IND vs SA: নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছিলো ভারতীয় দল। ১২ বছর পর ঘরের মাঠে হাতছাড়া হয়েছিলো টেস্ট সিরিজ। একইসাথে ২৪ পর জুটেছিলো হোমগ্রাউন্ডে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার লজ্জা। খাদের কিনারে পৌঁছে যাওয়া দলের জন্য একটা জয় অত্যন্ত জরুরী ছিলো। রোহিত-কোহলিরা যা করতে পারেন নি, আজ সূর্যকুমার যাদব, হার্দিক পান্ডিয়ারা সেটাই করে দেখালেন কিংসমিডে। যশস্বী, শুভমান, বুমরাহ, সিরাজদের মত তারকারা নেই স্কোয়াডে। সেই শূন্যতাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে প্রোটিয়াদের ঘরের মাঠেই সিংহবিক্রম আজ দেখালো টিম ইন্ডিয়া (IND vs SA)। টসে জিতে প্রথমে প্রতিপক্ষকে ব্যাটিং-এর আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন এইডেন মার্করাম। দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়কের এই চাল’ই ফিরলো ব্যুমেরাং হয়ে। ব্যাট হাতে ঝড় তুলেছিলেন সঞ্জু স্যামসন (Sanju Samson)। বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বিষ্ণোই-বরুণ জুটির ঘূর্ণির জালে আটকা পড়লো স্বাগতিক দেশ।
Read More: IND vs SA 1st T20i: মাঝপথে থমকে গেলো জাতীয় সঙ্গীত, ডারবানে বেনজির ঘটনার সম্মুখীন টিম ইন্ডিয়া !!
শতরান সঞ্জুর, রানের পাহাড়ে ভারত-
কথায় বলে মর্ণিং শোজ দ্য ডে। অর্থাৎ কিনা দিনের শুরুটা দেখলে বাকিটার আন্দাজ পাওয়া যায়। ভারতের ক্ষেত্রে আজ অবশ্য পুরো উলটো ছবি দেখা গেলো। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে (IND vs SA) শুরুটা মোটেই ভালো হয় নি তাদের। ইনিংসের গোড়াতেই জেরাল্ড ক্যুৎসিয়ের বাউন্স সামলাতে না পেরে ফিরে গিয়েছিলেন অভিষেক শর্মা (Abhishek Sharma)। বাংলাদেশের পর এবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেও ব্যর্থ হলেন তিনি। কিন্তু এরপর ঝড় তোলেন সঞ্জু স্যামসন (Sanju Samson)। আগুনে ফর্মে রয়েছেন তিনি। হায়দ্রাবাদে টাইগারবাহিনীর বিরুদ্ধে অনবদ্য শতরান করেছিলেন। সেদিন যেখানে থেমেছিলেন, আজ ঠিক সেখান থেকেই শুরু করেন তিনি। ক্যুৎসিয়ে (Gerald Coetzee), ক্রুগার হোন বা কেশব মহারাজ-দক্ষিণ আফ্রিকার কোনো বোলারকেই রেয়াৎ করেন নি উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। সূর্যকুমার আউট হওয়ার পরেও রানের গতি কমান নি তিনি।
চার-ছক্কার ফোয়ারা আজ দেখা গেলো সঞ্জু স্যামসনের (Sanju Samson) ব্যাটে। ১০ বার বল পাঠালেন গ্যালারিতে। ৪৭ বলে তিনি পেরোন শতকের মাইলস্টোন। রোহিত, সূর্যকুমার ও কে এল রাহুলের (KL Rahul) পর চতুর্থ ভারতীয় হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-২০তে একাধিক শতরানের নজির গড়লেন তিনি। সাথে তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে টানা দুই ম্যাচে দুটি শতরান করলেন সঞ্জু। মিডল অর্ডারে ৩৩ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলেন তিলক বর্মা’ও (Tilak Varma)। তবে আজ সমর্থকদের চিন্তায় রাখবে লোয়ার মিডল অর্ডারের পারফর্ম্যান্স। ১০৭ রান করে সঞ্জু ফেরার পর ধস নামে ভারতীয় ইনিংসে। হার্দিক পান্ডিয়া (২), রিঙ্কু সিং (১১), অক্ষর প্যাটেল (৭)-রান পান নি কেউই। একটা সময় মনে হচ্ছিলো ২৩০ বা ২৪০-এ পৌঁছে যাবে টিম ইন্ডিয়া। কিন্তু রানের গতি কমে আসায় শেষমেশ ৮ উইকেটে ২০২ তুলতে পারে তারা।
পেসের স্বর্গরাজ্যে জয় এনে দিলো স্পিন-
ডারবান বললেই ক্রিকেটজনতার মানসপটে ভেসে ওঠে পেস সমৃদ্ধ সবুজ উইকেট। কিন্তু আজকের বাইশ গজের চরিত্র যেন সম্পূর্ণ আলাদা। পেসাররা নয়, বরং বল হাতে ছড়ি ঘোরালেন স্পিনাররাই। দুই বিশেষজ্ঞ ফাস্ট বোলারের সাথে তিন স্পিনার খেলানোর গেমপ্ল্যান ফায়দা এনে দিলো ‘মেন ইন ব্লু’কে। প্রথম সাফল্যটা এনে দিয়েছিলেন আর্শদীপ। এইডেন মার্করামকে আউট করেন তিনি। তিনে নামা ট্রিস্টান স্টাবসকে ফেরান আবেশ খান। এরপর থেকেই ম্যাচের রাশ হাতে তুলে নেন বরুণ চক্রবর্তী (Varun Chakravarthy) ও রবি বিষ্ণোই। রায়ান রিকলটন, হেনরিখ ক্লাসেন, ডেভিড মিলারের মত ধ্বংসাত্মক ব্যাটারদের বেশীদূর এগোতে দেন নি বরুণ। ক্রুগার, ইয়ানসেন, সিমিলেনদের আউট করেন বিষ্ণোই। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে এসে কেশব মহারাজকে আউট করে প্রোটিয়া ইনিংসে ইতি টানেন আবেশ। ১৪১ রানেই থামতে হয় তাদের। আজ ৬১ রানে জিতে সিরিজে ১-০ এগিয়ে গেলো ভারত।