Asia Cup 2025; নিয়মরক্ষার ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কা দলের অধিনায়ক চরিত আশালঙ্কা। প্রথমে ব্যাটিং করে ভারত ৫ উইকেটে ২০২ রান বানায়, জবাবে শ্রীলঙ্কাও ৫ উইকেটে ২০২ রান বানাতে সক্ষম হয়েছিল। এরপর ম্যাচটি সুপার ওভারে পৌঁছায় যেখানে ভারতীয় দল খুব সহজেই শ্রীলঙ্কাকে পরাস্ত করেছে।
শুরুতেই উইকেট হারায় ভারত
টসে হেরে প্রথমে ব্যাটিং করতে এসে দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল টিম ইন্ডিয়ার সহ অধিনায়ক শুভমান গিল। ৩ বলে ৪ রান বানিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। দ্রুত উইকেট হারানোর পরেও থেমে থাকেননি অভিষেক শর্মা। গত দুই ম্যাচে তিনি যেভাবে ব্যাটিং করেছেন সেই ছন্দই বজায় রেখেছিলেন তিনি। পাওয়ার প্লের মধ্যেই তিনি এই টুর্নামেন্টের তৃতীয় অর্ধশতরান হাঁকিয়ে ফেললেন। পাওয়ার প্লের মধ্যেই ভারতীয় দল ১ উইকেট হারিয়ে ৭১ রান বানিয়ে ফেলে।
Read More: Asia Cup 2025 IND vs PAK Final: আতসকাঁচের নীচে সূর্যের ফর্ম, শিবমকে নিয়েও রয়েছে চিন্তা, ফাইনালের একাদশে চমক টিম ইন্ডিয়ার !!
অনবদ্য ব্যাটিং করেন অভিষেক

পাওয়ার প্লে শেষ হতেই বোলিং করতে আসেন শ্রীলঙ্কার স্পিন উইজার্ড ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। একদিকে অভিষেক অনবদ্য ছন্দ দেখাচ্ছিলেন তো সূর্যকুমার যাদবকে বেশ সংঘর্ষ করতে দেখা যাচ্ছিল। সূর্যকুমার যাদবকে চাপে রেখেছিলেন ওয়ানিন্দু। ওভারের পঞ্চম বলে উইকেট হারিয়ে ফেলেন স্কাই। ১৩ বলে ১২ রান বানিয়েছিলেন এবং এলবিডব্লিউ হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি।
আবার ব্যার্থ সূর্যকুমার

সূর্য আউট হলেও থেমে থাকেননি অভিষেক। ৩১ বলে ৮টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৬১ রান বানান তিনি। অভিষেককে আটকাতে বোলিংয়ে আসেন চরিত আশালঙ্কা। উড়িয়া মারার প্রচেষ্টায় আউট হয়ে যান অভিষেক যদিও বাকি দিনের মতো অভিষেক আউট হতে ভেঙে পড়েনি ভারতীয় ব্যাটিং ইনিংস অভিষেক আউট হতে ব্যাটিং করতে আসেন সঞ্জু স্যামসন। নবম ওভার এই তিন উইকেট হারিয়ে ফেলে ভারত ৯২ রানের মাথায়।
মধ্য ওভারের দায়িত্ব সামলায় তিলক ও স্যামসন

স্যামসন ও তিলক ভার্মার জুটিতে আবার ছন্দে ফেরে ভারত। দুজনের মধ্যে ৪১ বলে ৬৬ রানের পার্টনারশিপ গড়ে উঠেছিল। ব্যাট হাতে ২৩ বলে একটি চার ও তিনটি ছক্কায় ৩৯ রান বানান সঞ্জু স্যামসন। মধ্যে ওভারে গত কয়েক ম্যাচে ভারতীয় দল যেভাবে সমস্যায় পড়েছিল তা শেষমেষ মেটাতে সক্ষম হলো ভারতীয় খেলোয়াড়রা।
২০২ রান বানাতে সক্ষম হয় ভারত
সঞ্জু আগ্রাসী ব্যাটিং করতে গিয়ে উইকেট হারিয়ে ফেলেন ১৬তম ওভারে। এরপর ব্যাটিংয়ে আসেন হার্দিক পান্ডিয়া। তবে, ৩ বলে ২ রান বানিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন পান্ডিয়া। ১৬.১ ওভারে ভারতীয় দল ৫ উইকেটে ১৬২ রান বানাতে সক্ষম হয়েছিল। ষষ্ঠ উইকেটে ২৩ বলে ৪০ রানের জুটি গরেন তিলক ভার্মা ও অক্ষর প্যাটেল। শেষমেষ তিলক ৩৪ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৯ রানের ইনিংস খেলেন এবং অক্ষরের ১৫ বলে ২১ রানের দৌলতে ভারতীয় দল নির্ধারিত ২০ ওভারে ২০২ রান বানাতে সক্ষম হয়েছিল।
পাওয়ার প্লেতে ঝড় তোলেন নিশঙ্কা-প্যারেরা

রান তাড়া করতে এসে শুরুটা ভালো করেনি শ্রীলঙ্কা। প্রথম ওভারেই উইকেট হারিয়ে ফেলেন কুশল মেন্ডিস। তবে, দলের হাল ধরেন পথুম নিশঙ্কা এবং কুশল মেন্ডিস। শ্রীলঙ্কার টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান ভারতীয় বোলিং আক্রমণকে একবারে তছনছ করে দিয়েছিলেন। পাওয়ার প্লেতে ভারতকে সমান টক্কর দিয়ে ১ উইকেটে ৭২ রান বানাতে সক্ষম হয়েছিল।
খেলায় ফেরে ভারত
দুই ব্যাটসম্যানকে আউট করতে প্রায় নাজেহাল হয়ে গিয়েছিল ভারতীয় বোলিং আক্রমন। পাওয়ার প্লেতে যেভাবে আগ্রাসন দেখিয়েছিলেন দুজনে ঠিক সেভাবেই ব্যাটিং চালিয়ে গিয়েছেন পাওয়ার প্লের পরেও। প্রথম ওভারে উইকেট হারানোর পর নিশঙ্কা ও কুশল প্যারেরার মধ্যে ৭০ বলে ১২৭ রানের পার্টনারশিপ গড়ে উঠেছিল। বরুণ চক্রবর্তী এই বেড়ে ওঠা পার্টনারশিপ আটকে দিয়েছিলেন।
দুরন্ত বোলিং করেন অর্ষদীপ

শ্রীলঙ্কার হয়ে কেবলমাত্র দুজন ব্যাটসম্যানকে রান বানাতে দেখা গিয়েছিল। প্যারেরা আউট হওয়ার পর দ্রুত ২ উইকেট হারিয়ে ফেলে শ্রীলঙ্কা। ১৬৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে শ্রীলংকা। এই পরিস্থিতিতে দাসুন সানাকা ও নিশঙ্কার উপরেই ছিল জেতানোর গুরুদায়িত্ব। একসময়ে শ্রীলঙ্কা পুরোপুরি জয়ের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে ছিল। তবে, ম্যাচ ঘুরে যায় অর্ষদীপ সিংয়ের করা ১৯তম ওভারে। ১৯ তম ওভারে ১১ রান দেন অর্ষদীপ।
টাই রূপে সমাপ্ত হলো খেলা
শেষ ওভারে শ্রীলংকার জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১১ রানের। হার্ষিত রানার কাঁধে ছিল দলকে জেতানোর দায়িত্ব। অনবদ্য বোলিং করেন রানা। প্রথম বলেই সেট নিশঙ্কাকে প্যাভিলিয়নে ফেরান। দুরন্ত প্রচেষ্টা চালালেও উইনিং রান বানাতে পারেননি শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানরা। ২০ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কাও ৫ উইকেটে ২০২ রান বানায়। সুপার ওভারে গড়ায় খেলা।
সুপার ওভারে জয় পেল ভারত
যেহেতু শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ব্যাটিং করেছিল তাই তাদেরকে প্রথমে ব্যাটিং করতে আসতে হয়েছিল। শ্রীলঙ্কার পক্ষ থেকে ব্যাটিংয়ে আসেন কুশল প্যারেরা ও দাসুন সানাকা। ভারতের হয়ে বোলিং করেন অর্ষদীপ সিং। অর্ষদীপকে কভার অঞ্চলে খেলতে গিয়ে প্রথম বলে উইকেট হারান কুশল। এরপর, ওভারের চতুর্থ বলে আউট হয়ে কান সানাকা। শ্রীলঙ্কা কেবলমাত্র ২ রান বানাতে সক্ষম হয়েছিল সুপার ওভারে। রান তাড়া করতে আসেন সূর্যকুমার যাদব এবং শুভমান গিল। প্রথম বলেই চার হাঁকিয়ে দলের হয়ে জয় সুনিশ্চিত করেন ক্যাপ্টেন স্কাই। আজকের জয়ের সাথে সাথে ভারত এই টুর্নামেন্টে এখনও অপরাজিত থাকলো।