বেশ জমে উঠেছে সিজিন ১৬ এর আইপিএল (IPL 2023)। এবছর প্রতি দিনেই দেখা যাচ্ছে উত্তেজনামূলক ম্যাচ। ২০০ এর বেশি লক্ষমাত্রা আজকাল আইপিএলে জয়ের বেঞ্চমার্ক তৈরি করছে না। এই স্কোর ও ডিফেন্ড করে দিচ্ছে দল। আগের তুলনায় এখন খেলার অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। পরস্পর দুই ম্যাচে ২০০-এর বেশি রান চেজ করে ফেলেছে।পাশাপাশি ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন গুজরাত টাইটান্স তাদের পুরানো ফর্ম বজায় রেখেছে। সূত্রানুযায়ী, নিজের শেষ আইপিএল খেলা এম এস ধোনির (MS Dhoni) চেন্নাই সুপার কিংস বেশ দুরন্ত পারফরমেন্স দেখাচ্ছে। এছাড়া শীর্ষ চারে বিরাজ মান রয়েছে লখনৌ সুপার জায়ান্টস দলও। আইপিএলের ক্রেজ এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে, টিকিট নিমেষেই হচ্ছে সোল্ড আউট। এই আইপিএলে নতুন কিছু মুখ’কে বেশ অসাধারণ পারফরমেন্স দেখাতে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু কিছু টি টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট রয়েছেন যারা ক্যাপ্টেনের বিশ্বাস ভাঙছেন একেরপর এক ম্যাচে।
১. পৃথ্বী শ

এই মরসুমে দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে খেলা পৃথ্বী শ’কে (Prithvi Shaw) সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে খেলা দিল্লির সপ্তম ম্যাচ থেকেই বাইরের পথ দেখিয়েছেন অধিনায়ক ওয়ার্নার ও টিম ম্যানেজমেন্ট। তাকে আগামী দিনে সুযোগ দেবে কিনা সে বিষয়ে রয়েছে যথেষ্ট প্রশ্ন চিহ্ন। এই মৌসুমে খেলা ৬ ম্যাচে ৭.৮৩ গড়ে মাত্র ৪৭ রান করেছেন তিনি। পৃথ্বী লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে ১২ রান করেছিলেন, দ্বিতীয় ম্যাচে তিনি গুজরাট টাইটান্সের বিরুদ্ধে ৭ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরেছিলেন। রাজস্থানের বিরুদ্বে তৃতীয় ম্যাচে খাতাই খুলতে পারেননি ও মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে করেন মাত্র ১৫, কলকাতার বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচে করেছেন মাত্র ১৩ রান। ভারতীয় দলের ভবিষ্যত ওপেনার হিসাবে তাকে অনেকেই ভেবে নিয়েছিলেন, কিন্তু তার এই জঘন্য পারফরমেন্সের পর ফ্রাঞ্চাজির হয়ে খেলার উপরে উঠেছে প্রশ্ন চিহ্ন।
২. সুনীল নারিন

এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন কলকাতা নাইট রাইডার্স দলের নির্ভরযোগ্য অলরাউন্ডার সুনীল নারিন (Sunil Narine)। কলকাতা দলের এই প্লেয়ার ২০১২ সাল থেকে দলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। তার স্পিনের দিন দিন কমে যাচ্ছে, টি টোয়েন্টি ক্রিকেটের অন্যতম সেরা প্লেয়ারদের মধ্যে একজন হলেন নারিন। বিশ্বের বিভিন্ন লিগে তাকে প্রতিনিধিত্ব করতে দেখা যায়। একসময় দলের ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার ছিলেন, তবে এই আইপিএলে একেবারেই ছন্দের বাইরে রয়েছেন সুনীল। ৯ টি ম্যাচে তিনি বোলিং করে নিয়েছেন ৭ টি উইকেট এবং তার ইকোনমি রেট ৮.৮১। এছাড়া ব্যাট হাতে, ৭ ইনিংসে তিনি কেবলমাত্র ১৩ রান বানাতে পেরেছেন। ওপেনিং করতে এসেও হতাশ করেছেন তিনি। অধিনায়ক রানার (Nitish Rana) তিনি বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন।
৩. যশ দয়াল

এই তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছেন যশ দয়াল (Yash Dayal)। গুজরাট টাইটান্স দলের এই পেসার রিতিমতন এই আইপিএলে আর সুযোগ পাবেন কিনা তার উপর রয়েছে যথেষ্ঠ সন্ধেও। দয়ালের নাম শুনলেই প্রথমে উঠে আসে রিঙ্কু সিংয়ের (Rinku Singh) নাম। এক অস্বাভাবিক কাজ করে সকলের পছন্দের পাত্র হয়ে উঠেছেন রিঙ্কু, শেষ ওভারে যখন প্রয়োজন ২৮, তখন রিঙ্কুর ৫ ছক্কা ক্রিকেট বিশ্বকে এগিয়ে হিলিয়ে দেয়। আর রিঙ্কুর হাঁকানো এই ৫ ছক্কা যশের ক্যারিয়ারের উপর প্রভাব ফেলেছে। এবছর আইপিএলে তিনি ৩ ম্যাচে একটিও উইকেট নিতে পারেননি এবং তার ইকোনমি রেট ১৫.৮৩। যদিও এই ম্যাচের পরে শারীরিক ও মানসিক ভাবে অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছেন যশ। এমনকি অধিনায়ক হার্দিক তাকে দলে সুযোগ দেওয়া নিয়ে স্পষ্ট কোনো মন্তব্য করেননি।
৪. দীপক হুদা

এই তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছেন প্রতিভাবান অলরাউন্ডার দীপক হুদা (Deepak Hooda)।২০২২ আইপিএলে লখনৌ দলের হয়ে অসাধারণ প্রদর্শন দেখিয়ে সুযোগ পেয়েছিলেন জাতীয় দলে। কিন্তু এবছর তার পারফরমেন্সের দেখা গিয়েছে বিস্তর পরিবর্তন। এবছর তার উপর প্রত্যাশা দেখিয়ে দলে সামিল করেছিল লখনৌ দল। ৯ ম্যাচে ৬.৬২ গড়ে মাত্র ৫৩ রান বানিয়েছেন দীপক। তার স্ট্রাইক রেটও ৮৯.৪৩। পাশাপাশি মাত্র ১ ওভারেই বোলিং করার সুযোগ পেয়েছেন দীপক। তার এই খারাপ পারফরমেন্সের জন্য তাকে চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে দলের বাইরে বসতে হয়েছে।
৫. জোফরা আর্চার

টি টোয়েন্টি ক্রিকেটের অন্যতম সেরা বলার হলেন ইংল্যান্ডের পেসার জোফরা আর্চার (Jofra Archer)। গতবছর চোটের কারণে আইপিএলে খেলতে পারেননি আর্চার। কিন্তু এবছর মুম্বই দলের হয়ে দেখা যাচ্ছে আর্চারকে। কিন্তু পুরানো ছন্দে দেখা যাচ্ছে না তাকে। যদিও এবছর কিছুটা চোটের সমস্যা রয়েছে আর্চারের। যেকারণে তার পারফরমেন্সের উপর উঠেছে প্রভাব। এবছর মুম্বই দলের হয়ে তিনি খেলেছেন মাত্র ৪ টি ম্যাচ। ১০.৩৮ ইকোনোমিতে তিনি মাত্র ২ টি উইকেট নিয়েছেন এবছর। তিনি মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দলের এক নম্বর বলার কিন্তু এবছর প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানরা তাকেই টার্গেট বানাচ্ছে। এমনকি পাঞ্জাব ও মুম্বই ম্যাচে লিয়াম লিভিংস্টোন (Liam Livingstone) ছক্কার হ্যাট্রিক করেন জফরার বিরুদ্ধে।