IND vs NZ: নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে পুণের মাঠে দ্বিতীয় টেস্টে তিন দিনের মধ্যেই হারের দোরগোড়ায় টিম ইন্ডিয়া (IND vs NZ)। ২০১২ সালে অ্যালিস্টার কুকের (Alastair Cook) ইংল্যান্ড দল ভারতে এসে ২-১ ফলে জিতেছিলো টেস্ট সিরিজ। এরপর ১২ বছর একটানা ঘরের মাঠে লাল বলের ফর্ম্যাটে কোনো সিরিজ হারে নি ‘মেন ইন ব্লু।’ সেই গৌরবের রেকর্ড এবার ভুলুন্ঠিত হওয়ার মুখে। চিন্নাস্বামীতে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে হারকে ‘অঘটন’ আখ্যা দিয়েছিলেন অনেকেই। আশা ছিলো যে দ্বিতীয় ম্যাচে চেনা ছন্দেই দেখা যাবে রোহিত-বুমরাহদের (Jasprit Bumrah)। কিন্তু লড়াইতে ফেরার বদলে অসহায় আত্মসমর্পণই করার পথে ভারতীয় দল। লাগাতার ব্যাটিং ব্যর্থতা ফের অন্ধকারে ডুবিয়েছে দল’কে। কঠিন পরিস্থিতিতে বিরাট কোহলির (Virat Kohli) থেকে ম্যাচ বাঁচানো ইনিংসের অপেক্ষায় ছিলেন সমর্থকেরা। কিন্তু পারলেন না তিনিও।
Read More: “সব কিছু ছেলেখেলা না…” দ্রুত রান নিতে গিয়ে উইকেট হারালেন পন্থ, সমাজ মাধ্যমে হলেন ট্রোলের শিকার !!
আম্পায়ারের ‘শিকার’ হলেন কোহলি-
আজ সকালে নিউজিল্যান্ডের ইনিংস থামে ২৫৫ রানে। ৪টি উইকেট নেন ওয়াশিংটন সুন্দর, ৩টি জাদেজা ও ২টি উইকেট জমা পড়ে রবিচন্দ্রণ অশ্বিনের ঝুলিতে। প্রথম ইনিংসে ১০৩ রানের লিড পাওয়া ‘ব্ল্যাক ক্যাপস’ বাহিনী চতুর্থ ইনিংসে টিম ইন্ডিয়াকে )(Team India) ৩৫৯ রানের লক্ষ্য বেঁধে দেয়। রান তাড়া করতে নামা ভারত শুরুতেই হারায় অধিনায়ক রোহিত শর্মা’র উইকেট। ১৬ বলে ৮ করে ফেরেন তিনি। এরপর শুভমান গিল আউট হন মধ্যাহ্নভোজের বিরতির কিছুক্ষণ পরেই। ২৩ করেন তিনি। ক্রিজে আসেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। সাদা বলের ক্রিকেটে বহুবার কঠিন পরিস্থিতি থেকে দলকে উদ্ধার করেছেন তিনি। দীর্ঘতম ফর্ম্যাটেও অস্ট্রেলিয়া বা দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে খেলেছেন বেশ কিছু লড়াকু ইনিংস। আজও চাপের মুখে তাঁর থেকে তেমনই এক ইনিংসের আশা ছিলো। চেষ্টাও করছিলেন তিনি। কিন্তু আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে থামতে হলো তাঁকে।
ভারতীয় ইনিংসের ৩০তম ওভারের শেষ বলটিতে কোহলিকে (Virat Kohli) ফিরিয়ে দেন বাম হাতি অফস্পিনার মিচেল স্যান্টনার। তাঁর ডেলিভারিটি পিচে পড়ার পর দ্রুত দিক বদলে ভেতরের দিকে ঢুকে এসেছিলো। ব্যাকফুটে গিয়ে ডেলিভারিটিকে সামলাতে গিয়েছিলেন ভারতীয় তারকা। কিন্তু তা ব্যাটের বলে আঘাত করে তাঁর প্যাডে। কিউই ক্রিকেটারদের আপিলে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার। মরিয়া বিরাট রিভিউ নিয়েছিলেন। কিন্তু বল ট্র্যাকিং জানায় যে লেগ স্টাম্প ছুঁয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিলো স্যান্টনারের (Mitchell Santner) ডেলিভারিটি। বাধ্য হয়েই মাঠ ছাড়তে হয় কোহলিকে। ১৭ রানেই থামে তাঁর প্রতিরোধ। আজকের ঘটনা ক্রিকেটজনতাকে মনে করাচ্ছে ২০১৯-এর বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল। সেদিনও নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধেই আম্পায়ারস কলের কারণে এলবিডব্লু হয়েছিলেন বিরাট। রান তাড়া করতে নেমে ধসে গিয়েছিলো ভারত। স্বপ্ন ভেঙেছিলো সমর্থকদের।
দেখুন বিরাটের আউটের মুহূর্ত-
King Kohli got owned by Santner again ,its time we should acknowledge him😭🥲 pic.twitter.com/MAfNKsQ87M
— Honest Kohli Fan❤️💚 (@49_all_out) October 26, 2024
তিন দিনেই হারতে পারে ভারত-
পুণের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে চতুর্থ ইনিংসে গড় স্কোর এতদিন ছিলো ১০৭। সেখানে ৩৫৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করা যে যথেষ্ট কঠিন তা ইনিংসের বিরতিতেই জানিয়ে দিয়েছিলেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। অসম্ভবকে সম্ভব করতে হলে দাঁতে দাঁতে চেপে লড়াই করতে হত টিম ইন্ডিয়াকে (Team India)। কিন্তু কিউইদের স্পিন আক্রমণ-বিশেষ করে মিচেল স্যান্টনারকে সামলাতে একেবারেই ব্যর্থ ভারতীয় ব্যাটিং। একমাত্র ইতিবাচক ভঙ্গিতে খেলতে দেখা গেলো যশস্বী জয়সওয়ালকে (Yashasvi Jaiswal)। তরুণ তুর্কি ৭৭ রান করে আউট হতেই হারের দিকে এক পা বাড়িয়ে দিয়েছিলো ‘মেন ইন ব্লু।’ এরপর ঋষভ পন্থের রান-আউট, কোহলি, সরফরাজের উইকেট কফিনে একটার পর একটা পেরেক পুঁতে দিয়ে গেলো যেন। প্রতিবেদন লেখার সময় ৭ উইকেটের বিনিময়ে ভারতের স্কোর ১৮৮। এখনও চাই ১৭১ রান। অতি বড় টিম ইন্ডিয়া সমর্থক’ও দেখছেন না জয়ের স্বপ্ন।