IND vs BAN: রাওয়ালপিন্ডির মাঠে পাকিস্তানকে ২-০ ফলে হারিয়েছিলো বাংলাদেশ (BAN)। বাবর আজমদের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় আত্মবিশ্বাসের চূড়ায় পৌঁছে দিয়েছিলো নাজমুল হোসেন শান্তদের। ভারতের বিরুদ্ধে নামার আগেও ‘অঘটন’-এর স্বপ্ন দেখেছিলেন তাঁরা। পড়শি দেশের সংবাদমাধ্যমের তরফ থেকেও হুঙ্কার ছিলো ‘মেন ইন ব্লু’র উদ্দেশ্যে। ম্যাচ শুরুর আগে চেন্নাইতে ভারত অধিনায়ক রোহিত (Rohit Sharma) এই সবকিছুর পরিপ্রেক্ষিতে কেবল বলেছিলেন, “ওদের মজা করতে দিন। আমরা নিজেদের খেলাতেই ফোকাস রাখছি।” সেদিন সাংবাদিক সম্মেলনে ‘ক্যাপ্টেন’ যা বলেছিলেন, তা আজ মাঠে করে দেখালেন ভারতীয় ক্রিকেটাররা। চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনেই নতিস্বীকার বাংলাদেশের। ২৮০ রানের বিশাল ব্যবধানে জিতে সিরিজে (IND vs BAN) ১-০ এগিয়ে গেলো টিম ইন্ডিয়া।
Read More: “ময়লা সাফ হলো…” চেপকে বাংলাদেশকে ২৮০ রানে পরাস্ত করে ইতিহাস গড়লো টিম ইন্ডিয়া, সমাজ মাধ্যমে শুরু হয়েছে চর্চা !!
শুরুটা ভালোই করেছিলেন শাকিব-শান্ত-
বাংলাদেশের সামনে ভারত (IND vs BAN) চতুর্থ ইনিংসে লক্ষ্যমাত্রা রেখেছিলো ৫১৫ রান। এই পর্বতসম ‘টার্গেট’ তাড়া করে জয় ছিনিয়ে নেওয়া টাইগারদের জন্য যে প্রায় অসম্ভব তা জানতেই সকলেই। তবুও প্রথম ইনিংসে মুখ থুবড়ে পড়ার পর আদৌ লড়াই উপহার দিতে পারেন কিনা বাংলাদেশ ব্যাটাররা, নজর ছিলো সেদিকেই। তৃতীয় দিন মন্দ আলোর জন্য খেলা বন্ধ হয়ে যায় নির্দিষ্ট সময়ের কিছু আগেই। স্কোরবোর্ডে ছিলো ৪ উইকেটের বিনিময়ে ১৫৮ রান। জাকির হাসান, সাদমান ইসলাম, মোমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিম’কে সাজঘরে ফেরাতে সক্ষম হয়েছিলো টিম ইন্ডিয়া (Team India)। অশ্বিন-বুমরাহদের আক্রমণ প্রতিরোধ করে বাংলাদেশকে লড়াইতে টিকিয়ে রেখেছিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত (Najmul Hossain Shanto) ও বহু যুদ্ধের নায়ক শাকিব আল হাসান। শান্ত অপরাজিত ছিলেন ৫১ রানে। শাকিবের সংগ্রহে ছিলো ৫ রান।
চতুর্থ দিনের সকালে ভারতীয় পেসারদের বিরুদ্ধে শুরুটা ভালোই করেছিলেন বাংলাদেশী ব্যাটাররা। উইকেট হারান নি। সাথে নিয়মিত রান’ও তুলতে থাকেন তাঁরা। সচল ছিলো স্কোরবোর্ড। বড় পার্টনারশিপ গড়ে ভারতকে অপেক্ষা করানোর প্রয়াস ছিলো শান্ত ও শাকিবের (Shakib Al Hasan)। হেড পজিশন সঠিক রাখার জন্য দাঁতে একটি ব্যান্ড চেপে ধরে ব্যাটিং করছেন শাকিব আল হাসান। চোখের সমস্যা রয়েছে, আঙুলেও নাকি সমস্যা তাঁর, তবুও কঠিন পরিস্থিতিতে ভরসা যোগানোর আপ্রাণ চেষ্টা করলেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার। অপর প্রান্তে শান্ত’ও (Najmul Hossain Shanto) বুমরাহ-সিরাজদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু বাউন্ডারি হাঁকান দিনের প্রথম সেশনে। বিপত্তি ঘটে ইনিংসের ৫২তম ওভারে। অশ্বিনের বলে শাকিব ক্যাচ তুলে দেন যশস্বী জয়সওয়ালের হাতে। ১৯৪ রানের মাথায় পঞ্চম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
অশ্বিন-জাদেজা যুগলবন্দীতে এলো সহজ জয়-
টেস্টের প্রথম দুই-আড়াই দিন পেস সহায়ক থাকলেও ধীরে ধীরে স্পিনের জন্য আদর্শ হয়ে উঠছিলো চেন্নাইয়ের বাইশ গজ। পছন্দের পরিবেশে জ্বলে উঠলেন রবিচন্দ্রণ অশ্বিন (Ravichandran Ashwin) ও রবীন্দ্র জাদেজা (Ravindra Jadeja)। এর আগে ব্যাট হাতে ১৯৯ রানের জুটি গড়ে ভারতকে লড়াই করার মঞ্চ উপহার দিয়েছিলেন তাঁরা। আর আজ বল হাতেও হয়ে উঠলেন জয়ের মূল কাণ্ডারী। গতকালই ৩ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন অশ্বিন (Ravichandran Ashwin)। আজও ক্ষুরধার দেখালো তাঁকে।
শাকিবের (Shakib Al Hasan) পর মেহদী হাসান মিরাজ (8) ও তাস্কিন আহমেদের (৫) উইকেটও তুলে নেন তিনি। ইনিংসে ৮৮ রানের বিনিময়ে নিলেন ৬ উইকেট। এই নিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে ৩৭তম ‘ফাইফার’ তাঁর দখলে। ৮২ রানের লড়াকু ইনিংস খেলেও দলকে সাফল্য এনে দিতে পারলেন না শান্ত। তাঁকে ফেরান রবীন্দ্র জাদেজা (Ravindra Jadeja)। সাথে লিটন দাস (১) ও হাসান মাহমুদ’কেও (৭) আউট করেন তিনি। ২৩৪ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। এই মুহূর্তে টেস্ট কেরিয়ারে ২৯৯ উইকেটের মালিক জাদেজা। সবকিছু ঠিক থাকলে কানপুরেই স্পর্শ করবেন ৩০০ উইকেটের মাইলস্টোন।