়ামে টি-২০’র আসরে বাংলাদেশকে উড়িয়ে দিলো টিম ইন্ডিয়া (Team India)। একাধিক তারকা ক্রিকেটার নেই ভারতীয় স্কোয়াডে, তা সত্ত্বেও প্রতিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করে হারালো সূর্যকুমার যাদবের দল। টসে জিতে প্রথম বোলিং বেছে নিয়েছিলো ভারত। আর্শদীপ সিং (Arshdeep Singh), বরুণ চক্রবর্তীদের সৌজন্যে ১৯.৫ ওভারে ১২৭ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করতে নামা টিম ইন্ডিয়া ইনিংসের শুরু থেকেই ছিলো আগ্রাসী। রীতিমত ঝড় তুলতে দেখা যায় সঞ্জু স্যামসন (Sanju Samson), সূর্যকুমার যাদবদের। ফিনিশার হিসেবে দুর্দান্ত ১৬ বলে ৩৯* রানের ইনিংস খেলেন হার্দিক পান্ডিয়া (Hardik Pandya)। ১১.৫ ওভারেই লক্ষ্যমাত্রা পেরিয়ে যায় ভারত। কুড়ি-বিশের খেলায় তরুণদের এগিয়ে দেওয়ার যে নীতি সাম্প্রতিক কালে নিয়েছে ভারতীয় শিবির, গতকালও দেখা মিললো তার। অভিষেক হলো মায়াঙ্ক যাদব ও নীতিশ কুমার রেড্ডি’র।
Read More: “বাস্তবায়িত করাটাই উদ্দেশ্য…” বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জিতে আপ্লুত সূর্যকুমার, করলেন এই মন্তব্য !!
দুই তরুণের অভিষেক ভারতীয় জার্সিতে-
আইপিএলের (IPL) আসরে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন মায়াঙ্ক যাদব (Mayank Yadav) ও নীতিশ কুমার রেড্ডি (Nitish Kumar Reddy)। লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টসের জার্সিতে নিয়মিত ১৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা বা তার বেশী গতিতে বোলিং করেছিলেন দিল্লীর পেসার। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে স্পিডোমিটারের কাঁটা ছুঁয়েছিলো ১৫৬.৭ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা’র এক্সপ্রেস গতিও। তখন থেকেই তাঁকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বৃত্তে জায়গা করে দেওয়ার আলোচনা চলছিলো। জিম্বাবুয়ে বা শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ডাক পান নি। কিন্তু বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তাঁকে খেলানোর সিদ্ধান্তই নেন কোচ গৌতম গম্ভীর (Gautam Gambhir)। দেশের হয়ে শুরুটা দারুণ করেন মায়াঙ্ক। প্রথম ওভারে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো রান করতে পারেন নি প্রতিপক্ষ ব্যাটার। মাহমুদুল্লাহ’র উইকেট’ও তুলে নেন মায়াঙ্ক। ৪ ওভারে ২১ রান খরচ করে তাঁর ঝুলিতে ১ উইকেট।
সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের (SRH) হয়ে আইপিএলে (IPL) নজর কেড়েছিলেন নীতিশ কুমার রেড্ডি (Nitish Kumar Reddy)। মিডল অর্ডারে ঝোড়ো ব্যাটিং-এর পাশাপাশি কার্যকরী পেস বিকল্প হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেছিলেন তরুণ অলরাউন্ডার। জাতীয় দলে হার্দিক পান্ডিয়ার উত্তরসূরি হতে পারেন তিনি, শুরু হয়েছিলো চর্চা। অভিষেক ম্যাচে যদিও অপেক্ষাকৃত নিষ্প্রভ ছিলেন নীতিশ কুমার রেড্ডি। গ্বালিয়রে তাঁকে দিয়ে দুই ওভার বোলিং করান ‘ক্যাপ্টেন’ সূর্যকুমার যাদব (Suryakumar Yadav)। কোনো সাফল্য পান নি তিনি। খরচ করেন ১৭ রান। ইকোনমি রেট ৮.৫০। ব্যাট হাতে নেমেছিলেন চার নম্বরে। হার্দিকের ছায়ায় খানিক ঢাকা পড়ে রইলেন নীতিশ। শেষমেশ ১৫ বলে ১৬ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। মেরেছেন ১টি ছক্কা। স্পিনের বিরুদ্ধে রিভার্স স্যুইপে নজর কেড়েছেন তিনি।
IPL-এ অর্থপ্রাপ্তি মায়াঙ্ক-নীতিশদের-
গত ২৯ সেপ্টেম্বর আইপিএলের (IPL) রিটেনশন সংক্রান্ত নিয়মাবলী সামনে এনেছে বিসিসিআই। জানা গিয়েছে যে পাঁচজন ক্রিকেটারকে ‘রিটেন’ করতে পারবে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলি। সাথে থাকছে একটি ‘রাইট টু ম্যাচ’ বা আরটিএম কার্ড। ‘ক্যাপড’ ক্রিকেটার বা আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন তারকাদের জন্য পাঁচটি রিটেনশন স্লটের মূল্যমান স্থির করা হয়েছে যথাক্রমে ১৮, ১৪, ১১, ১৮ ও ১৪ কোটি। এই আর্থিক মূল্য অনেকটাই কমে যায় কোনো খেলোয়াড় ‘আনক্যাপড’ হলে। তাঁদের জন্য খরচের পরিমাণ দাঁড়ায় ‘মাত্র’ ৪ কোটি।
মায়াঙ্ক (Mayank Yadav) ও নীতিশ, দুজনেই এতদিন ছিলেন আনক্যাপড। তাঁদের ফ্র্যাঞ্চাইজি লক্ষ্ণৌ ও সানরাইজার্স চাইলে ৪ কোটিতে ধরে রাখতে পারত তাঁদের। কিন্তু রবিবারের পর সেই সুযোগ আর রইলো না তাদের জন্য। এক ধাক্কায় অনেকখানি বেড়ে গেলো দুই তরুণ তুর্কির দাম। তাঁদের প্রতিভার কথা মাথায় রেখে এই অর্থ দুই দল খরচ করবে নাকি ‘রিলিজ’ করার ঝুঁকি নেবে, সেদিকেই এখন তাকিয়ে সকলে। ‘রিলিজ’-এর পরেও সুযোগ থাকছে নিলাম থেকে মায়াঙ্ক বা নীতিশ’কে (Nitish Kumar Reddy) সরাসরি দলে ফেরানোর বা আরটিএম ব্যবহারের।