IND vs BAN: গ্বালিয়রে সিরিজের প্রথম টি-২০ ম্যাচে বাংলাদেশকে সহজেই পরাজিত করেছে টিম ইন্ডিয়া (IND vs BAN)। ৪৯ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে ১-০ এগিয়ে গিয়েছে তারা। দিল্লীতে আজ জিততে পারলেই ঘরে আসবে সিরিজ জয়ের ট্রফি। সেই লক্ষ্য সামনে রেখেই মাঠে নেমেছে দল। টসের মুদ্রা আজ পড়েছে বাংলাদেশের পক্ষে। প্রথম বোলিং-এর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। পিছিয়ে পড়া টাইগাররা আজ শুরুটা বেশ ভালো করেছিলেন।
তাস্কিন, মুস্তাফিজ ও তানজিম সাকিব দ্রুত তুলে নিয়েছিলেন তিনটি উইকেট। দুই ওপেনার-সঞ্জু স্যামসন, অভিষেক শর্মা ও তিনে ব্যাটিং করতে নামা সূর্যকুমার যাদব ব্যর্থ হওয়ায় একটা সময় ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিলো ‘মেন ইন ব্লু।’ তবে নীতিশ কুমার রেড্ডি ও রিঙ্কু সিং-এর যুগলবন্দী ম্যাচে ফেরায় টিম ইন্ডিয়া’কে। শেষে হার্দিক পান্ডিয়ার ‘ফিনিশিং টাচ’-এ নির্ধারিত ২০ ওভারে ভারতের স্কোরবোর্ডে ৯ উইকেটের বিনিময়ে ২২১ রান।
Read More: IND vs BAN 2nd T20i: “সূর্যে গ্রহণ লেগেছে…” দ্বিতীয় টি-২০তে ব্যর্থ ভারত অধিনায়ক, আক্ষেপ নেটজনতার !!
বাংলাদেশকে এগিয়ে দিয়েছিলো পেস ত্রয়ী-
যশস্বী জয়সওয়াল বা শুভমান গিল নেই। তাঁদের অনুপস্থিতিতে ভারতীয় দলের হয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে (IND vs BAN) ওপেনিং করছেন সঞ্জু স্যামসন (Sanju Samson) ও অভিষেক শর্মা (Abhishek Sharma)। গত ম্যাচে গ্বালিয়রে আশা জাগিয়েও বেশীদূর এগোতে পারে নি তাঁদের ওপেনিং জুটি। আজ অর্থাৎ দ্বিতীয় ম্যাচেও দেখা গেলো একই ছবি। মেহদী হাসান মিরাজের হাতে প্রথম ওভারে বল তুলে দিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। কাজে আসে নি সেই ফাটকা। তিনটি বাউন্ডারি শুরুতেই হজম করেন মেহদী (Mehidy Hasan Miraz)। দু’টি মারেন সঞ্জু স্যামসন।একটি আসে অভিষেকের ব্যাট থেকে। টাইগারবাহিনী কামব্যাক করে দ্বিতীয় ওভারে। গতির হেরফের করে ভারতীয় ব্যাটারদের চাপে ফেলেছিলেন তাস্কিন আহমেদ। শেষমেশ তাঁর ওভারের শেষ ডেলিভারিতে স্লোয়ারের ফাঁদে পা দিয়ে উইকেট হারান সঞ্জু। ৯ রানের বেশী করতে পারেন নি তিনি।
সম্ভাবনাময় তরুণ অভিষেক শর্মা’ও আজ ব্যর্থ। গত ম্যাচে দুর্ভাগ্যজনক ভাবে হয়েছিলেন রান-আউটের শিকার। আজ তানজিম হাসান সাকিবের (Tanzim Hasan Sakib) বলে বোল্ড হয়ে মাঠ ছাড়তে হলো বাম হাতি ওপেনারকে। ৩টি বাউন্ডারির সাহায্যে ১১ বলে ১৫ করেন তিনি। ভারতীয় ব্যাটিং-এর তুরুপের তাস সুর্যকুমার যাদব’ও (Suryakumar Yadav) রান পেলেন না আজ। অধিনায়ককে নড়বড়ে দেখিয়েছিলো শুরু থেকে। মুস্তাফিজুর রহমানকে (Mustafizur Rahman) এক্সট্রা কভার অঞ্চল দিয়ে একটি বাউন্ডারি হাঁকালেও পরের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন। মন্থর গতির কাটার বুঝতে পারেন নি তিনি। ব্যাটের নীচের দিকে লাগে বল। সহজ ক্যাচ ধরতে কোনোরকম সমস্যা হয় নি নাজমুল হোসেন শান্ত’র। ১০ বলে ৮ করে। তিনি যখন সাজঘরে ফিরছেন, ৫.৩ ওভারে তখন ৩ উইকেটের বিনিময়ে ভারতের সংগ্রহ ৪১।
বিধ্বংসী নীতিশ-রিঙ্কু, রানের পাহাড়ে ভারত-
কঠিন পরিস্থিতিতে টিম ইন্ডিয়ার ব্যাটিং-এর হাল ধরেন নীতিশ কুমার রেড্ডি (Nitish Kumar Reddy) ও রিঙ্কু সিং। সবে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলছেন নীতিশ, কিন্তু চারে নেমে যেভাবে ব্যাট করলেন তিনি, তাতে রীতিমত পোড়খাওয়া খেলোয়াড়দের ছায়া দেখছে ক্রিকেটমহল। অহেতুক ঝুঁকি নেওয়ার পথে হাঁটেন নি তিনি। তা সত্ত্বেও অর্ধশতক পেরোন মাত্র ২৭ বলে। চার-ছক্কার ফুলঝুড়ি দেখা গেলো বাম হাতি ব্যাটারের থেকে। যে গতিতে এগোচ্ছিলেন তাতে অভিষেক শর্মা’র মতই নিজের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক ম্যাচে টি-২০ শতরানের নজিরও গড়ে ফেলতে পারতেন। কিন্তু মুস্তাফিজুরের বলে ধরা পড়েন মেহদী হাসান মিরাজের হাতে। ৩৪ বলে ৭৪ রানের চমৎকার ইনিংস খেললেন তিনি। যোগ্য সঙ্গত রিঙ্কু সিং-এর (Rinku Singh)। এর আগেই ব্যাট হাতে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেছেন তিনি। উত্তরপ্রদেশের তরুণ আজ করলেন ২৯ বলে ৫৩।
নীতিশ-রিঙ্কু’র ১০৮ রানের জুটি ম্যাচের রাশ তুলে দেয় ভারতের হাতে। ব্যাট হাতে গত ম্যাচে ১৬ বলে অপরাজিত ৩৯ করেছিলেন হার্দিক পান্ডিয়া (Hardik Pandya)। আজও জ্বলে উঠলেন তিনি। ১৯ বলে তিনি করেন ৩২ রান। টিম ইন্ডিয়ার স্কোর ২০০ পেরোনোর অন্যতম স্থপতি তিনিই। ৬ বলে ১৫ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলেন রিয়ান পরাগ’ও (Riyan Parag)। বাংলাদেশের হয়ে ২টি করে উইকেট পেয়েছেন তানজিম হাসান সাকিব ও মুস্তাফিজুর রহমান। কিন্তু তাঁরা রান খরচ করেছেন যথাক্রমে ৫০ ও ৩৬। স্পিনার রিশাদ হোসেন (RIshad Hossain) ৩ উইকেট পেলেও ৪ ওভারে ১৩.৮০ ইকোনমি রেটে ৫৫ রান খরচ করেছেন। রান মহোৎসবের মাঝে ব্যতিক্রম কেবল তাস্কিন আহমেদ (Taskin Ahmed)। অভিজ্ঞ পেসার গতির হেরফেরে রুখে দেন ভারতীয় ব্যাটারদের আগ্রাসন। ৪ ওভারে কেবল ১৬ রান খরচ করে ২ উইকেট নিয়েছেন তিনি।