নয়া যুগের সূচনা হয়েছে টিম ইন্ডিয়াতে (Team India)। রাহুল দ্রাবিড় (Rahul Dravid) সরে দাঁড়ানোর পর নতুন কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন গৌতম গম্ভীর (Gautam Gambhir)। তাঁর প্রশিক্ষণে ভারত ইতিমধ্যে খেলে ফেলেছে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টি-২০ ও ওডিআই সিরিজ। অম্লমধুর ফলাফল জুটেছে। কুড়ি-বিশের খেলায় প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করতে সক্ষম হলেও একদিনের ক্রিকেটে জুটেছে ০-২ হার। ২৮ বছর পর লঙ্কানদের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক ওডিআই সিরিজ হারতে হয়েছে দল’কে।
আপাতত বিশ্রামে রয়েছেন ক্রিকেটাররা। কিন্তু সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকেই ঠাসা ক্রীড়াসূচি অপেক্ষা করে রয়েছে তারকাদের সামনে। প্রথমে বাংলাদেশ, তারপর নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে রয়েছে হোম সিরিজ। এছাড়াও থাকছে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে চার ম্যাচের টি-২০ সিরিজ। নভেম্বরের শেষ থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ অবধি থাকছে অস্ট্রেলিয়া সিরিজ। ওয়ার্কলোড ম্যানেজ করার জন্য রোটেশন নীতি নিতেই হবে ভারতকে। কিছু ম্যাচে বাদ দেওয়া হতে পারে শুভমান গিল’কে (Shubman Gill)।
Read More: রাহানে-পূজারার স্বপ্ন পূরণ, বাংলাদেশ শিবিরে ফের গায়ে চাপাবেন টিম ইন্ডিয়া জার্সি !!
বাইরে রাখা হতে পারে শুভমান গিল’কে-
২০১৯ সালে টিম ইন্ডিয়ার (Team India) হয়ে প্রথম মাঠে নেমেছিলেন শুভমান গিল (Shubman Gill)। পাঞ্জাবের তরুণ ব্যাট হাতে কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে আপাতত ‘মেন ইন ব্লু’র অন্যতম ভরসাযোগ্য মুখ। তিন ফর্ম্যাটেই তাঁকেই ভবিষ্যতের তারকা বলে চিহ্নিত করছেন বিসিসিআই কর্মকর্তারা। ইতিমধ্যেই টি-২০ ও ওডিআই দলের স্থায়ী সহ-অধিনায়ক হিসেবেও বেছে নেওয়া হয়েছে তাঁকে। টেস্টেও আগামীতে তাঁকেই হয়ত বড় দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। শুভমান (Shubman Gill) দলের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা মুখ্য নির্বাচক অজিত আগরকারের (Ajit Agarkar) সাম্প্রতিক মন্তব্যগুলি থেকেই পরিষ্কার। তিনি জানিয়েছেন, “রোহিতের থেকে নেতৃত্বের খুঁটিনাটি যাতে শিখে নিতে পারে শুভমান, তাই ওকে সহ-অধিনায়ক পদ দেওয়া হয়েছে। নিশ্চয়তা দেওয়া যাচ্ছে না এখনি, কিন্তু ভবিষ্যতের অধিনায়ক হিসেবে ও আমাদের ভাবনায় রয়েছে।”
বছরের গোড়া থেকে আফগানিস্তান, ইংল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে, শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে একটানা ক্রিকেট খেলে চলেছেন শুভমান গিল। খেলেছেন দুই মাস ব্যপী আইপিএল’ও। সেপ্টেম্বরের গোড়ায় আবার অংশ নিতে চলেছেন দলীপ ট্রফিতে (Duleep Trophy)। একটানা ক্রিকেটের ফলে ক্লান্তি বা চোট-আঘাতে যাতে না ভোগেন পাঞ্জাবের তরুণ, তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দুই টেস্টের সিরিজ থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হতে পারে। টাইগার্সদের বিরুদ্ধে ১৩টি টেস্টের মধ্যে ১১টিতেই জিতেছে টিম ইন্ডিয়া (Team India)। ২টি ড্র হয়েছে। একটিও জিততে পারে নি বাংলাদেশ। ধারে-ভারে অনেক পিছনে থাকা প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে শুভমানকে (Shubman Gill) বাইরে রাখলেও বড় সমস্যার সম্মুখীন ভারত হবে না বলেই ধারণা বিশেষজ্ঞদের। বরং নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তরতাজা শুভমান হয়ে উঠতে পারেন দলের সম্পদ।
দলে ফিরতে পারেন পৃথ্বী শ-
শুভমান গিল (Shubman Gill) ছিটকে যাওয়ার পর তাঁর শূন্যস্থান পূরণ করতে ফেরানো হতে পারে পৃথ্বী শ’কে (Prithvi Shaw)। ২০১৮ সালে অনুর্দ্ধ-১৯ দল বিশ্বকাপ জিতেছিলো। সেই দলের সহ-অধিনায়ক ছিলেন শুভমান, আর অধিনায়ক ছিলেন পৃথ্বী। দু’জনের মধ্যে প্রথম আন্তর্জাতিক আঙিনায় পা রেখেছিলেন পৃথ্বী’ই। ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ভারতের (Team India) জার্সিতে অভিষেক হয় তাঁর। টেস্ট কেরিয়ারের শুরুটাই করেছিলেন শতরান করে। কিন্তু এরপর প্রত্যাশামত পারফর্ম্যান্স আর করতে পারেন নি তিনি। কখনও চোট-আঘাত বা কখনও অন্য কোনো বিতর্ক তাড়া করে বেড়িয়েছেন তাঁকে। ২০২০ সালে টেস্ট দল থেকে বাদ পড়েন। এরপর কয়েকটি ওডিআই খেলেছেন। কিন্তু ২০২১-এর শ্রীলঙ্কা সফরের পর বাদ পড়েন পঞ্চাশ ওভারের ফর্ম্যাট থেকেও। ঐ সফরেই একমাত্র টি-২০ ম্যাচে সুযোগ পেয়েছিলেন, তারপর আর আসে নি ডাক।
প্রায় তিন বছর ভারতের হয়ে মাঠে নামেন নি পৃথ্বী শ (Prithvi Shaw)। ২০২৩-এর গোড়ায় নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে স্কোয়াডে থাকলেও প্রথম এগারোয় তাঁকে রাখেন নি কোচ দ্রাবিড়। প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্যে ঘরোয়া ক্রিকেটে ঘাম ঝরিয়েছেন তিনি। মুম্বইয়ের হয়ে রঞ্জি ট্রফিতে অসমের বিরুদ্ধে করেছেন চোখধাঁধানো ৩৭৯। কেবল ভারতের ডোমেস্টিক সার্কিটে নয়, ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেটের আঙিনাতেও রান পেয়েছেন তিনি। খেলেছেন রয়্যাল লন্ডন ওয়ান ডে কাপ। নর্দাম্পটনশায়ারের হয়ে গত মরসুমে দ্বিশতক ও শতরান করেছিলেন। এবারও বেশ ধারাবাহিক তিনি। মিডলসেক্সের বিরুদ্ধে ৭৬, ডারহামের বিরুদ্ধে ৯৭, ওরচেস্টারের বিরুদ্ধে করেছেন ৭২। ধারাবাহিক পারফর্ম্যান্সের পুরষ্কার পেতে পারেন তিনি। বাংলাদেশ সিরিজে সুযোগ পেতে পারেন তরুণ তুর্কি।