IND vs BAN: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ জিতে যখন ভারতে পা দিয়েছিলেন বাংলাদেশী ক্রিকেটাররা, তখন অনেকেই আশা করেছিলেন যে খানিক লড়াই দেখা যাবে টাইগারবাহিনীর তরফে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেলো সম্পূর্ণ উল্টোচিত্র। উপমহাদেশের দুই ক্রিকেটীয় শক্তির মধ্যেকার গুণমানের তফাৎ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে গেলো বাংলাদেশের এই ভারতসফর। টেস্টে দুই ম্যাচের দুটিতেই লজ্জাজনক হারের সম্মুখীন হয়েছেন লিটন-শান্ত’রা। কানপুরে মাত্র দুইদিনে টেস্ট হারতে হয়েছে তাঁদের। টি-২০তেও বিন্দুমাত্র উন্নতি দেখা গেলো না বাংলাদেশের। গ্বালিয়র ও দিল্লীতে বড় ব্যবধানে হেরে আগেই সিরিজ খুইয়ে বসেছিলো পড়শি দেশ। আজ হায়দ্রাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে সঞ্জু স্যামসন ও সূর্যকুমার যাদবের ব্যাটিং মাস্টারক্লাসের সুবাদে কুড়ি-বিশের ফর্ম্যাটেও হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পথে তারা।
Read More: IND vs BAN 3rd T20i: ৪, ৬, ৪, ৬, ৪…সূর্যের তেজে ছারখার বাংলাদেশ, হায়দ্রাবাদে ঝড় তুললেন ভারত অধিনায়ক !!
সঞ্জু’র শতরান, ঝোড়ো ইনিংস সূর্যেরও-
দিনের শুরুটা দেখে গোটা দিনটা কেমন যাবে তা বলে দেওয়া যায়। এহেন প্রবাদ রয়েছে ঠিকই, কিন্তু তা যে ধ্রুবসত্য নয় তা বোঝা গেলো আজ। টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং-এর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো টিম ইন্ডিয়া। তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেই অভিষেক শর্মা’কে ফিরিয়ে বড়সড় ধাক্কা দিয়েছিলেন তানজিম হাসান সাকিব। বাম হাতি ব্যাটার ফেরেন ৪ বলে ৪ করে। এরপরেই ক্রিজে আসেন সূর্যকুমার যাদব। উইকেটরক্ষক-ব্যাটার সঞ্জু স্যামসনের সাথে জুটি বেঁধে টিম ইন্ডিয়াকে রানের পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছে দিলেন তিনি। সঞ্জু ও সূর্য-আগাগোড়া আগ্রাসী ছিলেন দুজনেই। তাঁদের রোষের মুখে পড়ে কূলকিনারা খুঁজে পেলেন না বাংলাদেশী বোলাররা। সাকিব, তাস্কিন, মেহদী, রিশাদ, মাহমুদুল্লাহ-হাতে থাকা সকল অস্ত্রকেই ব্যবহার করে দেখেন টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু লাভ হয় নি কিছুই।
চার-ছক্কার ফুলঝুড়ি দেখা গেলো দুই ভারতীয় তারকার ব্যাটে। সাকিবকে পরপর তিনটি বাউন্ডারি ও একটি ছক্কা হাঁকালেন সূর্য। তাঁকেও ছাপিয়ে যান সঞ্জু স্যামসন। তরুণ স্পিনার রিশাদ হোসেনকে নিয়ে রীতিমত ছেলেখেলা করতে দেখা গেলো তাঁকে। দশম ওভারের প্রথম ডেলিভারিটি ডট হয়েছিলো। এরপর পাঁচটি বলকেই মাঠের বাইরে আছড়ে ফেললেন কেরলের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। কেরিয়ারের প্রথম আন্তর্জাতিক টি-২০ শতরানটি আজ এলো সঞ্জু’র ব্যাট থেকে। পিছিয়ে রইলেন না সূর্যকুমার’ও। চলতি সিরিজে রানের মধ্যে ছিলেন না তিনি। আজ সেই আক্ষেপ মিটিয়ে নিলেন। ২১তম অর্ধশতক এলো তাঁর ব্যাট থেকেও। দু’জনে ১৭৩ রানের বিশাল জুটি গড়ে বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় জল ঢেলে দেন আজ। ভারতের হয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ টি-২০ পার্টনারশিপ গড়লেন তাঁরা।
রানের পাহাড়ে টিম ইন্ডিয়া-
ব্যক্তিগত ১১১ রানের মাথায় আউট হন সঞ্জু স্যামসন। ১১টি চার ও ৮টি ছক্কা মারেন তিনি। এর কিছুক্ষণ পর উইকেট হারান সূর্য’ও। পঞ্চম টি-২০ শতরান পেলেন না তিনি। থামলেন ৩৫ বলে ৭৫ করেই। ১৯৬ ও ২০৬ রানের মাথায় পরপর দুই ‘সেট’ ব্যাটারকে হারিয়েও অবশ্য অ্যাকসিলারেটর থেকে পা সরায় নি টিম ইন্ডিয়া। রানের গতি অক্ষুণ্ণ রাখেন রিয়ান পরাগ ও হার্দিক পান্ডিয়া। এই ভারত বনাম বাংলাদেশ সিরিজে সেরা ছন্দে রয়েছেন হার্দিক। আজও জ্বলে উঠলেন তিনি। মাত্র ১৮ বলে করেন ৪৭। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রথম ব্যাটিং-এর সুযোগ পেয়ে রিয়ান’ও করেন ১৩ বলে ৩৪। ৭০ রানের জুটি গড়েন দুজনে। ৪ বলে ৮ করে অপরাজিত রইলেন রিঙ্কু সিং। ২০ ওভারে ভারত থামলো ৬ উইকেটের বিনিময়ে ২৯৭ রানে। নিজেদের টি-২০ ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের নজির আজ গড়লো টিম ইন্ডিয়া।