IND vs BAN: চেপকে বাংলাদেশকে রীতিমত গুঁড়িয়ে দিয়ে সিরিজে ১-০ এগিয়ে গিয়েছে ভারত (IND vs BAN)। কানপুরের দ্বিতীয় ম্যাচটিকে নিয়ে তাই উত্তেজনা বেড়েছে দুই দলের সমর্থকদের কাছেই। টিম ইন্ডিয়া যদি নিজেদের দাপট অব্যাহত রাখতে পারে তাহলে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের (WTC) ফাইনালের টিকিট প্রায় নিশ্চিত করে ফেলবে। অন্যদিকে পাকিস্তানকে হারিয়ে আসার পর যেভাবে ‘মেন ইন ব্লু’র বিপক্ষে মুখ থুবড়ে পড়েছেন টাইগাররা, তা মানতে পারছেন না অনুরাগীরা। স্রোতের বিপরীতে সাঁতার কেটে শক্তিশালী ভারতকে হারানো বা নিদেনপক্ষে রুখে দেওয়াও অত্যন্ত ইতিবাচক হতে পারে নাজমুল হোসেন শান্তদের জন্য। এই আবহেই আজ গ্রিন পার্কে শুরু হয়েছে ম্যাচ। ব্যাট-বলের দ্বৈরথ দেখতে ভীড়’ও জমিয়েছিলেন অনেকে। কিন্তু জুটেছে হতাশা। বুমরাহ, রোহিত, শাকিব বা মুশফিক না, প্রথম দিনে লাইমলাইট কেড়ে নিলো কেবল বৃষ্টি।
Read More: শুধু মাঠ নয়, বাইরেও বাংলাদেশি ‘টাইগার’ কে পিটিয়ে করলো ছাতু, হাসপাতালে করা হলো ভর্তি !!
প্রথম সেশনে চমৎকার বোলিং আকাশ দীপের-
বৃষ্টিতে আউটফিল্ড ভিজে থাকায় ম্যাচ শুরু হতেই বেশ দেরী হলো আজ। ভারতীয় সময় সকাল ৯টায় হওয়ার কথা ছিলো টস। প্রথম সেশনের সূচনা হওয়ার কথা ছিলো ৯টা ৩০ মিনিট থেকে। কিন্তু এক ঘন্টা পিছিয়ে যায় খেলা। প্রথম টেস্টে টসের মুদ্রা পড়েছিলো বাংলাদেশের পক্ষে। আজ জেতেন রোহিত শর্মা (Rohit Sharma)। প্রথমে বোলিং-এর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। কানপুরের উইকেট খানিক মন্থর, চটচটে হবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশ সেইমত দু’জন পেসারকে ছেঁটে ফেলেছে। একাদশে সুযোগ দিয়েছে অভিজ্ঞ তাইজুল ইসলাম’কে (Taijul Islam)। কিন্তু ভারত আস্থা রেখেছে তিন পেসারের স্ট্র্যাটেজিতেই। জসপ্রীত বুমরাহ, মহম্মদ সিরাজের পাশাপাশি এই ম্যাচেও মাঠে নেমেছেন বাংলার আকাশ দীপ (Akash Deep)। টসের সময়ই রোহিত জানান যে পিচের ভিজে ভাব ব্যবহার করতে চান পেস ব্যাটারিকে ব্যবহার করে।
প্রথম স্পেলে নিয়মিত উইকেট তোলেন জসপ্রীত বুমরাহ (Jasprit Bumrah)। কাজটা সহজ করে দেন বাকি বোলারদের জন্য। কিন্তু আজ চেনা ছকে এগোয় নি ভারত বনাম বাংলাদেশ টেস্ট। বুমরাহ’কে সাবধানী ভঙ্গিতে সামলাতে দেখা গিয়েছিলো দুই ওপেনার জাকির হাসান (Zakir Hasan) ও সাদমান ইসলাম’কে (Sadman Islam)। সাফল্য পান নি মহম্মদ সিরাজ’ও। শ্রীলঙ্কা সিরিজ থেকেই পড়তির দিকে তাঁর ফর্মের গ্রাফ। আরও একবার মুশকিল আসান হয়ে উঠলেন বাংলার আকাশ দীপ (Akash Deep)। আগের টেস্টের মত আজও প্রথম সেশনে তিনি তুলে নেন জোড়া সাফল্য। যশস্বী’র দুর্দান্ত ক্যাচে ফেরেন জাকির। ২৪ বলে ০ করলেন তিনি। আর ৩৬ বলে ২৪ করে ফেরেন সাদমান ইসলাম। বল তাঁর প্যাডে আছড়ে পড়লেও প্রথমে আউট দেন নি আম্পায়ার। রিভিউ’র সাহায্য নিয়ে সাফল্য ছিনিয়ে নেন আকাশ।
লড়ছেন মোমিনুল, বৃষ্টিই নিলো নির্ণায়ক ভূমিকা-
মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগে ২৬ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৭২ রান তুলতে সক্ষম হয়েছিলো বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সেশনে শুরুটা ভালো করেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত (Najmul Hossain Shanto)। চেন্নাইতে দ্বিতীয় ইনিংসে রান পাওয়ার পর কানপুরেও আত্মবিশ্বাসী দেখিয়েছে তাঁকে। বেশ কিছু বাউন্ডারিও আসে তাঁর ব্যাট থেকে। মোমিনুল হকের সাথে গড়ছিলেন কার্যকরী জুটিও। কিন্তু বাধ সাধলেন রবিচন্দ্রণ অশ্বিন (Ravichandran Ashwin)। বলের লাইন না বুঝেই রক্ষণাত্মক শট খেলতে গিয়ে ভারতীয় অফস্পিনারের পাতা ফাঁদে পা দেন শান্ত। লেগ বিফোরের আবেদনে সাড়া দিতে দেরী করেন নি আম্পায়ার। ৫৭ বলে ৩১ রান করেই ফিরতে হয় তাঁকে। বাংলাদেশী অধিনায়ককে ফিরিয়ে এশিয়াতে ৪২০টি টেস্ট উইকেটের মালিক হয়ে গেলেন অশ্বিন। এই মহাদেশে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারীদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে এলেন ভারতীয় কিংবদন্তি।
তৃতীয় উইকেট খোয়ানোর পর মোমিনুল হক (Mominul Haque) ও মুশফিকুর রহিম হাল ধরেন বাংলাদেশ ব্যাটিং-এর। দীর্ঘ সময় রানের মধ্যে নেই প্রাক্তন অধিনায়ক মোমিনুল। তাঁর ব্যাটিং স্টান্স থেকে ব্যাকলিফট-সব কিছু নিয়েই চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। আজ কঠিন পরিস্থিতিতে ঢাল হয়ে দাঁড়ালেন তিনিই। বুমরাহ, সিরাজ, আকাশ দীপ, অশ্বিনদের সামলে অপরাজিত রইলেন ৮১ বলে ৪০ রানে। অপরপ্রান্তে ১৩ বলে ৬ করে ক্রিজে রয়েছেন মুশফিকুর রহিম। অন্তত বিকেল সাড়ে চারটে অবধি ম্যাচ হওয়ার কথা কানপুরে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে বেলা আড়াইটের সময়েই মাঠ ছাড়তে হয় ক্রিকেটারদের। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেন আম্পায়াররা। শেষমেশ ৩টে নাগাদ প্রথম দিনের খেলা শেষ বলে ঘোষণা করা হয়। আপাতত ৩ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১০৭। আবহাওয়ার যা পূর্বাভাস তাতে আগামী দুই দিনও ম্যাচ কতটা এগোয় তা নিয়ে রয়েছে আশঙ্কা।