IND vs ENG: নাগপুর ও কটকের পর আহমেদাবাদেও ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয় ছিনিয়ে নিলো টিম ইন্ডিয়া (IND vs ENG)। তিন ম্যাচের সিরিজে একচ্ছত্র আধিপত্য ধরে রাখলেন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিরা। আজও টসের মুদ্রা পড়েছিলো ইংল্যান্ডের পক্ষে। আজ প্রথমে বোলিং-এর সিদ্ধান্ত নেন জস বাটলার। দ্বিতীয় ওভারেই ধাক্কা খেতে হয়েছিলো স্বাগতিক দেশকে। তাও লড়াই থেকে হারিয়ে যায় নি ভারতীয় শিবির। শুভমান গিলের দুর্দান্ত শতরান, বিরাট কোহলির অর্ধশতক বড় রানের ভিত গড়ে দেয়। সাফল্য পান শ্রেয়স আইয়ার’ও। পঞ্চাশ ওভারে ৩৫৬ রান তোলে তারা। ব্যাট হাতে শুরুটা চমৎকার করেছিলো ইংল্যান্ড। কিন্তু মাঝের ওভারগুলোয় পরপর উইকেট হারানোই কাল হলো তাদের জন্য। শেষমেশ ১৫.৪ ওভার বাকি থাকতেই অল-আউট হয়ে যায় তারা। থামতে হয় ২১৪ রানেই। ১৪২ রানের ব্যবধানে জিতে মাঠ ছাড়ে ‘মেন ইন ব্লু।’
Read More: IND vs ENG 3rd ODI: “এক ম্যাচেই দম শেষ…” ফের ব্যর্থ রোহিত, ভারত অধিনায়ককে চরম কটাক্ষ নেটজনতার !!
১) ব্যর্থ অধিনায়ক, শুরুতেই আউট রোহিত-
দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই সাজঘরে ফেরেন রোহিত শর্মা। মার্ক উডের বল ভারত অধিনায়কের ব্যাটের বাইরের কোণা স্পর্শ করে জমা পড়ে উইকেটরক্ষক ফিল সল্টের দস্তানায়। কটকে গত ম্যাচে শতরান করেছিলেন রোহিত। আজ ১ রানের বেশী এলো না তাঁর ব্যাট থেকে।
২) চমৎকার জুটি শুভমান-কোহলির-

ভারত যখন প্রথম উইকেট হারিয়েছিলো, তখন স্কোরবোর্ডে ছিলো মাত্র ৬ রান। এরপর শুভমান গিল ও বিরাট কোহলির ব্যাটে ভর করে লড়াইতে ফেরে ‘মেন ইন ব্লু।’ ১১৬ রানের দুর্দান্ত পার্টনারশিপ গড়েন দু’জনে। বাংলাদেশ, নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে পরপর তিনটি টেস্ট সিরিজে রানের মুখ দেখেন নি কোহলি। চলতি সিরিজেও কটকে আউট হয়েছিলেন ৫ রান করেই। আজ ওডিআই কেরিয়ারের ৭৩তম অর্ধশতকটি করেন তিনি। ৫৫ বলে ৫২ করে ফেরেন সাজঘরে। টানা তৃতীয় ম্যাচে বড় রান পেলেন শুভমান’ও।
৩) শতরানের শিখরে শুভমান গিল-

ভিভিএস লক্ষ্মণ, রোহিত শর্মা’র জন্য ইডেন গার্ডেন্স যেমন স্পেশ্যাল, ঠিক তেমনই আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের সাথে যেন বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে শুভমান গিলের। আইপিএলে গুজরাত টাইটান্সের হয়ে খেলেন তিনি। এই মাঠে প্রচুর রান করেছেন তরুণ তুর্কি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও তিন ফর্ম্যাটেই এখানে শতরানের নজির গড়লেন তিনি। আজ ১০২ বলে ১১২ করে খেলে টিম ইন্ডিয়ার বড় রানের ভিত গড়ে দেন তিনি। দ্রুততম ক্রিকেটার হিসেবে পেরোলেন ২৫০০ রানের মাইলস্টোন। পঞ্চাশ ওভারের ফর্ম্যাটে তাঁর শতকের সংখ্যা দাঁড়ালো ৭।
৪) ব্যাট হাতে উজ্জ্বল শ্রেয়স আইয়ার-
অগস্টে শ্রীলঙ্কা সফরের পর বেশ কয়েক মাস জাতীয় দলের আশেপাশেও দেখা যায় নি শ্রেয়স আইয়ারকে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রত্যাবর্তনটা বেশ ভালোই হলো তাঁর। নাগপুরে করেছিলেন ৫৯, কটকে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিলো ৪৪ রান। আজ আহমেদাবাদের মাঠেও ধুন্ধুমার ইনিংস খেললেন তিনি। মাত্র ৬৪ বলে ৮টি বাউন্ডারি ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ৭৮ রান করেন তিনি। শুভমান গিলের সাথে শ্রেয়সের জুটি স্কোরবোর্ডে যোগ করলো ১০৪ রান।
৫) রানের পাহাড়ে টিম ইন্ডিয়া-

পছন্দের পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ২৯ বলে ৪০ করেন কে এল রাহুল। মাত্র ৯ বলে ১৭ করেন হার্দিক পান্ডিয়াও। লোয়ার অর্ডারে ওয়াশিংটন, অক্ষর, হর্ষিতদের কার্যকরী ক্যামিও নির্ধারিত ৫০ ওভারে টিম ইন্ডিয়ার স্কোর পৌঁছে দেয় ৩৫৬ রানে। ইংল্যান্ডের হয়ে ৪টি উইকেট পান আদিল রশিদ। ১টি করে উইকেট পান জো রুট, সাকিব মাহমুদ ও গাস অ্যাটকিনসন। এছাড়া দুটি উইকেট পেয়েছেন মার্ক উড।
৬) বিধ্বংসী সূচনা ইংল্যান্ডের-
ওয়ান ডে সিরিজের প্রত্যেকটি ম্যাচেই ঝড়ের গতিতে ইনিংস শুরু করেছে ইংল্যান্ড। আজ আহমেদাবাদেও তার অন্যথা হলো না। আর্শদীপ সিং, ওয়াশিংটন সুন্দর ও হর্ষিত রাণা’র বিরুদ্ধে আক্রমণের রাস্তা বেছে নিয়েছিলেন ফিল সল্ট ও বেন ডাকেট। মাত্র ৬ ওভারেই স্কোরবোর্ডে উঠে গিয়েছিলো ৬০ রান। একটা সময় ৩৫৭-এর লক্ষ্য’ও যথেষ্ট কিনা সেই সংশয় জাঁকিয়ে বসেছিলো টিম ইন্ডিয়া সমর্থকদের মধ্যে।
৭) ইংল্যান্ডকে জোড়া ধাক্কা দেন আর্শদীপ-

মহম্মদ শামি’কে রিজার্ভ বেঞ্চে রেখে আজ আর্শদীপ সিং-কে মাঠে নামিয়েছিলেন কোচ গৌতম গম্ভীর। ভারতকে প্রাথমিক সাফল্য এনে দেন বাম হাতি পেসারই। ইনিংসের সপ্তম ওভারের দ্বিতীয় বলে তিনি ফেরান বেন ডাকেটকে। ২২ বলে ৩৪ রান করে রোহিত শর্মা’র হাতে ধরা পড়েন বাম হাতি ওপেনার। নবম ওভারের চতুর্থ বলে ফেরান ফিল সল্টকে। ২১ বলে ২৩ করে অক্ষরের হাতে ক্যাচ তোলেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটার।
৮) বড় রান পায় নি মিডল অর্ডার-
দুই ওপেনার আউট হওয়ার পরেই ধীরে ধীরে ম্যাচ থেকে হারিয়ে যায় ইংল্যান্ড। ‘ওয়াইল্ড কার্ড এন্টি’ হিসেবে স্কোয়াডে যুক্ত করা হয়েছিলো টম ব্যান্টন’কে। আজ আহমেদাবাদে ৪১ বলে ৩৮ করেন তিনি। কিন্তু দায়িত্ব নিতে ব্যর্থ জো রুট, হ্যারি ব্রুক’রা। যথাক্রমে ২৪ ও ১৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন দু’জনে। ভারতের মাঠে পঞ্চাশ ওভারের ফর্ম্যাটে অধিনায়ক বাটলারের হতাশাজনক পারফর্ম্যান্স অব্যাহত। আজ ৬ করে হর্ষিত রাণা’র শিকার হন তিনি। রান পান নি লিয়াম লিভিংস্টোন’ও। ৯ করে স্টাম্পড হন তিনি।
৯) ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ ভারতের-

৩১তম ওভারেই আট উইকেট হারিয়ে বসেছিলো ইংল্যান্ড। ভারত যে জিতবে তা দিনের আলোর মত পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিলো তখনই। এরপরও কিছুক্ষণ প্রতিরোধ চালিয়ে গেলেন গাস অ্যাটকিনসন ও সেই লড়াই অবশ্য যথেষ্ট হয় নি। ১৯ বলে ৩৮ রান করে শেষমেশ অক্ষরের বলে বোল্ড হন তিনি। ২১৪ রানে থামে ইংল্যান্ডের ইনিংস। ভারতের হয়ে আজ ২টি করে উইকেট নিলেন আর্শদীপ, হর্ষিত, অক্ষর ও হার্দিক। ১টি করে উইকেট ওয়াশিংটন সুন্দর ও কুলদীপের।