IND vs NZ: আজকের ম্যাচ অগ্নিপরীক্ষা ছিলো অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া’র। অস্ট্রেলিয়াতে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে হারের পর হতাশার পাশাপাশি দলের ভাগ্যে জুটেছিলো একরাশ সমালোচনা। ঘরে-বাইরে প্রশ্নবাণে বিদ্ধ হচ্ছিলো ‘টিম ইন্ডিয়া।’ তার ওপর নিউজিল্যান্ডের মত কঠিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে দলে ছিলেন না বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা’র মত প্রতিথযশা ক্রিকেটার’রা। সেক্ষেত্রে নতুন টিম নিয়ে বে ওভালে নামার আগে খানিক চাপে অবশ্যই ছিলেন আপাতশান্ত হার্দিক। তবে সেই চাপ বেশীক্ষণ রইলো না। ‘টিম ইন্ডিয়া’র তরুণ সৈণিক’রা তাকে ছুঁড়ে ফেললেন অনেক দূরে। অধিনায়ক হার্দিক এর আগেও সিরিজ জিতেছেন আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। তবে তাঁকে তাঁর প্রথম বড় পরীক্ষায় সসন্মানে পাস করিয়ে দিলেন সূর্যকুমার যাদব, যজুবেন্দ্র চাহাল’রা। ব্যাটে বলে দুর্দান্ত পারফর্ম করে নিউজিল্যান্ড’কে ৬৫ রানে হারিয়ে দিলো ভারত। আর চমকে দিলেন দীপক হুডা(Deepak Hooda)। গড়ে ফেললেন নতুন রেকর্ড। তিনি কি ক্যাপ্টেন্স প্লেয়ার? আজকের পারফর্ম্যান্সের পর প্রশ্ন দানা বাঁধতে শুরু করেছে ভারতের ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে।
বিশ্বকাপে পারফর্ম্যান্স ভালো ছিলো না হুডা’র-
টি-২০ বিশ্বকাপগামী ভারতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছিলেন দীপক হুডা(Deepak Hooda)। ডান হাতি ব্যাটার এবং ডান হাতি অফস্পিনার হিসেবে দলের দুই ডিপার্টমেন্টেই কার্যকরী বিকল্প হতে চলেছেন তিনি। মনে করা হয়েছিলো সেটাই। তবে বাস্তবে তার ছিতেফোঁটাও দেখা যায় নি হুডার খেলা থেকে। প্রথমের দুই ম্যাচে সুযোগ পান নি তিনি। খেলেন অক্ষর প্যাটেল। তিনি আহামরি খেলতে না পারায় তৃতীয় ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সুযোগ পান তিনি। কঠিন বোলিং লাইন আপের বিরুদ্ধে দলের ব্যাটিং মজবুৎ হবে এবং দরকারে কয়েক ওভার হাত ঘোরাতেও পারবেন, এই ভেবেই অক্ষর’কে বাইরে রেখে প্রথম একাদশে সুযোগ দেওয়া হয় হুডা’কে। কিন্তু চূড়ান্ত ব্যর্থ হন তিনি। ০ রানে আউট হয়ে ফেরেন প্যাভিলিয়নে। এক ওভার’ও তাঁকে হাত ঘোরাতে দেখা যায় নি সেদিন। হতশ্রী পারফর্ম্যান্সের কারণে ভারতীয় ফ্যানেদের চক্ষুশূল হয়েছিলে তিনি।
আয়ারল্যান্ডে এসেছিলো শতরান-
আয়ারল্যান্ডে যখন ভারতের অধিনায়কত্ব পেয়েছিলেন হার্দিক, দলের সদস্য হিসেবে প্রথম একাদশে সুযোগ পেয়েছিলেন দীপক(Deepak Hooda)। দুর্দান্ত ব্যাট করে সেই যাত্রায় টি-২০ ম্যাচে করেছিলেন শতরান। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ৫৭ বলে করেছিলেন ১০৪ রান। তাঁর শতরান এবং সঞ্জু স্যামসনের ৪২ বলে ৭৭ রানের ইনিংসে ভর দিয়ে ভারত করে ২২৫ রান। জবাবে দারুণ প্রত্যাঘাত হানে আয়ারল্যান্ড। তারা করে ২২১ রান। ম্যাচ হাড্ডাহাড্ডি হলেও হুডার ব্যাটিং তারিফ পায় বিশেষজ্ঞদের থেকে। মূলত সেই ইনিংসের জন্যই ভারতের টি-২০ বিশ্বকাপগামী দলে তাঁকে সামিল করা হয়েছিলো। তবে নেতৃত্ব দেন রোহিত শর্মা। আর আয়ারল্যান্ড পরবর্তী ম্যাচগুলিতে ধীরে ধীরে ফর্মহীনতায় ভুগে শেষমেশ প্রথম একাদশের বাইরে চলে যান দীপক হুডা(Deepak Hooda)।
হার্দিক ক্যাপ্টেন হতেই ফের চমক হুডা’র-
এমন অনেক খেলোয়াড় থাকেন যাঁদের বলা হয় ক্যাপ্টেন্স প্লেয়ার। অর্থাৎ একজন বিশেষ অধিনায়কের অধীনেই তাঁরা বেশী ভালো খেলেন। দীপক হুডা’ও(Deepak Hooda) কি তাই? হার্দিক পান্ডিয়া’কে(Hardik Pandya) টস করতে যেতে দেখলে আলাদা করে ভালো খেলার তাগিদ অনুভব করেন কি তিনি? এমনটাই মনে করছেন অনেকে। দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের পর বাদ পড়েন জাতীয় দল থেকে। ফিরলেন আজ। ব্যাট হাতে আরেকটা ০ করে যখন আবার বাদ পড়ার দিকে এগোচ্ছেন তাঁর হাতে বল তুলে দিলেন নেতা হার্দিক। অধিনায়কের আস্থা দেখতে পেয়েই মনে হয় নিজের সেরা’টা দিলেন তিনি। নিজের অফস্পিনের ভেলকি’তে আউট করলেন ৪ জন কিউই ব্যাটার’কে। উনিশতম ওভারে নিলেন একবারে ৩ টি উইকেট। হুডার আজকের বোলিং পরিসংখ্যান ২.৫-০-১০-৪, নিউজিল্যান্ডের মাটিতে যে কোনো ভারতীয় বোলারের সেরা টি-২০ প্রদর্শন। সমালোচনার গলিপথ থেকে সাফল্যের রাজপথে ফেরার কৃতিত্ব কিছুটা কি নেতা হার্দিকের? সেই কথায় বলছেন অনেকে।