IPL 2025: আঠারো বছরের অপেক্ষার অবসান হলো আজ। অবশেষে আইপিএল (IPL) জয়ীদের তালিকায় যুক্ত হলো রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর নাম। এর আগে নয় বার প্লে-অফে উঠেছে তারা। তিন বার খেলেছে ফাইনালও। কিন্তু শেষরক্ষা হয় নি। তীরে এসে ডুবেছে তরী। এবি ডিভিলিয়ার্স, ক্রিস গেইলের মত টি-২০’র রথী-মহারথীরাও সাফল্য এনে দিতে পারেন নি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে। এবার রজত পাটিদারের (Rajat Patidar) হাত ধরে যাবতীয় ব্যর্থতা অবশেষে কাটিয়ে উঠলো রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স। ফাইনালে পাঞ্জাব কিংসের (PBKS) বিরুদ্ধে প্রথম ব্যাটিং করে ১৯০ তোলে তারা। রান তাড়া করতে নেমে একটা সময় অবধি ভালোই এগোচ্ছিলেন জশ ইংলিসরা। কিন্তু ক্রুণাল, ভুবনেশ্বররা পরপর উইকেট তুলে এগিয়ে দেন বেঙ্গালুরুকে। শেষমেশ ৬ রানে জেতে তারা। খেলা শেষে জয়ী ও বিজিত দলের তারকাদের পাশাপাশি পুরস্কৃত হলেন বিভিন্ন ক্ষেত্রের সেরা তারকারা।
Read More: “শেষ ভালো যার..”, ১৮ বছরের ট্রফি জয়ের খরা কাটিয়ে চ্যাম্পিয়ন RCB, সোশ্যাল মিডিয়ায় উৎসবে মাতলেন ভক্তরা !!
কমলা টুপি-

অষ্টাদশতম আইপিএলে (IPL) সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের কমলা টুপি উঠলো গুজরাত টাইটান্সের সাই সুদর্শনের (Sai Sudharsan) মাথায়। গোটা টুর্নামেন্ট জুড়ে দারুণ ধারাবাহিক ছিলেন তামিলনাড়ুর তরুণ। শুরুটা করেছিলেন পাঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে ৭৪ করে। আর এবারের মত আইপিএলে ইতি টানলেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ৮০ রানের ঝলমলে ইনিংস দিয়ে। ২৩ বর্ষীয় ওপেনার এবার ১৫ ম্যাচে ৫৪.২১ গড়ে করেছেন ৭৫৯ রান। স্ট্রাইক রেট ১৫৬.১৭। দিল্লী ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে একটি শতরান করেছেন সাই। অর্ধশতকের গণ্ডী পেরিয়েছেন ৬ বার। কমলা টুপির দৌড়ে দ্বিতীয় স্থানে শেষ করলেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের সূর্যকুমার যাদব। ১৬ ম্যাচে ৬৫.১৮ গড় ও ১৬৭.৯১ স্ট্রাইক রেটে তিনি করেছেন ৭১৭ রান। ফাইনালে ৪৩ করে তিনে উঠে এলেন বিরাট কোহলি। ১৬ ম্যাচে ৫৯.৭২ গড়ে তিনি করেছেন ৬৫৭ রান।
ব্যাট হাতে সেরা তিন-
| নাম | দল | মোট রান | ব্যাটিং গড় | ৫০/১০০ | স্ট্রাইক রেট |
| সাই সুদর্শন | গুজরাত টাইটান্স | ৭৫৯ | ৫৪.২১ | ০৬/০১ | ১৫৬.১৭ |
| সূর্যকুমার যাদব | মুম্বই ইন্ডিয়ান্স | ৭১৭ | ৬৫.১৮ | ০৪/০০ | ১৬৭.৯১ |
| বিরাট কোহলি | রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু | ৬৫৭ | ৫৯.৭২ | ০৮/০০ | ১৪৫.০৩ |
বেগুনি টুপি-

এবারের আইপিএলে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী পার্পল ক্যাপ জিতলেন গুজরাত টাইটান্সের প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা (Prasidh Krishna)। কর্ণাটকের বোলার টুর্নামেন্টের শুরু থেকে শেষ অবধি ছিলেন দারুণ ধারাবাহিক। তিনি ১৫ ম্যাচে নিয়েছেন ২৫ উইকেট। গড় ১৯.৫২, ইকোনমি রেট ৮.২৭, স্ট্রাইক রেট ১৪.১। দিল্লী ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে ৪১ রানের বিনিময়ে নিয়েছিলেন ৪ উইকেট। প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা ছাড়াও সফল বোলারদের তালিকায় রয়েছেন চেন্নাই সুপার কিংসের নূর আহমেদ। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর জশ হ্যাজেলউডরাও। আফগান চায়নাম্যান স্পিনার নূর ১৪ ম্যাচে নিয়েছেন ২৪ উইকেট। গড় ১৭। ইকোনমি রেট ৮.১৬। দুটি ইনিংসে ৪টি করে উইকেট নিয়েছেন তিনি। আর হ্যাজেলউডের ঝুলিতে ২২ উইকেট। মরসুমের মাঝপথে চোট না পেলে হয়ত বাড়তে পারত তাঁর উইকেটসংখ্যা। সমসংখ্যক উইকেট মুম্বইয়ের ট্রেন্ট বোল্ট’ও।
বল হাতে সেরা তিন-
| নাম | দল | মোট উইকেট | বোলিং গড় | ইকোনমি | সেরা বোলিং |
| প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা | গুজরাত টাইটান্স | ২৫ | ১৯.৫২ | ৮.২৭ | ৪/৪১ |
| নূর আহমেদ | চেন্নাই সুপার কিংস | ২৪ | ১৭.০০ | ৮.১৬ | ৪/১৮ |
| জশ হ্যাজেলউড | রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু | ২২ | ১৬.৫৪ | ৮.৪০ | ৪/৩৩ |
মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার-

মরসুমের শুরুটা ভালো করতে পারে নি মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। প্রথম পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে চারটিতেই হেরেছিলো তারা। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার পর দারুণ ভাবে ঘুরে দাঁড়ায় মুকেশ আম্বানির দল। পরপর ম্যাচ জিতে জায়গা করে নেয় প্লে-অফে। এলিমিনেটর ম্যাচে ছন্দে থাকা গুজরাত টাইটান্সকেও হারিয়ে দেয় তারা। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে যদিও পাঞ্জাব কিংসের বিক্রমের সামনে মাথানত করতেই হয় তাদের। ষষ্ঠ ট্রফি হয়ত আসে নি। কিন্তু এই মরসুমে মুম্বুইয়ের প্রত্যাবর্তন কুর্নিশ আদায় করে নিয়েছে। এই ভোলবদলের পিছনে যিনি অন্যতম কারিগর, তিনি সূর্যকুমার যাদব (Suryakumar Yadav)। ব্যাট হাতে ধারাবাহিকতার অন্য নাম হয়ে উঠেছিলেন তিনি। ১৬ ম্যাচে ৬৫.১৬ গড় ও ১৬৭.৯১ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ৭১৭ রান। অষ্টাদশম আইপিএলের (IPL) মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার নির্বাচিত হয়েছেন মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রীই।
অন্যান্য পুরস্কারপ্রাপকদের তালিকা-
- এমার্জিং প্লেয়ার অ্যাওয়ার্ড- সাই সুদর্শন (গুজরাত টাইটান্স)
- ফেয়ার প্লে অ্যাওয়ার্ড- চেন্নাই সুপার কিংস
- মরসুমের সেরা ক্যাচ- কামিন্দু মেন্ডিস (সানরাইজার্স) বনাম চেন্নাই সুপার কিংস
- মরসুমে সর্বোচ্চ ছক্কা- নিকোলাস পুরান (৪০) [লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টস]
- মরসুমে সর্বোচ্চ চার- সাই সুদর্শন (৮৮) [গুজরাত টাইটান্স]
- ফাইনালে ম্যাচের সেরা- ক্রুণাল পাণ্ডিয়া (২/১৭)
- সুপার স্ট্রাইকার- বৈভব সূর্যবংশী (স্ট্রাইক রেট ২০৭)
- সেরা মাঠ- অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম, দিল্লী