ভারত বনাম ইংল্যান্ড (IND vs ENG) সিরিজে চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে বল। সাধারণত টেস্টে ৮০ ওভারে একটি বল ব্যবহার করা হয়। কিন্তু তার অনেক আগেই আকার ও আকৃতি পালটে ফেলছে ডিউক সংস্থা নির্মিত লাল বলগুলি। লিডসে বল বদলের আবেদন করতে দেখা গিয়েছিলো ভারতীয় অধিনায়ক শুভমান গিল’কে। গতকাল লর্ডস টেস্টের দ্বিতীয় দিনেও দেখা গিয়েছিলো একই ছবি। মাত্র ১০ ওভার পুরনো বলই বদলে ফেলতে হয় আম্পায়ারদের। বিকল্প হিসেবে যে বলটি বেছে নেওয়া হয়েছিলো সেটি নিয়েও খুশি ছিলেন না ভারতীয় ক্রিকেটাররা। তৃতীয় দিনেও বদলালো না ছবিটা। ভারতীয় ইনিংসের ৫৭তম ওভার শুরুর আগে ফের বল বদলান দুই আম্পায়ার পল রাইফেল ও শরফুদৌলা সৈকত। বারবার এহেন বল বদলের দৃশ্য ক্রিকেটের জন্য খারাপ বিজ্ঞাপন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। স্টুয়ার্ট ব্রড থেকে অনিল কুম্বলে, সোচ্চার হয়েছেন সকলেই।
Read More: ৬,৬,৬,৬,৬,৬..ব্যাট হাতে জ্বলে উঠলেন রুতুরাজ গায়কোয়াড, ওডিআইতে ডবল সেঞ্চুরি করে গড়লেন নতুন ইতিহাস !!
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে খোঁচা দিলেন গাওস্কর-

ভারতে এসে বিন্দুমাত্র সমস্যার মুখে পড়লে বিসিসিআই ও টিম ইন্ডিয়াকে (Team India) রীতিমত তুলোধোনা করে ইংল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম। স্পিন খেলার অক্ষমতা ঢাকতে প্রায়শই ভারতীয় পিচের জন্য তাদের ব্যবহার করতে দেখা যায় ‘ডাস্ট বোল’-এর উপমা। কিন্তু চলতি সিরিজে (IND vs ENG) ডিউক বলের বেহাল দশা নিয়ে কার্যত চুপ’ই তারা। এই প্রসঙ্গেই দ্বিচারিতার অভিযোগ এনেছেন ভারতীয় কিংবদন্তি সুনীল গাওস্কর (Sunil Gavaskar)। ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় আজ তিনি বলেন, “এহেন ঘটনা আজ যদি ভারতে ঘটত, তাহলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম এতক্ষণে তেড়ে আসত রে রে করে। আগের বলের নিকটবর্তী অবস্থায় থাকা বিকল্প বল যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে না থাকত তা নিয়েও ফলাও করে লিখত।” ডিউক বল প্রসঙ্গে অনিল কুম্বলে (Anil Kumble) বলেছেন, “বল খুব তাড়াতাড়ি নরম হয়ে যাচ্ছে। তার আকার বদলে যাচ্ছে।”
ডিউক বলের চরিত্র বদলাক, চাইছেন প্রাক্তন ভারতীয় স্পিনার। বলেছেন, “কিছু তো একটা ঠিক করা প্রয়োজন। যদি ১০ ওভারও কোনো বল না টেকে আর বারবার সেই সমস্যা হয় তাহলে সেটা ভালো বিষয় নয়। বলের জন্য তো বটেই, ক্রিকেটের জন্যও। আমার মতে পাঁচ বছর আগে যে ডিউক বল ছিলো সেটাই ফিরিয়ে আনা উচিৎ। সেটাই ভালো হবে। বল রিভার্স (স্যুইং) করানোর সুযোগও বাড়বে। এখন অনেক জায়গাতেই বল রিভার্স করা কমে গিয়েছে।” ইংল্যান্ডের প্রাক্তন পেসার স্টুয়ার্ট ব্রড’ও গতকাল এক ট্যুইট বার্তায় লিখেছেন, “…আমরা বল নিয়ে এত আলোচনা করছি কারণ সত্যিই একটা সমস্যা। আর প্রায় প্রত্যেক ইনিংসেই বদলাতে হচ্ছে। এটা কখনোই মানা যায় না। মনে হয় পাঁচ বছর ধরে এটা চলছে। ডিউকে সমস্যা রয়েছে। নতুন বল ৮০ ওভার টেকা উচিৎ। ১০ ওভার নয়।”
দায় এড়াচ্ছে ডিউক সংস্থা-

বল বিতর্কে কার্যত দায় এড়াচ্ছে ডিউক সংস্থা। তারা আঙুল তুলেছে ইংল্যান্ডের আবহাওয়ার দিকে। সংস্থার তরফে দিলীপ জাজোদিয়া বলেছেন, “বিশ্ব ক্রিকেটে মাত্র তিনটি সংস্থা রয়েছে যারা বল তৈরি করে-ডিউক, এসজি ও কুকাবুরা। বল বানানো মোটেই সহজ নয়। যদি হত তাহলে শত শত সংস্থা বল তৈরি করতে পারত। আমাদের বলে কোনোরকম সমস্যাই নেই। চামড়া, কর্ক আর রবারের মত প্রাকৃতিক উপাদান তৈরি করে বল তৈরি করা হয়। আমাদের প্রযুক্তিগত দিক নিয়ে প্রশ্ন তোলার জায়গাই নেই। কিন্তু আবহাওয়া কেমন থাকবে সেটা বল বানানোর সময় আমাদের বিবেচ্য থাকে না। ভারতের অধিনায়কই সবচেয়ে বেশী রান করেছেন। দু’জন বোলার ৬টি করে উইকেট নিয়েছেন।” তবে সংস্থা যাই জানাক না কেন এই বিতর্ক যে সহজে মেটার নয় তা স্পষ্ট লর্ডস টেস্টের (IND vs ENG) একের পর এক ঘটনা থেকে।
Also Read: IND vs ENG 3rd Test: স্টোকসের থ্রোয়ে স্বপ্নভঙ্গ ঋষভ পন্থের, রান-আউট হয়ে ফিরলেন সাজঘরে !!