IND vs NZ: বেঙ্গালুরু, পুণের পর মুম্বইতেও মুখ পুড়লো টিম ইন্ডিয়ার। ২০০০ সালে হ্যান্সি ক্রোনিয়ের দক্ষিণ আফ্রিকা ভারতকে হোয়াইটওয়াশ করেছিলো ভারতের মাটিতেই। তার ঠিক ২৪ বছর পর ঘরের মাঠে চুনকাম হলো ‘মেন ইন ব্লু।’ শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ঘূর্ণির জালে আটকা পড়ে ২-০ ফলে সিরিজ হেরেছিলো নিউজিল্যান্ড। মাত্র এক মাসের ব্যবধানে সেই কিউইরাই জমজমাট ক্রিকেট উপহার দিলো ভারতের মাটিতে। রোহিত-কোহলিদের ধরাশায়ী করে গড়লেন অনন্য নজির (IND vs NZ)। গোটা সিরিজ জুড়েই টিম ইন্ডিয়ার (Team India) জন্য সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যাটিং। বেঙ্গালুরুতে অল-আউট হতে হয়েছিলো ৪৬-এ। পুণেতে ১৫৬তে গুটিয়ে গিয়েছিলো ইনিংস। মুম্বইতে চতুর্থ ইনিংসে প্রয়োজন ছিলো ১৪৬। সেটুকুও তুলতে পারলো না তারকাখচিত ব্যাটিং লাইন-আপ। ১২১-এ গুটিয়ে গিয়ে বেনজির লজ্জার সম্মুখীন ভারত।
কোহলি, রোহিত, সরফরাজ, যশস্বী’রা বেশীক্ষণ টিকতেই পারেন নি ক্রিজে। একটা সময় ২৯ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে বসেছিলো ভারত। আরও একবার অ্যাডিলেডের ৩৬ বা চিন্নাস্বামীর ৪৬-এর আতঙ্ক গ্রাস করেছিলো টিম ইন্ডিয়াকে (Team India)। কিন্তু সেই পরিস্থিতি থেকে দল’কে উদ্ধার করেন ঋষভ পন্থ (Rishabh Pant)। অতীতেও বাইশ গজে অবিশ্বাস্য সব কাণ্ডকারখানা ঘটিয়েছেন তিনি। ২০২০-তে গ্যাবার সেই ইনিংসের স্মৃতি এখনও তাজা ক্রিকেটজনতার মনে। আজ ওয়াংখেড়েতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও (IND vs NZ) তেমনই একা কুম্ভ হয়ে ম্যাচ বাঁচানোর লড়াইতে নেমেছিলেন পন্থ। অপরপ্রান্তে অন্য ব্যাটাররা যখন স্পিন সামলাতে গিয়ে নাজেহাল, তখন সাবলীল ক্রিকেটই খেলছিলেন ভারতীয় উইকেটরক্ষক। স্যুইপ করেছেন যথেচ্ছ। একটি ছক্কাও হাঁকান। অর্ধশতক পেরিয়েছিলেন ১০০’র বেশী স্ট্রাইক রেট রেখে।
Read More: IND vs NZ: “কোনো যোগ্যতা নেই তোমাদের…” নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতীয় দলের ফ্লপ পারফরমেন্সের পর সমাজ মাধ্যমে শুরু হয়েছে চর্চা !!
ঋষভ ফিরতেই মুহ্যমান ওয়াংখেড়ে-
পন্থের (Rishabh Pant) ব্যাটে যখন ধীরে ধীরে আশার আলো দেখতে শুরু করেছেন ভারতীয় সমর্থকেরা, তখনই হলো ছন্দপতন। আজাজ প্যাটেলের ডেলিভারির মোকাবিলা করতে অনেকখানি এগিয়ে এসেছিলেন ঋষভ। বল তাঁর বাড়িয়ে দেওয়া ব্যাটের নাগাল এড়িয়ে প্যাডে লাগে ও শূন্যে উঠে যায়। উইকেটের পিছনে তা দস্তানাবন্দী করেন টম ব্লান্ডেল (Tom Blundell)। নট-আউট দিয়েছিলেন মাঠে উপস্থিত আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওয়ার্থ। রিভিউ নেয় কিউই’রা। বদলে যায় সিদ্ধান্ত। আল্ট্রা-এজ প্রযুক্তির সাহায্যে দেখা যায় যে বল ব্যাটের ঠিক পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় একটি ‘স্পাইক’ রয়েছে। তা বল ব্যাটে লাগার কারণে না প্যাড ব্যাটে লাগার কারণে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও তৃতীয় আম্পায়ার পল রাইফেল আউট ঘোষণার’ই নির্দেশ দেন মাঠে উপস্থিত আম্পায়ার’কে। ফলে ৬৪ রানের মাথাতেই থেমে যায় ঋষভ পন্থের (Rishabh Pant) ইনিংস।
‘বেনিফিট অফ দ্য ডাউট’ না পেয়ে বিরক্ত হয়েছিলেন ঋষভ (Rishabh Panrt)। আউট ঘোষিত হওয়ার পরেই মাথা নাড়েন হতাশায়। প্রথমে কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন পিচেই। তারপর ধীর পায়ে হাঁটা দেন সাজঘরের উদ্দেশ্যে। রবিবার সকালে ওয়াংখেড়েতে ভারতের জয় দেখতে এসেছিলেন বহু দর্শক। কিন্তু চোখের সামনে ম্যাচের মোড় ঘুরতে দেখতে বিহ্বল হয়ে পড়েন তাঁরাও। ঘটনার আকস্মিকতায় আওয়াজ বের হয় নি দর্শকদের মুখ থেকেও। ৩০ হাজারি গ্যালারিতে তখন যেন পিন পড়লেও শোনা যাবে শব্দ। পন্থ ফিরতেই ম্যাচের রাশ চলে যায় নিউজিল্যান্ড দলের হাতে। বাকি উইকেটগুলি তুলতে বিশেষ কসরত ক্রতে হয় নি কিউই স্পিনারদের। ওয়াশিংটন সুন্দর বা রবিচন্দ্রণ অশ্বিন-কেউই পারেন নি মিরাক্ল ঘটাতে। শেষমেশ হেরেই মাঠ ছাড়তে হয়েছে ভারতকে। ঋষভের আউটই যে ‘টার্নিং পয়েন্ট’ তা স্বীকার করেছেন অধিনায়ক রোহিত। অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন তৃতীয় আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে।