আর ঠিক পাঁচ দিন পর মাঠে ফিরছে টিম ইন্ডিয়া। টেস্ট সিরিজে প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ (IND vs BAN)। চেন্নাইয়ের এম এ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে রয়েছে প্রথম টেস্ট ম্যাচটি। ২৬ তারিখ থেকে দ্বিতীয়টি আয়োজিত হওয়ার কথা রয়েছে কানপুরের গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে। লাল বলের ফর্ম্যাটে এর আগে কখনও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে (IND vs BAN) হারের মুখ দেখে নি ভারত। ১৩টি টেস্টের মধ্যে জয় এসেছে ১১ ম্যাচে, আর বাকি ২টি ড্র হয়েছে।
পরিসংখ্যানের নিরিখে অনেক এগিয়ে থাকা সত্ত্বেও টাইগার্সদের হাল্কাভাবে নিতে রাজী নয় বিসিসিআই। সম্প্রতি পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ। সেই আত্মবিশ্বাস সঙ্গী করেই মাঠে নামবেন শাকিব, লিটনরা। ঘরের মাঠে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখতে তৈরি ‘মেন ইন ব্লু’ও। শক্তিশালী দল গঠন করা হয়েছে প্রথম টেস্ট ম্যাচের জন্য। কোহলি, রোহিত সমৃদ্ধ স্কোয়াডের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন নেই কারও, কিন্তু কোচ নির্বাচন নিয়ে এখনও সন্দিহান কেউ কেউ।
Read More: W, W, W, W, W…অনবদ্য বোলিং অংশুল কম্বোজের, প্রাণহীন পিচেও ছোটালেন গতির আগুন !!
বড় পরীক্ষা কোচ গম্ভীরের-
গত ৯ জুলাই ভারতীয় দলের নতুন কোচ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিলো গৌতম গম্ভীরের (Gautam Gambhir) নাম। রাহুল দ্রাবিড়ের মত কিংবদন্তির জুতোয় পা গলানোর কাজটা যে সহজ হবে না তা নিশ্চয়ই জানতেন তিনি। তবুও এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করা থেকে পিছিয়ে আসেন নি তিনি। প্রথমবার টিম ইন্ডিয়ার (Team India) ডাগ-আউটে বসেন শ্রীলঙ্কা সফরে। কুড়ি-বিশের সিরিজে তাঁর প্রশিক্ষণাধীন ভারতীয় দলের পারফর্ম্যান্স আশা জাগিয়েছিলো সমর্থকদের মনে। যেভাবে অলরাউন্ডারের সংখ্যা বাড়ানোর দিকে জোর দিয়েছিলেন তিনি, চমক দিয়েছিলেন বোলিং পরিবর্তনের সিদ্ধান্তে, তাকে কুর্নিশ জানিয়েছিলেন অনেকেই। কিন্তু মোহভঙ্গ হয় ওডিআই’তে। ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে অহেতুক কাটাছেঁড়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে।
২৭ বছর পর লঙ্কানদের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক ওডিআই সিরিজ খুইয়ে বেশ চাপে পড়তে হয়েছে গম্ভীরকে। আসন্ন ভারত বনাম বাংলাদেশ (IND vs BAN) টেস্ট সিরিজ তাই বড় পরীক্ষা তাঁর সামনে। চেন্নাই ও কানপুরে জোড়া জয় তাঁকে যোগাতে পারে লাইফলাইন। একই সাথে টিম ইন্ডিয়াকেও এগিয়ে দিতে পারে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের (WTC) ফাইনালের দিকে। গম্ভীরের সাথে তিন বছরের চুক্তি করেছে বোর্ড। চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়ার মত হেভিওয়েট দলের চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করে রয়েছে দলের জন্য। যদি বাংলাদেশের বিপক্ষে (IND vs BAN) কোনো অঘটন ঘটে, তাহলে সেই দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি উপেক্ষা করে তাঁকে সরিয়েও দেওয়া হতে পারে।
বোলিং কোচ বাছাই নিয়ে রয়েছে সংশয়-
রাহুল দ্রাবিড়ের (Rahul Dravid) সাথে সাথে সরে দাঁড়িয়েছেন তাঁর কোচিং স্টাফের অধিকাংশ সদস্য’ও। ব্যাটিং কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বিক্রম রাঠৌর (Vikram Rathour), বোলিং কোচের পদে আর নেই পরশ মামব্রে। হেড কোচ গম্ভীরকে তাঁর সাপোর্ট স্টাফ বাছাই করে নেওয়ার পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছিলো বিসিসিআই। সেই মত সহকারী হিসেবে অভিষেক নায়ার (Abhishek Nayar) ও রায়ান টেন দুশখাতেকে (Ryan ten Doeschate) নির্বাচন করেছেন তিনি। দুজনেই কলকাতা নাইট রাইডার্সে গম্ভীরের সাথে কাজ করেছেন। এছাড়া ফিল্ডিং কোচ হিসেবে পুনর্নবীকরণ করা হয়েছে টি.দিলীপের চুক্তি। বোলিং কোচের পদ খালি ছিলো বেশ কিছুদিন। পরে দক্ষিণ আফ্রিকার মর্ণি মর্কেলকে (Morne Morkel) এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মর্কেলের সাথেও লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টসে কাজ করেছেন গম্ভীর।
হেড কোচের ‘স্বজনপোষণ’ নিয়ে ইতিমধ্যই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এর আগে লক্ষ্ণৌ ফ্র্যাঞ্চাইজি (LSG) ও পাকিস্তান জাতীয় দলের বোলিং পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করেছেন মর্কেল (Morne Morkel)। কিন্তু দুই শিবিরই পায় নি আহামরি সাফল্য। বোলিং ভুগিয়েছে তাদের। ভারতীয় ক্রিকেটজনতার দাবী, টিম ইন্ডিয়ার বোলিং কোচ হিসেবে আদর্শ হতে পারতেন আশিষ নেহরা। এর আগে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (RCB) ও গুজরাত টাইটান্সের (GT) কোচিং স্টাফে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। নেহরার (Ashsish Nehra) প্রশিক্ষণে একবার আইপিএল জিতেছে গুজরাত, একবার হয়েছে রানার্স। শামি, রশিদ খান’দের মত বিশ্ববন্দিত বোলারদের সাথে কাজ করেছেন তিনি। ভারত বনাম বাংলাদেশ সিরিজেও (IND vs BAN) তাঁর পরামর্শে অধিক উপকৃত হতে পারতেন বুমরাহ, সিরাজ’রা, মনে করছেন সমর্থকদের একাংশ।