IPL 2024: ভারতরত্ন শ্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী একানা স্টেডিয়ামে আজ আইপিএলের (IPL) আঙিনায় মুখোমুখি হয়েছিলো লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টস ও পাঞ্জাব কিংস। ঘরের মাঠে মরসুমের প্রথম জয় চাইছিলো সুপারজায়ান্টস’রা। অন্যদিকে দিল্লীর বিরুদ্ধে জয়ের পর বেঙ্গালুরুতে গিয়ে আটকেছিলো পাঞ্জাবের রথের চাকা। তা পুনরায় সচল করার লক্ষ্য ছিলো শিখর ধাওয়ানের দলের। কিন্তু ৪০ ওভারের জমজমাট দ্বৈরথ শেষে হাসিমুখে মাঠ ছাড়লো হোম টিম’ই। এই আইপিএলে এখনও অবধি কেবল আরসিবি বনাম কেকেআর ছাড়া প্রতি ম্যাচেই হোম টিমই জয়লাভ করেছে। আজ একানাতেও বজায় রইলো সেই একই ধারা। ২১ রানের ব্যবধানে পাঞ্জাবকে পরাস্ত করে ২ পয়েন্ট ঝুলিতে ভরে নিলো সুপারজায়ান্টস শিবির।
একানা স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক টি-২০ ও আইপিএলে রান তাড়া করে জয়ের চেয়ে প্রথম ব্যাটিং করে জয়ের সংখ্যাই বেশী। সেই পরিসংখ্যান মাথায় রেখে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং-এর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টস। ব্যাট হাতে নজর কাড়লেন ক্যুইন্টন ডি কক, নিকোলাস পুরান। ঝোড়ো ক্যামিও ক্রুণাল পাণ্ডিয়ারও। জবাবে ব্যাট করতে নেমে একটা সময় মসৃণ গতিতে এগোচ্ছিলো পাঞ্জাব। প্রীতি জিন্টার দলকেই চালকের আসনে দেখছিলেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু মায়াঙ্ক যাদব, মহসীন খানদের দুরন্ত বোলিং-এ ম্যাচে ফেলে লক্ষ্ণৌ। প্রতিপক্ষকে বেশ খানিকটা পিছনে ফেলে বোলিং বিক্রমে শেষমেশ জয়’ও ছিনিয়ে নেয় তারা। লক্ষ্ণৌর ১৯৯/৮-এর জবাবে পাঞ্জাবের ইনিংস শেষ হয় ৫ উইকেটের বিনিময়ে ১৭৮রানে।
Read More: IPL 2024: “শাহরুখ খান সাজঘরে আসতেন এবং…” KKR মালিক সম্পর্কে অজানা তথ্য ফাঁস করলেন উমর গুল !!
অর্ধশতক করলেন ডি কক, ঝোড়ো ক্যামিও পুরান-ক্রুণালের-

লক্ষ্ণৌর হয়ে আজ ওপেন করতে মাঠে নেমেছিলেন কে এল রাহুল ও ক্যুইন্টন ডি কক। অধিনায়ক হিসেবে নয়, আজ রাহুল খেললেন ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে। কেবল ব্যাটিং-ই করলেন তিনি। সদ্য চোট সারিয়ে মাঠে ফিরেছেন। তাই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবেই এই পন্থা নিয়েছে দল। ছক্কা হাঁকিয়ে শুরুটা করলেও বেশীদূর এগোতে পারেন নি তিনি। ৯ বলে ১৫ রান করে আর্শদীপ সিং-এর বলে ধরা পড়েন জনি বেয়ারেস্টোর হাতে। এরপর তিনে নামা দেবদত্ত পাডিক্কালও আজ সুবিধা করতে পারেন নি। কর্ণাটকের তরুণ ৬ বলে ৯ রান করে শিকার হন স্যাম কারানের। ব্যর্থ মার্কাস স্টয়নিস’ও। চার নম্বরে ব্যাট করতে নেমেছিলেন অস্ট্রেলীয় অলরাউন্ডার। ১২ বলে ১৯ করে রাহুল চাহারের বলে বোল্ড হন তিনি।
৭৮ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিলো লক্ষ্ণৌ। এরপর ইনিংসের হাল ধরেন ক্যুইন্টন ডি কক ও নিকোলাস পুরান। প্রথম ম্যাচে রাজস্থানের বিরুদ্ধে ব্যর্থ হয়েছিলেন ডি কক। আজ ঘরের মাঠে পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে চমকপ্রদ অর্ধশতক এলো তাঁর ব্যাটে। ৩৮ বলে ২টি ছক্কা ও ৫টি চারের সাহায্যে করেন ৫৪ রান। আজকের লক্ষ্ণৌ অধিনায়ক নিকোলাস পুরানকে দেখা গেলো ধুন্ধুমার মেজাজে। ২১ বলে ৩টি ছক্কা ও ৩টি চারের সাহায্যে তিনি করেন ৪২ রান। আয়ুষ বাদোনি মাত্র ৮ রান করে স্যাম কারানের বলে উইকেট হারানোর পর ঝড় তুললেন ক্রুণাল পাণ্ডিয়াও। সাতে ব্যাট করতে এসে বাম হাতি অলরাউন্ডার অপরাজিত থাকেন ২২ বলে ৪৩ রান করে। লক্ষ্ণৌ নির্ধারিত ২০ ওভারে পৌঁছায় ১৯৯ রানে।
ধাওয়ানের প্রতিরোধ সত্ত্বেও হার পাঞ্জাবের-

টুর্নামেন্টের প্রথম দুটি ম্যাচে দানা বাঁধে নি পাঞ্জাবের ওপেনিং জুটি। তৃতীয় ম্যাচে লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টসের বিরুদ্ধে সপ্রতিভ লাগলো শিখর ধাওয়ান ও জনি বেয়ারেস্টোকে। ২০০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই মারমুখী ছিলেন দুজনেই। ওপেনিং জুটি ভাঙতে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হলো নিকোলাস পুরানের দলকে। শেষমেশ ২৯ বলে ৪২ করে যখন মায়াঙ্ক যাদবের বলে আউট হন বেয়ারেস্টো, পাঞ্জাবের স্কোরবোর্ডে তখন ১০২ রান। তিন নম্বরে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে খেলতে নেমে ঝড় তুলেছিলেন প্রভসিমরণ সিং। কিন্তু তা স্থায়ী হয় মাত্র ৭ বল। ১৯ রান করে মায়াঙ্ক যাদবের দ্বিতীয় শিকার হন তিনি। এরপর ধীরে ধীরে ম্যাচ থেকে হারিয়ে যেতে থাকে পাঞ্জাব। চারে নামা জিতেশ শর্মা’ও সফল হন নি। ৯ বলে ৬ রান করে উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে আসেন তিনি।
একপ্রান্ত আগলে রেখে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন পাঞ্জাব কিংস অধিনায়ক শিখর ধাওয়ান। ৩৮-এ পা দিয়েও তিনি যে ছন্দ হারান নি, তার প্রমাণ আজ দিলেন গব্বর। ৫০ বলে ৭০ রান আসে তাঁর ব্যাট থেকে। মারেন ৭টি চার ও ৩টি ছক্কা। মহসীন খানের বলে তিনি ফিরতেই জয়ের স্বপ্ন ধাক্কা খেয়েছিলো পাঞ্জাব কিংসের। এরপর ভরসার মুখ উঠতে পারতেন স্যাম কারান, কিন্তু খাতা খোলার আগেই তাঁকে সাজঘরের দিশা দেখান মহসীন খান। লিয়াম লিভিংস্টোন, শশাঙ্ক সিং-রা আজ পাঞ্জাবের মুশকিল আসান হয়ে উঠতে পারলেন না। কার্যকরী বোলিং করে তাঁদের রুখে দিলেন মহসীন, মায়াঙ্ক, রবি বিষ্ণোই’রা। আজ বিশেষ করে নজর কাড়লেন মায়াঙ্ক যাদব। ২৭ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট নিলেন এই গতিশীল পেসার। পাঞ্জাব’কে ১৭৮ রানে আটকে রেখে ২ পয়েন্ট হাতের মুঠোয় নিলো লক্ষ্ণৌ।