IPL 2025: ইডেন গার্ডেন্সে আজ ঢাকে কাঠি পড়লো অষ্টাদশতম আইপিএলের (IPL)। উদ্বোধনী ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে মাঠে ‘হোম টিম’ কলকাতা নাইট রাইডার্স। টসে জিতে প্রথম বোলিং-এর সিদ্ধান্ত নেন আরসিবি অধিনায়ক রজত পাটিদার। শুরুটা ভালো হয় নি কলকাতার। প্রথম ওভারেই সাজঘরে ফেরেন ক্যুইন্টন ডি কক। প্রোটিয়া ওপেনার আউট হওয়ার পর ইনিংসের হাল ধরেছিলেন অধিনায়ক অজিঙ্কা রাহানে (Ajinkya Rahane)। সুনীল নারাইনের সাথে তাঁর ১০৩ রানের জুটি শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করিয়েছিলো নাইটদের। একটা সময় মনে হচ্ছিলো যে ২২০ বা ২৩০ অবধিও পৌঁছতে পারে স্কোরবোর্ড। কিন্তু বেঙ্গালুরুকে ম্যাচে ফেরান ক্রুণাল পাণ্ডিয়া। পরপর তিন উইকেট তুলে কলকাতাকেই ঠেলে দেন ব্যাকফুটে। রাসেল, রিঙ্কু, ভেঙ্কটেশ-রান পান নি কেউই। ডেথ ওভারে তরুণ অঙ্গকৃষ রঘুবংশীর ঝোড়ো ক্যামিও ‘ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন’দের শেষমেশ পৌঁছে দেয় ১৭৪ রানে।
অর্ধশতক রাহানের, সফল নারাইন’ও-

আইপিএলের (IPL) প্রথম ম্যাচেই মুখ থুবড়ে পড়লেন ক্যুইন্টন ডি কক। রহমানুল্লাহ গুরবাজকে রিজার্ভ বেঞ্চে রেখে প্রোটিয়া উইকেটরক্ষক-ব্যাটারকে একাদশে জায়গা দিয়েছিলেন কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত। ব্যুমেরাং হয়ে ফিরলো সেই সিদ্ধান্ত। জশ হ্যাজেলউডের ইনস্যুইং সামলাতে না পেরে প্রথম ওভারের পঞ্চম ডেলিভারিতেই উইকেট খুইয়ে বসেন তিনি। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত ক্যাচ ধরলেন আরসিবি উইকেটরক্ষক জিতেশ শর্মা। ৪ রানের মাথায় প্রথম ধাক্কা খেতে হয় ‘ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন’রা। ইনিংসের শুরুতেই উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়েছিলো কলকাতা। এরপর পালটা দেওয়ার প্রয়াস শুরু করেন অজিঙ্কা রাহানে (Ajinkya Rahane)। চতুর্থ ওভারে নাইট অধিনায়ক জোড়া ছক্কা ও একটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে স্বাগত জানান রসিক দার সালামকে। পরবর্তী ওভারে ক্রুণাল পাণ্ডিয়ার বিরুদ্ধে তাঁর ব্যাট থেকে আসে জোড়া বাউন্ডারি।
অপর প্রান্তে জ্বলে উঠেছিলো সুনীল নারাইনের (Sunil Narine) ব্যাট’ও। পাওয়ার প্লে’র প্রথম তিন ওভারে মাত্র ৯ রান স্কোরবোর্ডে তুলেছিলো নাইট রাইডার্স। রাহানে-সুনীল যুগলবন্দীতে পরবর্তী তিন ওভার থেকে আসে ৫১ রান। পাওয়ার-প্লে’র পরেও আক্রমণের পথ থেকে সরে আসে নি কলকাতা (KKR)। নবম ওভারে সুয়শ শর্মাকে স্লফ স্যুইপে ছক্কা মেরে অর্ধশতক সম্পূর্ণ করেন অজিঙ্কা রাহানে। প্রাক্তন নাইট তারকার বিরুদ্ধে চড়াও হয়েছিলেন নারাইনও। একই ওভারে দিল্লীর লেগস্পিনারের বিরুদ্ধে হাঁকান চার ও ছক্কা। অর্ধশতকের দিকে এগোচ্ছুলেন তিনিও। কিন্তু ব্যক্তিগত ৪৪ রানের মাথায় থামতে হয় তাঁকে। ইনিংসের দশম ওভারে রসিক দার সালামের (Rasik Dar Salam) বলে ক্যারিবিয়ান তারকা ধরা পড়েন জিতেশ শর্মা’র দস্তানায়। ১০৩ রানের জুটি ভাঙতেই ফের মোড় ঘুরে যায় ম্যাচের। লড়াইতে ফেরে বেঙ্গালুরু।
হতাশ করলো মিডল অর্ডার-

নারাইন আউট হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই সাজঘরমুখী হন অজিঙ্কা রাহানেও। ক্রুণাল পাণ্ডিয়ার বলে বনাইট অধিনায়ক থামেন ৩১ বলে ৫৬ করে। তাঁর তৈরি করে দেওয়া ভিতের উপর ইমারত তৈরিতে ব্যর্থ মিডল অর্ডার ব্যাটাররা। পৌনে চব্বিশ কোটির ভেঙ্কটেশ আইয়ার মাত্র ৬ রান করে ক্রুণালের (Krunal Pandya) শিকার হন। ১০ বলে ১২’র বেশী করতে পারনে নি রিঙ্কু’। বাউন্ডারি হাঁকিয়ে শুরুটা করেছিলেন আন্দ্রে রাসেল (Andre Russell)। কিন্তু সুয়শ শর্মা’র বল আছড়ে পড়ে তাঁর স্টাম্পে। রানের মুখ দেখেন নি রমনদীপ, হর্ষিতরাও। মধ্যক্রমের একমাত্র উজ্জ্বল মুখ অঙ্গকৃষ রঘুবংশী। এক প্রান্তে টিকে থেকে সচল রাখেন স্কোরবোর্ড। ২২ বলে ৩০ করে আউট হন তিনি। ইডেনের ব্যাটিং বান্ধব পিচে ১৭৫ রানের লক্ষ্য যে যথেষ্ট নয় তা মানছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রথম ম্যাচে জিততে গেলে বোলিং বিক্রম ছাড়া রাস্তা খোলা নেই কলকাতার সামনে।