IND vs NZ: ১২ বছর পর ঘরের মাঠে বিপর্যয়ের সম্মুখীন ভারতীয় দল। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে (IND vs NZ) সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচেই হারতে হয়েছে তাদের। বেঙ্গালুরুতে বিভীষিকা হয়ে দাঁড়িয়েছিলো বৃষ্টিভেজা বাইশ গজে প্রথম ব্যাটিং-এর সিদ্ধান্ত। মাত্র ৪৬ রানে প্রথম ইনিংসে অল-আউট হয়ে যাওয়ার ধাক্কা আর সামলাতে পারে নি দল। হারতে হয়েছিলো ৮ উইকেটে। আর পুণেতে ভিলেন হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন মিচেল স্যান্টনার (Mitchell Santner)। দুই ইনিংস মিলিয়ে ১৩ উইকেট তুলে নিয়ে রোহিত-কোহলিদের সমতা ফেরানোর পথে একাই বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। ১১৩ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরে সিরিজ হাতছাড়া করেছে ‘মেন ইন ব্লু।’ কিউইদের বিরুদ্ধে বাকি আর মাত্র এক ম্যাচ। শুক্রবার থেকে মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে তা। সান্ত্বনার জয় পেতে মরিয়া ভারত। প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলতে নিজেদের পছন্দের বাইশ গজ চাইছে তারা।
Read More: IPL 2025: প্রথম প্লেয়ার হিসাবে মুম্বই দল থেকে বাদ ঈশান কিষান, রিটেনশন তালিকা প্রকাশ পেতেই চাঞ্চল্য !!
ঘূর্ণি পিচের ফাঁদে পাততে চায় ভারত-
সিরিজ (IND vs NZ) হাতছাড়া হয়েছে ইতিমধ্যেই। ওয়াংখেড়েতে তৃতীয় ম্যাচ জিতে এখন মান বাঁচানোর চেষ্টায় ভারতীয় দল। আসন্ন অস্ট্রেলিয়া সিরিজের আগে মনোবল বাড়ানোর জন্যও এই জয় অত্যন্ত জরুরী। অন্য কোনো দেশের মুখাপেক্ষী না থেকে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের (WTC) ফাইনালে জায়গা করে নিতে আগামী ছয়টি টেস্ট ম্যাচের মধ্যে অন্তত তিনটি জিততেই হবে ভারতকে। ওয়াংখেড়েতেই সেই ‘জার্নি’র শুরুটা করতে চায় দল। তাই লক্ষ্য কিউইদের বিরুদ্ধে ‘হোম অ্যাডভান্টেজ’কে পুরোপুরি কাজে লাগানো। সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সূত্রে খবর মিলেছে যে ওয়াংখেড়েতে বর্তমানে যে অবস্থায় রয়েছে বাইশ গজ, তা পছন্দ নয় ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের। তারা মাঠ কর্তৃপক্ষের কাছে র্যাঙ্ক টার্নারের জন্য আবেদন করেছে। ম্যাচের প্রথম দিন থেকেই যাতে বল টার্ন করে তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে পিচ কিউইরেটর’কে।
এখনও পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে (IND vs NZ) তিন স্পিনার ও দুই পেসারের ফর্মূলা নিয়ে মাঠে নেমেছিলো ভারতীয় দল। ওয়াংখেড়েতে অশ্বিন, জাদেজা ও ওয়াশিংটন সুন্দরের সাথে অক্ষর প্যাটেল বা কুলদীপ যাদবকেও (Kuldeep Yadav) দেখা যেতে পারে একাদশে। যদিও পিচে প্রথম দিন থেকে টার্ন থাকলে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সাম্প্রতিক সময়ে স্পিনের বিরুদ্ধে ভারতীয় ব্যাটারদের পারফর্ম্যান্স’ও খুব একটা উল্লেখযোগ্য নয়। পুণেতেই মিচেল স্যান্টনার, গ্লেন ফিলিপস, আজাজ প্যাটেলদের বিরুদ্ধে অসহায় আত্মসমর্পণ করতে দেখা গিয়েছে কোহলি, যশস্বী, সরফরাজ খান’দের। ওয়াংখেড়েতেও যদি জ্বলে ওঠেন কিউই স্পিন ত্রয়ী তাহলে ঘোর সমস্যার সম্মুখীন হতেই পারে ভারতীয় শিবির’ও। কিন্তু জয় নিশ্চিত করার জন্য এই ঝুঁকিটুকু নেওয়ার সাহসী পদক্ষেপই দেখাচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্ট।
স্পিন বিপদে ফেলবে ভারতকে?
উপমহাদেশের ব্যাটাররা স্পিনের বিরুদ্ধে সাবলীল, ক্রিকেটদুনিয়ায় একটা সময় প্রচলিত ছিলো এই ধারণা। কিন্তু ভারতীয় তারকাদের সাম্প্রতিক কালে ঘূর্ণি বোলিং-এ নিয়মিত নাস্তানাবুদ হতে দেখে মত বদলাচ্ছেন অনেকেই। প্রাক্তন ক্রিকেটার সাইমন ডুল (Simon Doull) নিউজিল্যান্ড সিরিজ (IND vs NZ) চলাকালীন জানিয়েছেন, “ভারতীয়রা স্পিন ভালো খেলেন, এই ভ্রান্ত ধারণাটা চলে আসছে। শচীন, দ্রাবিড়, সৌরভদের দিন আর নেই। এখন ওরা (ভারত) বাকিদের মতই। ভালো স্পিনারদের বিরুদ্ধে ওদেরও সমস্যায় পড়তে হয়। এটা আমরা আইপিএলেও দেখেছি। যে মুহূর্তে বল ঘুরতে থাকে, ওরা সমস্যায় পড়ে।” মন্তব্যে যে কোনো ভুল নেই, তা বোঝা যায় পরিসংখ্যানে চোখ বোলালেই। ২০২০ সালের পর থেকে স্পিনের বিরুদ্ধে দুই মহাতারকা কোহলি ও রোহিতের ব্যাটিং গড় কমেছে অনেকখানি। ৭২.৪৫ থেকে বিরাটের গড় নেমে এসেছে ৩২.৮৬তে। রোহিতের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা ৮৮.৩৩ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৩৭.৮৩তে।