IND vs ENG: লিডসে চার দিন ইংল্যান্ডের সাথে সমানে সমানে পাল্লা দিয়েছিলো তরুণ ভারতীয় দল। কিন্তু পঞ্চম দিনে আর চাপ সামলাতে পারে নি তারা। বোলিং ব্যর্থতার শিকার হয়ে ম্যাচ কার্যত উপহার দিয়েছিলো প্রতিপক্ষকে। সেই ভুল থেকে তারা যে শিক্ষা নিয়েছে তার প্রমাণ এজবাস্টনে দিলেন শুভমান গিল’রা। জসপ্রীত বুমরাহবিহীন বোলিং লাইন-আপ আদৌ ইংল্যান্ডের ২০ উইকেট তুলতে পারবে কিনা ম্যাচ শুরুর আগে তা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন বিশেষজ্ঞরা। চ্যালেঞ্জটা গ্রহণ করেছিলেন মহম্মদ সিরাজ ও আকাশ দীপ। তাঁদের গতি ও স্যুইং-এর সামনেই শেষমেশ আত্মসমর্পণ করতে হলো বেন স্টোকসদের। পঞ্চম দিনে্র সকালে বৃষ্টি আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছিলো স্বাগতিক দেশের জন্য। দেরীতে শুরু হয় খেলা। বাদ গিয়েছিলো ১০ ওভারও। কিন্তু কিছুতেই আজ রোখা গেলো না টিম ইন্ডিয়াকে। ৩৩৬ রানের ব্যবধানে ম্যাচ জিতেই মাঠ ছাড়লো তারা।
Read More: “ভাঙলো ইংরেজদের গর্ব…” এজবাস্টনে ইতিহাস গড়লো টিম ইন্ডিয়া, স্টোকসদের ৩৩৬ রানে হারিয়ে শিরোনামে টিম ইন্ডিয়া !!
অনবদ্য জয় ভারতের-

গতকাল প্রতিপক্ষকে চতুর্থ ইনিংসে ৬০৮ রানের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিলো টিম ইন্ডিয়া (IND vs ENG)। ইংল্যান্ডের ধুন্ধুমার ‘বাজবল’-এর পক্ষেও যে এই রান তাড়া করে জেতা সম্ভব নয় তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিলো তখনই। তাদের সামনে চ্যালেঞ্জ ছিলো উইকেট বাঁচিয়ে রেখে ম্যাচ ড্র-এর দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। কিন্তু সেই সুযোগই ‘থ্রি লায়ন্স’কে দিলেন না ভারতীয় বোলাররা। গতকাল ইনিংসের শুরুতেই জ্যাক ক্রলি’কে ফিরিয়েছিলেন মহম্মদ সিরাজ (Mohammed Siraj)। খেলা শেষ হওয়ার আগে দু’টি অনবদ্য ডেলিভারিতে বেন ডাকেট ও জো রুটকে সাজঘরের পথ দেখিয়েছিলেন আকাশ দীপ। পঞ্চম দিনের সকালেও ডিউক বল হাতে জ্বলে উঠতে দেখা গেলো বাংলার ফাস্ট বোলারকে। সিম পজিশনে নিখুঁত থেকে বাজিমাত করে গেলেন তিনি। প্রথম সেশনেই আউট করেন অলি পোপ ও হ্যারি ব্রুক’কে। আকাশের জোড়া ধাক্কাতেই ব্যাকফুটে চলে যায় ইংল্যান্ড (IND vs ENG)।
জেইমি স্মিথ’কে সাথে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েছিলেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস (Ben Stokes)। কিন্তু এজবাস্টনকে আরও একটা হেডিংলে হতে দেন নি ওয়াশিংটন সুন্দর। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির ঠিক আগের ওভারে তাঁর ডেলিভারি খুঁজে নেয় স্টোকসের প্যাড। ৩৩ করে তিনি ফিরতেই মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলো ম্যাচের (IND vs ENG) ভবিতব্য। দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে প্রসিদ্ধের শিকার হন ক্রিস ওকস। ৭ করেন তিনি। ব্যাট হাতে দুর্দান্ত লড়াই করলেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটার জেইমি স্মিথ। কিন্তু কাজে এলো না তাঁর ৮৮ রান। আকাশ দীপের (Akash Deep) বলে ওয়াশিংটন সুন্দরের হাতে ধরা পড়েন তিনি। ৬৪তম ওভারে যখন জশ টাং-কে আউট করেন রবীন্দ্র জাদেজা, ততক্ষণে জয়ের গন্ধ পেতে শুরু করেছে ভারত। শেষমেশ আকাশের বলে ব্রাইডন কার্স শুভমান গিলের হাতে ধরা পড়তেই তৈরি হলো ইতিহাস। এজবাস্টনে প্রথমবার ম্যাচ জিতলো ‘মেন ইন ব্লু।’
মেঘলা এজবাস্টনে উজ্জ্বল ভারতের আকাশ-

এজবাস্টনে দুই ইনিংস মিলিয়ে ৪৩০ রান করেছেন শুভমান গিল। দ্বিতীয় ভারতীয় হিসেবে একই টেস্টে দ্বিশতক ও শতরানের নজির গড়েছেন। আজ সাফল্যের দিনে তাঁর লাইমলাইটে ভাগ বসালেন বাংলার পেসার আকাশ দীপ’ও (Akash Deep)। প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। পেতে পারতেন ফাইফার’ও। “আমি কি অফস্টাম্পের বাইরে বোলিং করব? যাতে তোর পাঁচ উইকেট হয়?” প্রস্তাব দিয়েছিলেন মহম্মদ সিরাজ। কিন্তু ব্যক্তিগত মাইলস্টোন নয় বরং দলীয় স্বার্থ মাথায় রেখে আকাশ বলেছিলেন, “না! তুমি উইকেট নেওয়ার চেষ্টা করো।” শোয়েব বশির সিরাজের শিকার হওয়ায় সেযাত্রায় পাঁচ উইকেট ফসকে গিয়েছিলো তাঁর। কিন্তু সেই আক্ষেপ দ্বিতীয় ইনিংসে পুষিয়ে দিলেন ক্রিকেট ঈশ্বর। পাঁচ নয়, ছয় উইকেট নিয়ে মাঠ ছাড়লেন আকাশ। দুই ইনিংস মিলিয়ে তাঁর নামের পাশে ১০ উইকেট। লর্ডসের লাইন-আপে যেন এখনই নিজের নামটা লিখে ফেললেন বাংলার তারকা।