IPL 2024: ওয়াংখেড়ের বাইশ গজে আজ মুখোমুখি হয়েছিলী আইপিএলের (IPL) দুই সফলতম ফ্র্যাঞ্চাইজি। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ও চেন্নাই সুপার কিংসের ধুন্ধুমার যুদ্ধের পর শেষ হাসি হলুদ জার্সিধারীদেরই। কঠিন পরিস্থিতিতে স্নায়ুর চাপ সামলে আজ জয় ছিনিয়ে নিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনিরা। টসে জিতে প্রথমে প্রতিপক্ষকে ব্যাটিং-এর আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মুম্বই অধিনায়ক হার্দিক। ঋতুরাজ, শিবম দুবে ও ধোনির সৌজন্যে ৪ উইকেট হারিয়ে ২০৬ রান স্কোরবোর্ডে তোলে চেন্নাই। রান তাড়া করতে নেমে একটা সময় এগিয়ে থাকলেও মাথিশা পাথিরানার স্পেলই বেলাইন করে মুম্বইকে। রোহিত শর্মার অনবদ্য ১০৫* রানের ইনিংস সত্ত্বেও তাদের হারতে হয় ২০ রানের ব্যবধানে।
Read More: IPL 2024: “ঘরের মাঠে আরও একটা জয়…” নববর্ষের দিন নাইটদের দুই পয়েন্ট উপহার দিয়ে খুশি ফিল সল্ট !!
১) রান পেলো না চেন্নাইয়ের নয়া ওপেনিং জুটি-
আজ ঋতুরাজ গায়কোয়াড় নয় বরং অজিঙ্কা রাহানেকে সঙ্গে নিয়ে ওপেন করতে মাঠে নেমেছিলেন রচিন রবীন্দ্র। চেন্নাই সুপার কিংসের নতুন ওপেনিং জুটি অবশ্য সফল হয় নি আজ। চেনা ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে শুরুতেই উইকেট হারান রাহানে। করেন মাত্র ৫ রান। এরপর রচিন সময় নিয়ে চেষ্টা করেছিলেন বড় ইনিংস খেলার কিন্তু ১৬ বলে ২১ করে আউট হন তিনিও। ৬০ রানের মাথায় দুই উইকেট হারিয়েছিলো চেন্নাই।
২) দাপুটে অর্ধশতক অধিনায়কের-
আজ ব্যাটিং পজিশন বদলালেও তার প্রভাব ফর্মে পড়তে দেন নি ঋতুরাজ গায়কোয়াড়। আগের খেলায় কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে অর্ধশতক করেছিলেন তিনি। আজও চমৎকার ইনিংস দেখা গেলো চেন্নাই অধিনায়কের ব্যাটে। ৪০ বলে প্রায় ১৭৩ স্ট্রাইক রেটে ৬৯ রান করেন তিনি। মারেন ৫টি চার ও ৫টি ছক্কা। হার্দিক পান্ডিয়ার শিকার হওয়ার আগে ৯৫ রানের জুটি গড়েন শিবম দুবের সাথে।
৩) চেনা মাঠে ছন্দে শিবম দুবে-
আজ মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে নিজের চমৎকার ফর্ম ধরে রাখলেন শিবম দুবে। চার নম্বরে নেমেছিলেন ব্যাট হাতে। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই ধুন্ধুমার ইনিংস খেললেন তিনি। ১৭৩.৬৮ স্ট্রাইক রেটে ৩৮ বলে ৬৬ করে অপরাজিত থাকেন তিনি। টি-২০ বিশ্বকাপের আগে শিবমের এই ইনিংস আরও একবার তাঁকে জাতীয় দলের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিলো।
৪) ওয়াংখেড়েতে বিস্ফোরক ইনিংস ধোনি’র-
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে ২০১৯ সালে সরে দাঁড়িয়েছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। খেলেন কেবল আইপিএলে। কিন্তু ব্যাট হাতে তিনি যে এখনও আগের মতই বিধ্বংসী, তার প্রমাণ আজ আবার দিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে ড্যারিল মিচেল আউট হতে মাঠে নামেন তিনি। খেললেন ঠিক চার বল। হার্দিক পান্ডিয়াকে পরপর তিনটি ছক্কা হাঁকান। ৪ বলে ৫০০ স্ট্রাইক রেটে ২০ করে অপরাজিত রইলেন তিনি। চেন্নাইকে পৌঁছে দেন ৪ উইকেটের বিনিময়ে ২০৬ রানে।
৫) উইকেট হারান ঈশান-
ওপেন করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিলেন রোহিত শর্মা ও ঈশান কিষণ। বড় রানের দিকেও এগোচ্ছিলেন তাঁরা। কিন্তু মাথিশা পাথিরানার হাতে চেন্নাই অধিনায়ক ঋতুরাজ গায়কোয়াড় বল তুলে দিতেই মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ইনিংসে দেখা যায় ছন্দপতন। নিজের প্রথম ওভারেই ঈশানকে ফেরান শ্রীলঙ্কার তরুণ পেসার। উইকেটরক্ষক-ব্যাটার ১৫ বলে ২৩ করে আউট হন। ৭০ রানে প্রথম উইকেট হারায় মুম্বই ইন্ডিয়ান্স।
৬) শতরান করলেন রোহিত শর্মা-
আইপিএলে রোহিত শর্মা’র ফর্ম নিয়ে গত কয়েক মরসুম ধরেই কথা হয়ে আসছে। চলতি টুর্নামেন্টে বেশ কয়েকবার শুরুটা ভালো করলেও ইনিংস দীর্ঘায়িত করতে পারেন নি রোহিত। আজ যাবতীয় সমালোচনার জবাব দিলেন তিনি। আগাগোড়া দাপটের সাথে খেলে ৬৩ বলে ১০৫* রানের চমৎকার ইনিংস খেললেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের প্রাক্তন অধিনায়ক। আইপিএল কেরিয়ারে এটি রোহিতের দ্বিতীয় শতরান।
৭) পাথিরানা ম্যাজিকে চাপে পড়ে মুম্বই-
মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ইনিংসকে বেলাইন করতে দেখা গেলো শ্রীলঙ্কার তরুণ পেসার মাথিশা পথিরানাকে। নিজের স্পেলের গোড়াতেই ঈশান কিষণকে ফেরান তিনি। সেই একই ওভারে আউট করেন সূর্যকুমার যাদবকে। আজ ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে খেললেন সূর্য। ২ বলে ০ রানে বাউন্ডারি লাইনে মুস্তাফিজুর রহমানের একটি দুরন্ত ক্যাচের সৌজন্যে ফেরেন সাজঘরে। ভালো খেলছিলেন তিলক বর্মা। ২০ বলে ৩১ করে পাথিরানার শিকার হন তিনিও। পরে রোমারিও শেপার্ডের উইকেটও নেন তিনি।
৮) হতাশ করলেন হার্দিক পান্ডিয়া-
পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে নেমেছিলেন হার্দিক পান্ডিয়া। ব্যাট হাতে হতাশ করলেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স অধিনায়ক। ৬ বল খেললেও করলেন কেবল ২ রান। তুষার দেশপাণ্ডের বলে উইকেট হারিয়ে আসেন হার্দিক। চাপের মুখে তাঁর ব্যর্থতা আজ ডোবালো মুম্বইকে।
৯) দুর্দান্ত জয় চেন্নাই সুপার কিংসের-
শেষ ওভারে বাকি ছিলো ৩৪ রান। রোহিত শর্মা জোড়া বাউন্ডারি মেরে নিজের শতরান পূর্ণ করলেও দলকে জয় এনে দিতে পারেন নি। ২০৭ তাড়া করতে নেমে ১৮৬ রানেই থামতে হলো মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে। হার ২০ রানের ব্যবধানে। আজকের ম্যাচে চেন্নাইয়ের জয়ের ব্যবধান অনেক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে মহেন্দ্র সিং ধোনির ঝোড়ো ক্যামিওটির গুরুত্ব। মরসুমে এই নিয়ে ছয় ম্যাচ খেলে চার নম্বর জয় পেলো গতবারের চ্যাম্পিয়নরা।