IND vs SA: ডারবানে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম টি-২০ ম্যাচে জয় পেয়েছিলো ভারত (IND vs SA)। এগিয়ে গিয়েছিলো ১-০ ফলে। কিন্তু কেবের্হাতে জিতে প্রত্যাঘাত করে প্রোটিয়ারা। ফেরায় সমতা। আজ সেঞ্চুরিয়নের বাইশ গজে ‘অ্যাডভান্টেজ’ আদায় করে নেওয়ার লড়াই ছিলো দুই শিবিরের কাছেই। ধুন্ধুমার যুদ্ধের পর শেষ হাসি টিম ইন্ডিয়ারই। টসে জিতে প্রথম বোলিং-এর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এইডেন মার্করাম। শুরুতেই উইকেট হারানো ভারত ঘুরে দাঁড়ায় তিলক বর্মা ও অভিষেক শর্মা’র ব্যাটে ভর দিয়ে। দুই তরুণ তুর্কির সৌজন্যে স্কোর পৌঁছে যায় ২১৯ রানে। জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকা শুরুটা ভালো করলেও নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারিয়ে একটা সময় পিছিয়ে পড়েছিলো অনেকটাই। ইয়ানসেনের অবিশ্বাস্য ব্যাটিং লড়াইতে ফিরিয়েছিলো তাদের। কিন্তু হলো না শেষরক্ষা। ১১ রানের ব্যবধানে বাজিমাত ভারতেরই।
Read More: IND vs SA 3rd T20i: “ত্রাসের নাম তিলক…” তরুণ তুর্কির শতরানে রানের পাহাড় ভারতের, অভিনন্দন নেটিজেনদের !!
ধুন্ধুমার শতক তিলকের, ফর্মে অভিষেক’ও-
কেবের্হার মতই আজও শুরুটা ভালো হয় নি টিম ইন্ডিয়া। প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই মার্কো ইয়ানসেনের ডেলিভারি সামলাতে না পেরে বোল্ড হন সঞ্জু স্যামসন। প্রথম উইকেট যখন হারায় ভারত, তখন স্কোরবোর্ডে শূন্য। জোড়া শতরানের পর জোড়া শূন্য সঞ্জু’র ঝুলিতে। আজ তিন নম্বরে নেমেছিলেন তিলক বর্মা। অভিষেক শর্মা’কে সাথে নিয়ে প্রত্যাঘাতের লড়াইটা শুরু করেন তিনিই। দুই বাম হাতি মিলে শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করান ‘মেন ইন ব্লু’কে। জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে কেরিয়ারের দ্বিতীয় টি-২০ ম্যাচে শতরান করেছিলেন অভিষেক। এরপর টানা সাতটি আন্তর্জাতিক টি-২০তে ২০’র নীচে আটকে গিয়েছিলো তাঁর রান সংখ্যা। দক্ষিণ আফ্রিকাতেও প্রথম দুটি খেলায় দশের গণ্ডী পেরোতে পারেন নি তিনি। তবে আজ খোলস ছেড়ে বেরোলেন তিনি। বিস্ফোরক ইনিংস এলো তাঁর ব্যাট থেকে।
কেশব মহারাজের বলে স্টাম্পড হওয়ার আগে ২৫ বলে ৫০ রান করে যান অভিষেক। মারেন ৩টি চার ও ৫টি ছক্কা। ভাঙে ১০৭ রানের জুটি। সঙ্গীকে খুইয়েও বেলাইন হন নি তিলক বর্মা। ডারবান ও কেবের্হাতে শুরুটা ভালো করলেও ইনিংস দীর্ঘায়িত করতে পারেন নি তিনি। আজ সেই বাধাটুকু কাটিয়ে উঠলেন হায়দ্রাবাদের তরুণ। চার-ছক্কার ফুলঝুড়ি তাঁর ব্যাটে। অনবদ্য ইনিংস খেলে চলতি সিরিজে দ্বিতীয় ভারতীয় হিসেবে শতরানের মাইলস্টোন স্পর্শ করলেন তিনি। ৫৬ বলে ৮টি চার ও ৭টি ছক্কার সাহায্যে ১০৭ করে অপরাজিত থাকেন তিলক। সূর্যকুমার, হার্দিক পান্ডিয়া ও রিঙ্কু সিং-এর ব্যাটে রান আসে নি আজ। ফিনিশার হিসেবে নজর কাড়লেন রমনদীপ সিং। অভিষেক ম্যাচে করেন ৬ বলে ১৫। নির্ধারিত ২০ ওভারে ভারত তোলে ৬ উইকেটের বিনিময়ে ২১৯।
জয় ছিনিয়ে নিলো টিম ইন্ডিয়া-
২২০ রানের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমেছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু ইনিংসের শুরুতেই বিপত্তি। শয়ে শয়ে পতঙ্গের কারণে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন ক্রিকেটাররা। মিনিট দশকের বন্ধ ছিলো খেলা। তৃতীয় ওভারে প্রথম সাফল্য দেশকে এনে দেন আর্শদীপ সিং। ফেরান রায়ান রিকলটন’কে। পাওয়ার প্লে’তেই আজ বরুণ চক্রবর্তীকে বোলিং-এ নিয়ে এসেছিলেন অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। কাজে লেগে যায় সেই ফাটকা। ষষ্ঠ ওভারের তৃতীয় বলে দ্বিতীয় ওপেনার রিজা হেনড্রিকসকে আউট করেন তিনি। কেবের্হাতে নায়ক হয়েছিলেন ট্রিস্টান স্টাবস। আজ ১৮ রানের বেশী এগোতে পারেন নি তিনি। আইপিএল টিম মেট অক্ষর প্যাটেলের বলে লেগ বিফোর হন তিনি। অধিনায়ক এইডেন মার্করাম’ও আউট হন ২৯ করে। ব্যাট হাতে একদমই সাবলীল ছিলেন না ডেভিড মিলার। হার্দিকের বলে আউট হন অক্ষরের হাতে ক্যাচ দিয়ে।
রুদ্ররূপ ধরার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন হেনরিখ ক্লাসেন। গত দুই ম্যাচেই বরুণ চক্রবর্তীর শিকার হয়েছিলেন তিনি। আজ বদলা নিলেন প্রোটিয়া উইকেটরক্ষক। টানা তিনটি ছক্কা হাঁকান ভারতীয় স্পিনারকে। মারেন একটি চার’ও। ক্লাসেন ঝড়ের মুখে পড়ে ৪ ওভারে ৫৪ খরচ করে বসেন তিনি। যদিও নিয়েছেন জোড়া উইকেট। আর্শদীপের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ক্লাসেন সাজঘরে ফেরেন ৪১ করে। দক্ষিণ আফ্রিকার আশা জিইয়ে রেখেছিলেন মার্কো ইয়ানসেন। বাম হাতি ব্যাটার আজ সেঞ্চুরিয়নের বাইশগজে রীতিমত দক্ষযজ্ঞ চালালেন। ১৯তম ওভারে হার্দিকের বলে ২৭ রান সংগ্রহ করেন তিনি। আর্শদীপের নিখুঁত ডেলিভারিতে লেগ বিফোর হন ইয়ানসেন। ১৭ বলে তাঁর সংগ্রহ ৫৪। শেষ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়োজন ছিলো ২৫,। ১৩’র বেশী তুলতে পারে নি তারা। থামে ২০৮-এ।