IND vs NZ: একদিনের সিরিজে নিউজিল্যান্ড’কে ৩-০ ফলে উড়িয়ে দিয়েছিলো ভারতীয় দল। তার আগে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধেও একই ফলে একদিনের সিরিজ ঘরে তুলেছিলো ‘টিম ইন্ডিয়া।’ সেই কারণেই কিউইদের বিপক্ষে টি-২০তেও ভারতকেই এগিয়ে রেখেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু পরিসংখ্যানের হিসেবনিকেশ মেনে কবে আর চলে ক্রিকেট? রাঁচিতে হার্দিক পান্ডিয়ার (Hardik Pandya) নেতৃত্বাধীন ‘মেন ইন ব্লু’কে নাস্তানাবুদ করে প্রথম ম্যাচে জয় ছিনিয়ে নিলো নিউজিল্যান্ডই। টসে জিতে দিনের শুরুটা ভালোই করেছিলো ভারত। শিশিরের সমস্যা মাথায় রেখে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন হার্দিক। কিন্তু কাজে আসে নি এই চাল। ডেভন কনওয়ে (Devon Conway), ফিন অ্যালেন (Finn Allen), ড্যারিল মিচেলদের (Daryl Mitchell) দাপটে নির্ধারিত ২০ ওভারের শেষে ১৭৬ রান তুলে ফেলে নিউজিল্যান্ড। জবাবে ব্যাট করতে নেমে কিউই দলের স্পিনারদের বিরুদ্ধে সমস্যায় পড়তে দেখা যায় ‘টিম ইন্ডিয়া’ ব্যাটারদের। ব্রেসওয়েল-সোধিদের সামলাতে নাজেহাল হতে হয় শুভমান গিল, ঈশান কিষণদের। কিউই অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনারও (Mitchell Santner) রাঁচির পিচে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন। সূর্যকুমার-ওয়াশিংটনের লড়াই সত্ত্বেও হারতে হয় ভারতকে। জয়ের শৃঙ্গ থেকে আচমকা কেনো আছড়ে পড়তে হলো হারের রুক্ষ জমিতে? বিশ্লেষণের চেষ্টা হচ্ছে নানা মহলে। কেবল ব্যাটিং বা বোলিং ব্যর্থতা? নাকি টিম ম্যানেজমেন্টেরও দায় রয়েছে হারের পিছনে? উঠছে প্রশ্ন। এই প্রসঙ্গে এবার মুখ খুললেন ওয়াসিম জাফর (Wasim Jaffer)। হারের অন্যতম কারণ হিসেবে হার্দিকের দূর্বল অধিনায়কত্ব’কে দায়ী করলেন প্রাক্তন ভারত ওপেনার।
ম্যাচ হেরে কি জানিয়েছিলেন হার্দিক?

ম্যাচ হেরে পিচকেই দায়ী করেছিলেন অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া। স্ট্র্যাটেজি নির্মাণের গলদ নয়, বরং পিচের চরিত্র বুঝতে সমস্যা হওয়াতেই হারতে হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। হার্দিক ম্যাচ শেষে পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সঞ্চালকের প্রশ্নের উত্তরে জানান, ““উইকেটের চরিত্র যে এমন হবে তা কেউ আন্দাজ করতে পারে নি। দুই দলই খানিক চমকে গিয়েছে আজ। কিন্তু আমাদের থেকে ওরা (নিউজিল্যান্ড) ভালো ক্রিকেট খেলেছে আজ, সেই কারণেই সাফল্য পেয়েছে ওরা।” পিচ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন তিনি। জানান, “পুরনো বলের চেয়ে আজ দেখলাম নতুন বল বেশী ঘুরছে। যেভাবে পিচে বল পড়ে বাউন্স করেছে, তার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। বল হাতে বেশী রান খরচ করে ফেলেছিলো ‘টিম ইন্ডিয়া,’ অকপট স্বীকারোক্তি হার্দিকের (Hardik Pandya) । তিনি জানান, “পিছনের দিকে তাকালে এখন মনে হচ্ছে যে এই উইকেট ১৭৭ এর জন্য ছিলো না। আমরা বল হাতে সেরাটা দিতে পারি নি। ২০ থেকে ২৫ রান বেশী খরচ করেছি।” হারলেও ভেঙে পড়তে নারাজ অধিনায়ক। দলের অনেকেই বয়সে তরুণ, হার থেকে শিখতে চান তিনি। অধিনায়ক যতই বোলিং অনভিজ্ঞতা বা পিচের চরিত্র’কে হারের নেপথ্য কারণ হিসেবে দেখাতে চান, তিনি নিজে দায় এড়াতে পারেন না বলেই মনে করছেন প্রাক্তন ভারতীয় ওপেনার ওয়াসিম জাফর। মাঠে তাঁর একাধিক ভুল সিদ্ধান্ত শেষ অব্দি ভারতের বিপক্ষে গিয়েছেন বলে মনে করছেন তিনি।
স্পিনারদের ঠিকঠাক ব্যবহার করেন নি হার্দিক, বলছে জাফর-

রাঁচির পিচে স্পিনারদের জন্য যথেষ্ঠ সাহায্য ছিলো। ভারতীয়দের মধ্যে ওয়াশিংটন সুন্দর (Washington Sundar) ৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে মাত্র ২২ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ২ টি উইকেট। বাঁ-হাতি ‘চায়নাম্যান’ বোলার কুলদীপ যাদবও (Kuldeep Yadav) ৪ ওভারের কোটা শেষ করেছেন। মাত্র ২০ রান দিয়ে নিয়েছেন ১ উইকেট। কিন্তু বাকি ওভারগুলিতে মূলত পেসের দিকের আস্থা রাখতে দেখা গেলো অধিনায়ক হার্দিককে। যেখানে নিউজিল্যান্ড ঈশ সোধির মত অতিরিক্ত স্পিনারকে খেলিয়ে বাজিমাত করলো সেখানে হার্দিকের (Hardik Pandya) হাতে দীপক হুডার (Deepak Hooda) বোলিং বিকল্প থাকা সত্ত্বেও তাঁকে পুরোপুরি ব্যবহারই করেন নি তিনি। মাত্র ২ ওভার বল করেন দীপক। রান বিশষ না দিলেও পুরো বোলিং কোটা শেষ করেন নি তিনি। পরিবর্তে অর্শদীপ সিং-এর হাতে শেষ ওভার তুলে দেন অধিনায়ক। সেই ওভারে ২৭ রান দিয়েছিলেন পাঞ্জাব পেসার। যা ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিয়েছিলো। স্পিন সহায়ক পিচে স্পিনার ব্যবহারে এত দ্বিধা কিসের? প্রশ্ন তুলেছেন ওয়াসিম জাফর (Wasim Jaffer)। ইএসপিএন ক্রিকইনফো’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জাফর জানান, “ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ী বোলিং পরিবর্তনের ক্ষেত্রে একেবারেই ব্যর্থ ভারতীয় দল। দীপক হুডার (Deepak Hooda) ওভার বাকি ছিলো।” সাক্ষাৎকারে সরাসরি হার্দিক পান্ডিয়ার নাম না নিলেও মাঠে দলের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে পান্ডিয়ার (Hardik Pandya) অধিনায়কত্বে যে খুশি নন তিনি তা বুঝিয়ে দিলেন জাফর (Wasim Jaffer)।