আগামী বছরের আইপিএল (IPL) নিয়ে এখন থেকেই চড়ছে উত্তেজনার পারদ। মরসুম শুরুর আগে রয়েছে মেগা অকশন। এখনও পর্যন্ত নিলাম নিয়ে কোনো স্পষ্ট গাইডলাইন ঘোষণা করে নি বিসিসিআই। তবে সূত্রের খবর যে ছয়জন আন্তর্জাতিক স্তরের তারকাকে ধরে রাখার সুযোগ দেওয়া হবে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের। সাথে দুজন ‘আনক্যাপড’ খেলোয়াড়কেও আলাদা স্লটে ‘রিটেন’ করতে পারবে তারা। কোন আটজনকে ধরে রাখতে পারে দলগুলি তা নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে চর্চা। কোন মহাতারকারা রিলিজ পেতে পারেন, নিলামের টেবিলে দড়ি টানাটানি হতে পারে কোন কোন তারকাদের নিয়ে তা নিয়েও চলছে কাটাছেঁড়া। এখনও অবধি খবর মিলেছে যে আসন্ন মরসুমে দল বদলাতে পারেন কে এল রাহুল (KL Rahul), ঋষভ পন্থ’রা (Rishabh Pant)। বাতাসে ভাসছে সূর্যকুমার যাদবের নাম। সেই তালিকায় যুক্ত হতে পারেন হার্দিক পান্ডিয়া’ও (Hardik Pandya)।
Read More: IPL চ্যাম্পিয়ন অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ারকে ছাটাই করছে KKR, মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের এই ধুরন্ধরকে দিচ্ছে দায়িত্ব !!
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ছাড়তে পারেন হার্দিক পান্ডিয়া-
গত মরসুমে হার্দিক পান্ডিয়ার (Hardik Pandya) দলবদল সাড়া ফেলে দিয়েছিলো ক্রিকেটদুনিয়ায়। আইপিএলের (IPL) মিনি নিলামের ঠিক আগে ট্রেডিং উইন্ডো ব্যবহার করে গুজরাত টাইটান্স থেকে তাঁকে ফিরিয়েছিলো মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (MI)। কোনো রকম সোয়্যাপ ডিল নয় বরং ক্যাশ অনলি চুক্তিতে তারকা অলরাউন্ডারকে নিয়েছিলো পাঁচ বারের আইপিএল চ্যাম্পিয়নরা। অর্থের সংস্থান করতে গিয়ে ক্যামেরন গ্রিনকে তুলে দিতে হয় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর (RCB) হাতে। এক দশক অধিনায়কত্ব করার পর সরে দাঁড়াতে হয় রোহিত শর্মা’কে। তাঁর হাত থেকে ব্যাটন কেড়ে তুলে দেওয়া হয়েছিলো হার্দিকের (Hardik Pandya) হাতে। আগামী বেশ কয়েক বছর মুম্বইয়ের অধিনায়কত্ব সামলাবেন তিনিই, আশা করেছিলেন নীতা আম্বানিরা। কিন্তু স্বপ্ন আর বাস্তবের মধ্যে বিস্তর ফারাক প্রকাশ হয় ব্যাট-বলের যুদ্ধ শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই।
রোহিতের (Rohit Sharma) অপসারণ মনঃপুত হয় নি সমর্থকদের। ফ্র্যাঞ্চাইজির বিরুদ্ধাচারণ করেন তাঁরা। যেভাবে দলে ফিরেই নেতৃত্ব পান তিনি, তা পছন্দ হয় নি সূর্যকুমার যাদব, জসপ্রীত বুমরাহ’র (Jasprit Bumrah) মত দলের সিনিয়র তারকাদের। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর মিলেছিলো যে দুই ভাগে ভাগ হয়ে পড়েছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (MI) ড্রেসিংরুম। অশান্তির আবহ সাজঘরে।এই অচলাবস্থার রেশ পড়ে খেলাতেও। দশ দলের লীগ তালিকায় সবার নীচে শেষ করে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। হার্দিকের (Hardik Pandya) নিজের পারফর্ম্যান্সও আশানুরূপ ছিলো না। ১৮ গড়ে ২১২ রান ও মাত্র ১১টি উইকেট নেন তিনি। ২০২৫-এর আইপিএলের দল গড়ার আগে তাই সতর্ক কর্মকর্তারা। ক্রিকেটমহলে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে নন-পারফর্মিং হার্দিককে ছেড়ে দেওয়ার গুঞ্জন।
রাজস্থান রয়্যালসে যেতে পারেন হার্দিক-
যদি হার্দিক পান্ডিয়াকে (Hardik Pandya) ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তে সিলমোহর দেন আম্বানিরা, তাহলে তাঁর সামনে দুই রাস্তা খোলা থাকতে পারে। আরও একবার ট্রেডিং উইন্ডোর সাহায্যে নিলামের আগেই অন্য কোনো দলে যেতে পারেন তিনি অথবা অপেক্ষা করতে পারেন মেগা নিলামের। সেখানেও তাঁকে নিয়ে দর কষাকষি চলার সমূহ সম্ভাবনা। সূত্র মারফৎ খবর মিলেছে যে ডিসেম্বরের মেগা অকশন শুরুর আগেই হার্দিকের (Hardik Pandya) জন্য মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে লোভনীয় অফার দিতে পারে রাজস্থান রয়্যালস (RR)। গত কয়েক বছর সঞ্জু স্যামসনের (Sanju Samson) নেতৃত্বে মাঠে নামছে তারা। ২০২২ সালে ফাইনাল খেললেও আসে নি ট্রফি। সাফল্যের সন্ধানে এবার তারা বেশ কিছু রদবদল করতে পারে। বদল দেখা যেতে পারে অধিনায়কত্বেও।
হার্দিককে সম্ভাব্য নেতা হিসেবে ভাবছে তারা। পাঁচ বার আইপিএল (IPL) জিতেছেন হার্দিক। এর মধ্যে প্রথম চারটি সাফল্য এসেছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের জার্সিতে। ২০২২-তে যখন দল ছেড়ে গুজরাত ফ্র্যাঞ্চাইজিতে নাম লিখিয়েছিলেন, তখন নতুন চ্যালেঞ্জ ছিলো তাঁর সামনে। প্রথমবার পেয়েছিলেন অধিনায়কের দায়িত্ব। নেতা হিসেবে অভিষেকেই বাজিমাত করেন তিনি। শুভমান গিল, ঋদ্ধিমান সাহা, রশিদ খানদের সাথে নিয়ে টুর্নামেন্টের অন্যতম শক্তিশালী দল হিসেবে গুজরাতকে প্রতিষ্ঠা দিয়েছিলেন হার্দিক (Hardik Pandya)। ফাইনালে টাইটান্স অধিনায়ক হিসেবে সেবার হারিয়েছিলেন রাজস্থানকেই (RR)। এবার গোলাপি জার্সি গায়েই খেলতে পারেন তিনি। তাঁকে ঘিরেই দ্বিতীয় ট্রফি জয়ের স্বপ্ন দেখছে ‘রয়্যালস’ ফ্র্যাঞ্চাইজি।