IND vs ENG: লর্ডস টেস্টের দ্বিতীয় দিনে চর্চার কেন্দ্রে ‘বল।’ গতকাল ইংল্যান্ড ইনিংসের ৮০ ওভার সম্পূর্ণ হওয়ার পর দ্বিতীয় নতুন বল নিয়েছিলো ভারতীয় দল (IND vs ENG)। ৮৩ ওভারেই যবনিকা পড়ে প্রথম দিনের খেলার। অর্থাৎ আজ মাত্র ৩ ওভার পুরনো বল হাতে দিনের সূচনা করেন জসপ্রীত বুমরাহ। সাফল্যও পান তিনি। প্রথম স্পেলেই সাজঘরে ফে্রান বেন স্টোকস, জো রুট ও ক্রিস ওকস’কে। একা বুমরাহ (Jasprit Bumrah) নন, সেই সময় যথেষ্ট স্যুইং-ও আদায় করতে দেখা গিয়েছিলো মহম্মদ সিরাজকেও (Mohammed Siraj)। হায়দ্রাবাদী পেসারের বলে স্লিপে জেইমি স্মিথের একটি ক্যাচ হাতছাড়া করেন কে এল রাহুল।
কিন্তু ৯১তম ওভারেই বদলে যায় পরিস্থিতি। বলের আকৃতি বদলে গিয়েছে অভিযোগ তুলে আম্পায়ারের দ্বারস্থ হন অধিনায়ক শুভমান গিল (Shubman Gill)। কিছুক্ষণ বাগ্বিতণ্ডা চলার পর বল বদলের অনুরোধে সায় দেন আম্পায়াররা। বিকল্প হিসেবে যে বলটিকে বেছে নেওয়া হয়েছিলো, সেটি নিয়েও আপত্তি তোলেন শুভমান-সিরাজ’রা। ৯৫ তম ওভার শুরুর আগে ড্রিংকসের বিরতির সময় ফের চলে একপ্রস্থ বাগ্বিতণ্ডা। ভারতের এই লাগাতার বল বদলের অনুরোধ ভালো চোখে দেখছেন না প্রাক্তন ইংল্যান্ড অধিনায়ক নাসের হুসেন (Nasser Hussain)। ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় টিম ইন্ডিয়াকে (Team India) রীতিমত তুলোধোনা করেন তিনি।
Read More: চলতি টেস্ট সিরিজ থেকে বাদ পড়লেন ঋষভ পন্থ, মাথায় হাত টিম ইন্ডিয়ার !!
বল বিতর্কে মুখ খুললেন নাসের হুসেন-

সাধারণত টেস্ট ক্রিকেটে তিন ধরনের ‘বল’ ব্যবহার হয় ক্রিকেটদুনিয়ায়। ভারতে ব্যবহৃত হয় এস জি কোম্পানির বল। অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকার মত অধিকাংশ ক্রিকেটখেলিয়ে দেশে ব্যবহার করা হয় অস্ট্রেলীয় সংস্থা কুকাবুরা’র বল। আর ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে দেখা যায় ডিউক সংস্থা’র বল। চলতি ভারত বনাম ইংল্যান্ড (IND vs ENG) সিরিজে বিতর্ক এই ডিউক বল নিয়েই। নির্ধারিত ৮০ ওভার নয় বরং তার অনেক আগেই আকার ও আকৃতি হারিয়ে ফেলছে সেগুলি। থাকছে না ব্যবহার উপযোগী, উঠছে অভিযোগ। এর আগে লিডস ও এজবাস্টনেও বলের মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল দুই দল। লর্ডসেও (IND vs ENG) দেখা গিয়েছে একই ঘটনা। মাত্র ১০ ওভারের বেশী ব্যবহার করা যায় নি দ্বিতীয় নতুন বল’টি।
ডিউক বল নিয়ে চর্চার মাঝে ভারতীয় দলের দিকেই আঙুল তুলেছেন ইংল্যান্ড প্রাক্তনী নাসের হুসেন। তিনি বলেন, “আমার মনে হয়েছিলো যে ভারতের বল বদলের সিদ্ধান্তটা খুবই উদ্ভট। দু’টি কারণে বল বদল করা যেতে পারে। এক, যদি আম্পায়াররা মনে করেন যে এর আকার খেলার যোগ্য নেই। আর দুই, যদি অধিনায়ক মনে করেন যে বলে কোনো নড়াচড়া নেই। তাই আম্পায়ারকে বলে তিনি বল বদলানোর চেষ্টা করতে পারেন। কিন্তু আজ সকালে বল তো যথেষ্ট নড়াচড়া করছিলো। মাত্র ৬৩টি ডেলিভারি হয়েছিলো (ঐ বলে)। ওটা এক কোণ থেকে অন্য কোণে স্যুইং হচ্ছিলো। বুমরাহ একটা অসামান্য স্পেল করছিলো। অন্য প্রান্তে সিরাজের বলে ক্যাচ হাতছাড়া হচ্ছিলো। উইকেটরক্ষকের হাত পর্যন্ত দিব্যি ‘ক্যারি’ হচ্ছিলো। আমি বুঝে পাচ্ছি না সেটা বদলানোর কারণ কি।”
দেখুন নাসেরের মন্তব্য-
BCCI’s dirty and filthy *tactics* are getting belted 🍿 pic.twitter.com/B1AE7lKHkd
— ARNOLD (@Neyfiction) July 11, 2025
ভিন্ন মত স্টুয়ার্ট ব্রডের-

অধিনায়ক শুভমানের দিকেও আঙুল তুলেছেন নাসের হুসেন। “ওরা (ভারত) শুধু বল বদলানোর অনুরোধ করে ক্ষান্ত হয় নি বরং সেই অনুরোধে (আম্পায়াররা) সাড়া না দেওয়ায় অধিনায়ক রীতিমত উত্তেজিতও হয়ে পড়েছিলো। আমার মতে এটা সত্যিই একটা আজব সিদ্ধান্ত ছিলো। তোমাদের হাতে এমন একটা বল ছিলো যেটা যথেষ্ট কার্যকরী ভূমিকা নিচ্ছিলো,” সংযোজন তাঁর। আরেক ইংল্যান্ড প্রাক্তনী স্টুয়ার্ট ব্রডের (Stuart Broad) অবস্থান অবশ্য ১৮০ ডিগ্রীতে। ট্যুইটবার্তায় তিনি জানিয়েছেন, “ক্রিকেট বলের একজন দক্ষ উইকেটরক্ষকের মত হওয়া উচিৎ। যেটা কিনা বিশেষ নজরে আসবে না। আমরা বল নিয়ে এত আলোচনা করছি কারণ সত্যিই একটা সমস্যা। আর প্রায় প্রত্যেক ইনিংসেই বদলাতে হচ্ছে। এটা কখনোই মানা যায় না। মনে হয় পাঁচ বছর ধরে এটা চলছে। ডিউকে সমস্যা রয়েছে। নতুন বল ৮০ ওভার টেকা উচিৎ। ১০ ওভার নয়।”
দেখুন ব্রডের ট্যুইট-
The cricket ball should be like a fine wicket keeper. Barely noticed. We are having to talk about the ball too much because it is such an issue & being changed virtually every innings. Unacceptable. Feels like it’s been 5 years now.
Dukes have a problem. They need to fix it. A…— Stuart Broad (@StuartBroad8) July 11, 2025