aakash-chopra-on-asia-cup-2023

দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর অবশেষে সবুজ সংকেত মিলেছে সিনিয়র এশিয়া কাপ (Asia Cup 2023) নিয়ে। পাকিস্তান যাওয়া নিয়ে ভারতের আপত্তিতে একটা সময় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিলো এই টুর্নামেন্টের ভাগ্য। পরে পিসিবি প্রস্তাবিত হাইব্রিড মডেল মেনে এশিয়া কাপ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (ACC)। আয়োজক হিসেবে পাকিস্তানের সাথে যুক্ত হয়েছে শ্রীলঙ্কার নাম। চারটি ম্যাচ হবে পাকিস্তানে, নক-আউট পর্ব-সহ বাকি নয় ম্যাচ আয়োজন করবে শ্রীলঙ্কা। অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে এক ট্যুইটবার্তায় এশিয়া কাপের সূচীও প্রকাশ করেছেন এসিসি প্রেসিডেন্ট জয় শাহ (Jay Shah)। ৩০ অগস্ট থেকে শুরু হচ্ছে টুর্নামেন্ট, চলবে ১৭ সেপ্টেম্বর অবধি।

সিনিয়রদের টুর্নামেন্ট শুরু হতে এখনও মাসখানেক দেরী থাকলেও শ্রীলঙ্কায় এশিয়া কাপের (Asia Cup 2023) উত্তেজনা কিন্তু টের পাওয়া যাচ্ছে এখনই। এমার্জিং টিমস এশিয়া কাপের মঞ্চে ছয় দেশের ‘এ’ দল মুখোমুখি হয়েছে একে-অপরের। প্রথমে আয়োজিত হয়েছে গ্রুপ পর্ব। এরপর সমাপ্ত হয়েছে দুই সেমিফাইনালও। প্রথম সেমিফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে খেতাবী যুদ্ধে জায়গা করে নিয়েছে পাকিস্তান।

আর দ্বিতীয় সেমিফাইনালে দুরন্ত কামব্যাক করে প্রায় নিশ্চিত হারের মুখ থেকে বাংলাদেশ-এ দলের বিরুদ্ধে অনবদ্য জয় ছিনিয়ে নিয়ে ভারত-এ দল। টুর্নামেন্টে একমাত্র দল হিসেবে যশ ধূলের (Yash Dhull) নেতৃত্বাধীন ভারত-এ একটিও ম্যাচ না হেরে পৌঁছেছে ফাইনালে। রবিবার খেতবী যুদ্ধে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের হারিয়ে সেরার শিরোপা জেতাই লক্ষ্য ভারতীয় তরুণদের।

Read More: Asia Cup 2023: বাবর আজম বা মোহাম্মদ রিজওয়ান নয়, এই তরুণ তুর্কি দেবেন পাকিস্তান দলকে নেতৃত্ব !!

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে রুদ্ধশ্বাস জয় ভারতের-

IND A vs BAN A | Emerging Asia Cup 2023 | Image: Twitter
IND A vs BAN A | Image: Twitter

এশিয়া কাপের (Emerging Teams’ Asia Cup) গ্রুপ পর্বের ম্যাচগুলিতে ভারত-এ দলের জয়ে প্রধান ভূমিকা রেখেছে ব্যাটিং। কখনও শতরান করেছেন অধিনায়ক যশ ধূল। কখনও তিন অঙ্কের রান এসেছে সাই সুদর্শনের (Sai Sudarshan) ব্যাটে। অভিষেক শর্মা, নিকিন জোসের (Nikin Jose) মত তরুণ প্রতিভারাও বেশ ভালো পারফর্ম করেছেন ব্যাট হাতে। কিন্তু সেমিফাইনালে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারত-এ দলের জয়ে প্রধান ভূমিকা নিলো বোলিং। নিশান্ত সিন্ধু (Nishant Sindhu) এবং মানব সুতার-টিম ইন্ডিয়ার এই জোড়া ফলা অবিশ্বাস্য এক জয় উপহার দিলো দলকে।

টসে জিতে প্রথমে বোলিং বেছে নিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাইফ হাসান (Saif Hassan)। সাই সুদর্শন ২১ এবং অভিষেক শর্মা (Abhishek Sharma) ৩৪ রান করে আউট হন। নিকিন জোস (Nikin Jose) ফিরে যান ১৭ রান করে। ভারত-এ ইনিংসকে টেনে নিয়ে গেলেন অধিনায়ক যশ ধূল (Yash Shull)। আজ লড়াকু ৬৬ রান করেন তিনি। মিডল অর্ডারের ব্যর্থতার ফলে ২১১-র বেশী এগোয় নি ইন্ডিয়া-এ দলের ইনিংস।২১২ রানের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমে ঝড়ের গতিতে একটা সময় জয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলো বাংলাদেশ-এ। দুই ওপেনার মহম্মদ নাইম এবং তানজিদ হাসানকে রোখার উপায় খুঁজে পাচ্ছিলেন না ভারতীয় বোলাররা। ১৩তম ওভারের চতুর্থ বলে নাইম যখন আউট হন মানব সুতারের (Manav Suthar) বলে, বাংলাদেশের স্কোর তখন ৭০।

তখনও কেউ ভাবতে পারেন নি ভারত এই ম্যাচ জিতে মাঠ ছাড়তে পারে। কিন্তু তারুণ্যের বলে বলীয়ান ইন্ডিয়া-এ আশা ছাড়ে নি এক মুহূর্তের জন্যও। সাদা বল হাতে এর পরেই প্রতিপক্ষের ত্রাস হয়ে ওঠেন নিশান্ত সিন্ধু (Nishant Sindhu)। কিছুদিন আগে দলীপ ট্রফিতে শতরান করেছিলেন তিনি। চেন্নাই সুপার কিংসের এই তরুণ প্রতিভা আজ বল হাতে বাংলাদেশ-এ দলের পাঁচ উইকেট তুলে নেন। তিন উইকেট পান মানব সুতার। ৭০ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারানো বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় ১৬৪ রানেই। হারের মুখ থেকে ৫১ রানের ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে আনে ভারত-এ।

দশ বছর পর ফাইনালে ভারত-পাকিস্তান-

Suryakumar Yadav | Emerging Teams' Asia Cup | Image: Twitter
Suryakumar Yadav with Emerging Teams’ Asia Cup Trophy | Image: Twitter

আগামী রবিবার এমার্জিং টিমস এশিয়া কাপ ফাইনালে ভারত-পাকিস্তান এল ক্লাসিকো দেখে অনেকেরই মনে পড়ে যাচ্ছে দশ বছর আগের কথা। সেবারও খেতাবী লড়াইতে মুখোমুখি হয়েছিলো দুই প্রতিবেশী দেশই। দুই দলের হয়ে খেলতে দেখা গিয়েছিলো এমন অনেক নামকে যাঁরা পরবর্তীতে সিনিয়র আন্তর্জাতিক সার্কিটে মহাতারকা হয়ে উঠেছেন। ভারতের অধিনায়কত্বের ভার ছিলো ‘মিস্টার ৩৬০’ সূর্যকুমার যাদবের (Suryakumar Yadav) হাতে। এছাড়াও অক্ষর প্যাটেল, সন্দীপ শর্মা, বাবা অপরাজিথের মত ভারতীয় ক্রিকেটমহলের পরিচিত বহু নাম ছিলেন সেই দলে। ফাইনালে শেষ হাসি হেসেছিলো ভারতই। ৯৩* রান করে ফাইনালে ম্যাচের সেরা হন কে এল রাহুল (KL Rahul)। পাক শিবিরেও ছিলেন বাবর আজম (Babar Azam), মহম্মদ রিজওয়ান, বিলাওয়াল ভাট্টিরা।

দশ বছর আগের ফলাফলের পুনরাবৃত্তি করতে বধ্যপরিকর ভারতের তরুণরা। টিম ইন্ডিয়া এমার্জিং টিমস এশিয়া কাপে একদম আনকোরা এক দল পাঠিয়েছে। সিনিয়র জাতীয় দলের হয়ে খেলার বিন্দুমাত্র অভিজ্ঞতাও নেই যশ ধূল (Yash Dhull), সাই সুদর্শন (Sai Sudarshan), নিশান্ত সিন্ধু, রাজবর্ধন হাঙ্গারগেকরদের (Rajvardhan Hangargekar)। বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মত দলে অবশ্য ছবিটা উলটো। নামে ‘এ’ দল হলেও তারা জায়গা দিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বেশ খানিকটা সময় কাটিয়ে ফেলা বহু ক্রিকেটারকে।

সেমিফাইনালে সৌম্য সরকার (Soumya Sarkar), জাকির হাসান (Zakir Hasan), মেহদী হাসান (Mahedi Hasan), মাহমুদুল হাসান জয় সমৃদ্ধ বাংলাদেশকে হারানোর আগে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে সাই সুদর্শনের শতরানের সুবাদে পাকিস্তান-এ’কে হারিয়েছে ভারত-এ। সেই দলে শাহনওয়াজ দাহানি (Shahnawaz Dahani), মহম্মদ হারিস (Mohammad Haris), মহম্মদ ওয়াসিন জুনিয়রদের (Mohammad Wasim Jr.) মত পাক জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা থাকলেও বিশেষ সুবিধা করতে পারেন নি। আগামী রবিবারও তারুণ্যের স্পর্ধা দিয়েই পাকিস্তানের অভিজ্ঞতার বিরুদ্ধে দ্বিতীয়বার জয়ের সন্ধানে ভারত-এ।

Also Read: WI vs IND: সাত সমুদ্র পার মায়ের ভালোবাসা পেলেন বিরাট, সেঞ্চুরি করে সোনায় সোহাগা !!

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *