IND vs ENG: রাঁচীর ঝাড়খণ্ড ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে চলছে ভারত বনাম ইংল্যান্ড (IND vs ENG) চতুর্থ টেস্ট। দ্বিতীয় দিনের শেষে চালকের আসনে ছিলো ইংল্যান্ড। তরুণ স্পিনার শোয়েব বশিরের ম্যারাথন স্পেলের সুবাদে ভারতীয় মিডল অর্ডারকে সাজঘরে ফিরিয়ে দিয়ে জয়ের আশা জাগিয়েছিলো তারা। দিনের শেষে ভারতের স্কোর ছিলো ৭ উইকেটের বিনিময়ে ২১৯। ক্রিজে ছিলেন ধ্রুব জুড়েল ও কুলদীপ যাদব। আজ সকালে কুলদীপ ফিরলেও লড়াই চালিয়ে গেলেন জুড়েল। উত্তরপ্রদেশের তরুণ শেষমেশ আউট হন ৯০ রান করে। তিনি শতরানের সুযোগ হারান ঠিকই, কিন্তু তাঁর লড়াকু ইনিংস ভারতকে পৌঁছে দেয় ৩০৭ রানে। ৪৫ রানের লিড পেয়েছিলো ইংল্যান্ড।
এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামলেও সেই সুবিধা বেশীক্ষণ ধরে রাখতে পারে নি বেন স্টোকসের দল। তৃতীয় দিনে পিচের চরিত্রে বদল এসেছে অনেকটা। বল পড়ে ঘুরছে ভালোমতই। টার্ন ও বাউন্সকে কাজে লাগিয়ে রুট, বেয়ারেস্টোদের বিপাকে ফেলেন অশ্বিন-জাদেজা-কুলদীপ ত্রয়ী। সিরিজে ফর্ম ভালো যাচ্ছিলো না অশ্বিনের। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে চতুর্থ টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ছন্দ খুঁজে পেলেন তিনি। তুলে নেন ৫ উইকেট। চার উইকেট জমা পড়ে কুলদীপের ঝুলিতেও। একমাত্র জ্যাক ক্রলি ছাড়া ইংল্যান্ড ইনিংসে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেন নি কেউই। শেষমেশ মাত্র ১৪৫ রানেই গুটিয়ে যায় তারা। ১৯২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারতীয় ওপেনারদের দেখা গেলো দ্রুত রান তুলতে। আপাতত টিম ইন্ডিয়ার স্কোরবোর্ডে ৮ ওভারে বিনা উইকেটে ৪০ রান। জয়ের জন্য প্রয়োজন ১৫২।
স্পিনের নাগপাশে বন্দী ইংল্যান্ড, পাঁচ শিকার অশ্বিনের-
দিনের শুরুটা ইংল্যান্ডের জন্য খারাপ হয় নি। অ্যান্ডারসনের বলে ফিরেছিলেন কুলদীপ যাদব। আকাশ দীপ ফেরেন ৯ রান করে। প্রায় একা কুম্ভ হয়েই ভারতের ইনিংসকে টেনে নিয়ে গেলেন ধ্রুব জুড়েল। পরপর উইকেট পড়ায় গিয়ার বদলাতেও দেখা গিয়েছিলো তাঁকে। টম হার্টলিকে একই ওভারে চার-ছক্কা হাঁকান। জুড়েলের ৯০ রানের ইনিংস সত্ত্বেও ৪৫ রানের লিড পেয়েছিলো ইংল্যান্ড। কিন্তু ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণে দীর্ঘস্থায়ী হলো না সেই স্বস্তি। ডাকেট-ক্রলি’র ওপেনিং জুটি ভাঙেন অশ্বিন। ১৫ বলে ১৫ রান করে সরফরাজ খানের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে যান ডাকেট। ঠিক পরের বলেই অলি পোপকে আউট করেন ভারতের স্পিন মায়েস্ত্রো। এই নিয়ে চলতি সিরিজে দ্বিতীয়বার শূন্য করে সাজঘরে ফিরলেন পোপ। প্রথম ইনিংসের পর সমালোচিত হয়েছিলেন অশ্বিন। দক্ষতায় যে মরচে ধরে নি, তা তিনি বোঝালেন দ্বিতীয় ইনিংসে।
গত ইনিংসে অপরাজিত শতরান করা জো রুট’ও বেশী দূর এগোতে পারেন নি দ্বিতীয় ইনিংসে। ১১ রান করে অশ্বিনের তৃতীয় শিকার হন তিনি। ভাঙন রোধের চেষ্টা করেছিলেন ক্রলি ও বেয়ারেস্টো। কিন্তু ব্যক্তিগত ৬০ রানের মাথায় কুলদীপের সামনে নতিস্বীকার করতেই হয় তাঁকে। ইংল্যান্ড অধিনায়ক স্টোকসকেও বোল্ড করেন কুলদীপ। স্টোকস ফেরার পরের ওভারেই বেয়ারেস্টো আউট হওয়ার পর স্তিমিত হয়ে পড়ে ইংল্যান্ডের প্রতিরোধ। বেন ফোকস চেষ্টা করেও আটকাতে পারেন নি ভাঙন। কুলদীপের চতুর্থ শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন অলি রবিনসন। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে এসে পরপর দুই উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের ইনিংসে ইতি টেনে দেন অশ্বিন। এই নিয়ে টেস্ট কেরিয়ারে ৩৬তম বার এক ইনিংসে ৫ উইকেট পেলেন তিনি। জায়গা করে নিলেন স্যার রিচার্ড হ্যাডলির পাশে।
জয়ের হাতছানি থাকছে ভারতের সামনে-
১৪৫ রানে গুটিয়ে গিয়েছে ইংল্যান্ড। জয়ের জন্য ভারতের লক্ষ্য ১৯২ রান। তাড়া করতে নেমে টেস্ট নয়, বরং ওয়ান ডে ক্রিকেটের ঢঙে ব্যাটিং করতে দেখা গেলো রোহিত শর্মা ও যশস্বী জয়সওয়ালকে। পড়ন্ত বেলায় যথাসম্ভব রান তুলে নেওয়াই লক্ষ্য ছিলো দুজনেই। ৮ ওভারে ৪০ রান তুলে নিয়েছে ভারত। খোয়াতে হয় নি একটি উইকেট’ও। আপাতত ক্রিজে রয়েছেন অধিনায়ক রোহিত। তাঁর সংগ্রহ ২৭ বলে ২৪ রান। চারটি চার মেরেছেন ইতিমধ্যে। অপরপ্রান্তে যশস্বী জয়সওয়াল অপরাজিত রয়েছেন ২১ বলে ১৬ রান করে। পিচের চরিত্র দেখে বিশেষজ্ঞদের ধারণা চতুর্থ দিনের সকাল থেকে আরও বেশী টার্ন আদায় করে নেওয়ার সুযোগ থাকবে ইংল্যান্ড স্পিনারদের কাছে। এখনও অবধি ভারত জয়ের দিকে এক পা বাড়িয়ে রাখলেও শোয়েব বশির, টম হার্টলিদের বিরুদ্ধে গোড়ায় সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শই টিম ইন্ডিয়াকে দিচ্ছেন তাঁরা।