IND vs ENG: এজবাস্টনে অব্যাহত ভারতের ব্যাটিং বিক্রম। গতকাল দিনের শেষে ২৪৪ রানে এগিয়ে ছিলো তারা। সেই ভিতের উপর আজ ফের একবার ইমারত বানাতে দেখা গেলো ‘মেন ইন ব্লু’কে। প্রথম সেশনের শুরুতেই করুণ নায়ারকে ফিরিয়ে ইংল্যান্ডকে (IND vs ENG) খানিক স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন ব্রাইডন কার্স। কিন্তু সেই স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পর্যবসিত হতে বেশী সময় লাগে নি। প্রাথমিক প্রতিরোধ গড়েছিলেন কে এল রাহুল। ৫৫ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। এরপর ঢাল হয়ে দাঁড়ান অধিনায়ক শুভমান গিল। ঋষভ পন্থ ও রবীন্দ্র জাদেজাকে সঙ্গে নিয়ে স্টোকসবাহিনীকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেন তিনি। মন্থর ক্রিকেট নয়, বরং ঝড়ের গতিতে রান তোলার স্ট্র্যাটেজি গ্রহণ করেছিলো ভারত। ৬ উইকেটের বিনিময়ে ৪২৭ তুলে ডিক্লেয়ার করে তারা। ইংল্যান্ডের জন্য লক্ষ্য দাঁড়ায় ৬০৮। রান তাড়া করতে নেমে ইতিমধ্যেই তিন উইকেট খুইয়েছে তারা। স্কোরবোর্ডে ৭২।
Read More: IND vs ENG 2nd Test: আইসিসি’র নিয়ম ভেঙে বিতর্কে শুভমান, হতে পারেন নির্বাসিত !!
রেকর্ডের স্রোত শুভমানের ব্যাটে-

স্বপ্নের ফর্মে শুভমান গিল (Shubman Gill)। লিডসে শতরান করেছিলেন ভারতের নবনির্বাচিত অধিনায়ক। এজবাস্টনেও প্রথম ইনিংসে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিলো ২৬৯ রান। দ্বিতীয় ইনিংসেও তাঁকে রোখার ফর্মূলা খুঁজে বের করতে রীতিমত হিমশিম খেলো ইংল্যান্ড। করুণ নায়ার আউট হওয়ার পরে ক্রিজে এসেছিলেন শুভমান। তৃতীয় সেশনে সাজঘরে ফেরার আগে ১৬১ রানের আরেকটি অনবদ্য ইনিংস খেললেন তিনি। এই সিরিজ শুরুর আগে ইংল্যান্ডের মাঠে (IND vs ENG) ৩টি টেস্ট খেলে তাঁর ঝুলিতে ছিলো ৮৮। ব্যাটিং গড় ছিলো ১৪.৬৬। তা নিয়ে বিস্তর সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছিলো শুভমানকে। তবে যাবতীয় দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ব্যাট হাতেই মিটিয়ে দিয়েছেন বছর ২৫-এর তরুণ। শেষ চার টেস্ট ইনিংসে তাঁর সংগ্রহ ৫৮৫। গড় ১৪৬.২৫। শেষ কবে লাল বলের ফর্ম্যাটে এহেন দাপট দেখিয়েছেন কোনো ব্যাটার? মনে পড়ছে না নেটজনতার।
প্রথম ইনিংসে একঝাঁক রেকর্ড গড়েছিলেন শুভমান (Shubman Gill)। আজ ১৬১ রান করে ফের একবার ক্রিকেট ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখলেন ফাজিলকার তরুণ। দ্বিতীয় ভারতীয় হিসেবে কোনো টেস্টের দুই ইনিংসে শতরান ও দ্বিশতরান করার নজির গড়লেন তিনি। বসলেন সুনীল গাওস্করের পাশে। ভারতীয়দের মধ্যে কোনো একটি টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হওয়ার রেকর্ড’ও আপাতত তাঁর দখলে। টেস্ট ইতিহাসে এক্ষেত্রে তাঁর চেয়ে এগিয়ে কেবল গ্রাহাম গুচ। ১৯৯০ সালে লর্ডসে ভারতের বিপক্ষে দুই ইনিংস মিলিয়ে ৪৫৬ করেছিলেন ইংল্যান্ড কিংবদন্তি। গিল থামলেন ৪৩০ রানে। অ্যালান বর্ডারের পর দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে কোনো টেস্টের দুই ইনিংসেই ১৫০-এর বেশী রান করার নজিরও স্থাপন করলেন তিনি। আজ রাহুল, পন্থ, জাদেজারা অর্ধশতক করলেও যাবতীয় লাইমলাইট কেড়ে নিয়ে গেলেন শুভমানই।
নড়বড়ে বাজবল, জয়ের গন্ধ পাচ্ছে ভারত-

“ওরা যত রানেরই লক্ষ্যমাত্রা বাঁধুক না কেন, আমরা জয়ের জন্যই ঝাঁপাবো,” গতকাল জানিয়েছিলেন হ্যারি ব্রুক। ইংল্যান্ডের বাজবল’কে মাথায় রেখেই সম্ভবত ডিক্লেয়ার করতে খানিক দেরী করেন শুভমান গিল। কিন্তু বুমরাহবিহীন বোলিং লাইন-আপ যে প্রতিপক্ষকে বেগ দিতে তৈরি তা চতুর্থ ইনিংসের শুরুতেই প্রমাণ করে দেন মহম্মদ সিরাজ (Mohammed Siraj)। তাঁর বলে ড্রাইভ মারতে গিয়ে পয়েন্টে সাই সুদর্শনের হাতে ধরা পড়েন জ্যাক ক্রলি। খাতা খোলার সুযোগটুকুও পান নি তিনি। ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন নি বেন ডাকেট’ও। আকাশ দীপের (Akash Deep) বলে প্লেইড-অন হন তিনি। জো রুটকেও থিতু হতে দেন নি বাংলার পেসার। তাঁর অনবদ্য আউটস্যুইং ছিটকে দেয় ইংল্যান্ড কিংবদন্তির অফস্টাম্প। এজবাস্টনে আজ অবধি কখনও কোনো টেস্ট ম্যাচ জিততে পারে নি ‘মেন ইন ব্লু।’ পরিসংখ্যান বদলে ফেলতে পঞ্চম দিনে সিরাজ-আকাশ-প্রসিদ্ধদের প্রয়োজন শুধু ৭টি উইকেট।