IND vs ENG: আজ শুরু হয়েছে ভারত বনাম ইংল্যান্ড (IND vs ENG) পঞ্চম টেস্ট ম্যাচ। প্রথম ম্যাচে পরাজয়ের পর টানা তিন টেস্ট জিতে ইতিমধ্যেই সিরিজ হাতের মুঠোয় নিয়েছে টিম ইন্ডিয়া। পঞ্চম টেস্টে রোহিত শর্মার দলের সামনে থাকছে ব্যবধান বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ। অন্যদিকে দেশে ফেরার আগে শেষ টেস্টে ঘুরে দাঁড়ানোর সংকল্প সাথে নিয়ে মাঠে নেমেছে ইংল্যান্ড’ও। চলতি সিরিজে টসে জিতে ব্যাটিং বেছে নেওয়ার ট্র্যাডিশনই দেখা গিয়েছে শুরু থেকেই। ধর্মশালাতেও তা বজায় থাকলো। ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং-ই বেছে নিলেন। শুরুটা ভালো করেছিলেন দুই ওপেনার জ্যাক ক্রলি ও বেন ডাকেট, কিন্তু ম্যাচ যত এগোলো, প্রথমে ব্যাটিং-এর সিদ্ধান্ত ব্যুমেরাং হয়ে ফিরলো ইংল্যান্ডের দিকেই।
ক্রলি-ডাকেটের জুটি ভাঙতে সমস্যায় পড়েছিলো ভারত। ধুন্ধুমার বাজবল নয়, বরং আজ টেস্ট ক্রিকেটের রীতি মেনে সময় নিয়ে ক্রিজে থিতু হওয়ার প্রয়াস করতে দেখা যায় দুই ওপেনারকে। কুলদীপ যাদবের বলে ভাঙে তাদের ৬৪ রানের জুটি। তিনে নামা অলি পোপ’কেও ফেরান কুলদীপই। দিনের প্রথম সেশনে ইংল্যান্ডের স্কোর ছিলো ২ উইকেটের বিনিময়ে ১০০ রান। বুমরাহ-সিরাজদের সামলে যেভাবে ব্যাট করছিলো সফরকারী দল, তাতে তাদেরকেই এগিয়ে রেখেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু ম্যাচের মোড় ঘুরে যায় দ্বিতীয় সেশনে। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা কুলদীপকে সামলাতে নাজেহাল হতে হয় রুট, বেয়ারেস্টো, স্টোকসদের। আক্রমণে যোগ দেন অশ্বিন-জাদেজাও। স্পিন ত্রয়ীর আঘাতে দিনের তৃতীয় সেশনের শুরুতেই ২১৮ রানে গুটিয়ে গেলো ইংল্যান্ড। প্রথম দিনেই চওড়া হাসি ভারত অধিনায়ক রোহিতের মুখে।
Read More: IPL 2024: “নতুন অধিনায়ক কী এটার যোগ্য…?”, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের নতুন জার্সি লঞ্চ হতেই ট্রোলের মেজাজে নেটজনতা !!
প্রথম সেশনে ভরসা দিয়েছিলেন ক্রলি-ডাকেট’রা-
ধর্মশালার মাঠে সাধারণত ম্যাচের শুরুতে পেসারদেরই সাহায্য পেতে দেখা যায়। এর আগে যে ২০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছে এই মাঠে, সেখানে মোট ২৪৮ উইকেটের মধ্যে ৬১.৬৯ শতাংশ উইকেট গিয়েছে ফাস্ট বোলারদের ঝুলিতে। স্পিনারদের সাফল্য ছিলো মাত্র ৯৫টি। কিন্তু আজ ভারত বনাম ইংল্যান্ড পঞ্চম টেস্টের প্রথম দিনে দেখা গেলো পুরো উলটো ছবি। সকালে নতুন বল হাতে বিশেষ দাগ কাটতে পারেন নি জসপ্রীত বুমরাহ ও মহম্মদ সিরাজ। ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার বেন ডাকেট ও জ্যাক ক্রলি সহজেই সামলেছেন দুজনে। টসের সময় রোহিত জানিয়েছিলেন, যে উইকেটে বাউন্স আশা করছে তাঁর দল। তেমন কিছুই চোখে পড়ে নি আজ। খেলার গতি বদলালো আক্রমণে স্পিনাররা আসার পরেই।
১৮তম ওভারে আউট হন বেন ডাকেট। বাম হাতি ওপেনার ৫৮ বলে করেন ২৭ রান। কুলদীপ যাদবের বলে দুরন্ত ক্যাচ তালুবন্দী করেন শুভমান গিল। এরপর ক্রিজে আসেন অলি পোপ। হায়দ্রাবাদে সিরিজের প্রথম ইনিংসে ম্যাচ জেতানো ১৯৬ রানের পর শান্তই থেকেছে পোপের ব্যাট। আজও ছন্দ ফিরে পেলেন না তিনি। সেই কুলদীপ যাদবের বলেই স্টাম্পড হন তিনি। করেন ২৪ বলে মাত্র ১১ রান। পোপ আউট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মধ্যাহ্নভোজের বিরতি ঘোষণা করেন আম্পায়াররা। ইংল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে তখন ২ উইকেটের বিনিময়ে ১০০ রান। ক্রিজে ততক্ষণে থিতু হয়ে গিয়েছেন জ্যাক ক্রলি। ধর্মশালার মাঠে সেই সময় অ্যাডভান্টেজ ছিলো সফরকারী দলের হাতেই।
লাঞ্চের পরেই হুড়মুড়িয়ে ভাঙলো ইংল্যান্ডের প্রতিরোধ-
দিনের দ্বিতীয় সেশনেই দেখা গেলো নাটকীয় পটপরিবর্তন। প্রথমেই ফেরেন জ্যাক ক্রলি। কুলদীপ যাদবের এক অসামান্য ডেলিভারিতে বোল্ড হন তিনি। থামেন ১০৮ বলে ১১টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ৭৯ রান করে। আজ ১০০তম টেস্ট ম্যাচ খেলতে নেমেছেন ইংল্যান্ডের জনি বেয়ারেস্টো। কিন্তু অভিজ্ঞতা সুখের হলো না তাঁর। ১৮ বলে ২৯ করে সাজঘরের পথ ধরেন তিনি। কুলদীপের চতুর্থ শিকার হলেন তিনি। ভাঙনের মুখে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারতেন জো রুট। কিন্তু আজ রান পেলেন না জো রুট’ও। মাত্র ২৬ রান করে রবীন্দ্র জাদেজার শিকার হয়ে তিনিও ফেরেন সাজঘরে। ‘ক্রাইসিসি ম্যান’ বলে পরিচিত বেন স্টোকসের অফ ফর্ম কাটলো না ধর্মশালাতেও। কুলদীপের পঞ্চম শিকার হন তিনি। আজ ১৫ ওভারে ৭২ রানের বিনিময়ে ৫ উইকেট তুলে নিলেন কুলদীপ।
বাকি কাজটুকু সেরে ফেললেন রবিচন্দ্রণ অশ্বিন। আজ ১০০তম টেস্ট ম্যাচ খেলতে নেমেছেন তিনিও। পাহাড়ঘেরা ধর্মশালাতে অশ্বিনের স্পিনের প্যাঁচে আটকা পড়লেন ইংল্যান্ড ব্যাটাররা। একে একে টম হার্টলি, মার্ক উড, বেন ফোকস ও জেমস অ্যান্ডারসনকে সাজঘরে ফেরত পাঠান তিনি। একমাত্র ফোকসের ২৩ রানের ইনিংস ছাড়া উল্লেখযোগ্য রান পান নি কেউই। ১১.৪ ওভারে ৫১ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট তুলে নিলেন অশ্বিন। লাঞ্চের সময় ১০০ রানের বিনিময়ে মাত্র ২ উইকেট খুইয়েছিলো ইংল্যান্ড। আর তৃতীয় সেশনের শুরুতেই মাত্র ২১৮ রানে যবনিকা পড়লো তাদের ইনিংসে। ৫৭.৪ ওভারেই শেষ ইংল্যান্ডের প্রতিরোধ। ১১৮ রানে ৭ উইকেট খুইয়ে ঘোর বিপাকে বেন স্টোকস বাহিনী।