IND vs BAN: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ জয়ের পর আত্মবিশ্বাসের শিখরে ছিলো বাংলাদেশ। ইতিপূর্বে লাল বলের খেলায় ভারতকে কখনও না হারালেও ইতিহাস গড়ার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন শান্ত, লিটন’রা। কিন্তু চেপকে তৃতীয় দিন শেষ হওয়ার আগেই বেশ ব্যাকফুটে তাঁরা। ২০১২ সালের পর থেকে কেন ঘরের মাঠে কোনো সিরিজ হারে নি ভারত, তা প্রতিবেশী দেশকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন ঋষভ পন্থ, রবিচন্দ্রণ অশ্বিন’রা। দ্বিতীয় দিনের শেষে ভারত এগিয়ে ছিলো ৩০৮ রানে। আজ সকালে ঋষভ ও শুভমান গিলের ঝোড়ো ব্যাটিং-এ লিড পেরিয়ে যায় ৫০০ রানের গণ্ডী। বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো করলেও দিন ফুরানোর আগে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ। জয়ের জন্য এখনও দরকার ৩৫৭ রান। পড়ে রয়েছে দুই দিন। সব মিলিয়ে স্বাগতিক দেশের সাফল্যের সম্ভাবনাই আপাতত উজ্জ্বল দেখাচ্ছে।
Read More: “এটা পাকিস্তান নয়…” তৃতীয় দিনে ভারতীয় দলের সামনে মুখ থুবড়ে পড়ল বাংলাদেশ, সমাজ মাধ্যমে হলো ট্রলের শিকার !!
জোড়া শতরান ঋষভ-শুভমানের-
সকালে ম্যাচ যখন শুরু হয়েছিলো তখন ভারতের স্কোরবোর্ডে ছিলো ৮১ রান। সাজঘরে ফিরে গিয়েছিলেন রোহিত শর্মা, যশস্বী জয়সওয়াল ও বিরাট কোহলি। আজকে প্রথম সেশন থেকেই রণংদেহী মূর্তি ধরেন ঋষভ পন্থ ও শুভমান গিল। বাংলাদেশী বোলারদের ছন্দ খুঁজে নেওয়ার কোনো রকম সুযোগই দেন নি তাঁরা। টেস্ট নয়, বরং ওয়ান ডে’র ভঙ্গিতে ব্যাটিং করছিলেন দুই তরুণ তুর্কি। নিয়মিত আসছিলো বাউন্ডারি। প্রথম ইনিংসে সাফল্য পাওয়া হাসান মাহমুদ বা তাস্কিন আহমেদকে দ্বিতীয় ইনিংসে সাধারণের স্তরে নামিয়ে আনেন তাঁরা। এক্সপ্রেস গতির নাহিদ রাণা’ও দাগ কাটতে পারেন নি। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগেই ২০০ পেরিয়ে যায় ভারত, তাও আবার কোনো উইকেট না হারিয়েই। শতরানের দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছলেন দুই ব্যাটার’ই। শুভমান অপরাজিত ছিলেন ৮৬ রানে, ঋষভের স্কোর তখন ৮২।
২১ মাস পর টেস্ট ক্রিকেটে পা রেখেছেন ঋষভ পন্থ। প্রত্যাবর্তন স্মরণীয় করে রাখলেন তিনি। শাকিব-মিরাজদের উপর চড়াও হয়ে দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই শতরান তুলে নেন তিনি। কিছুক্ষণের মধ্যেই মাইলস্টোন স্পর্শ করে ফেলেন শুভমান গিল’ও। ১২৮ বলে ১০৯ রান করে মেহদী হাসান মিরাজের বলে যখন উইকেট হারান ভারতের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার, তখন ম্যাচ প্রায় বাংলাদেশের ধরাছোঁয়ার বাইরে। আরও কিছুক্ষণ ব্যাটিং চালিয়ে যায় টিম ইন্ডিয়া। ছয় নম্বরে নেমে ১৯ বলে ৪টি বাউন্ডারির সাহায্যে ২২ করে অপরাজিত থাকেন কে এল রাহুল। ১১৯ করে নট-আউট থাকেন শুভমান’ও। শেষমেশ রোহিত যখন ডিক্লেয়ারের সিদ্ধান্ত নেন, ভারতের স্কোর তখন ৪ উইকেটে ২৮৭। বাংলাদেশের জন্য লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ৫১৫ রান।
খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ-
প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৪৯ রানে গুটিয়ে গিয়েছে বাংলাদেশ। তারপর ৫১৫ রানের বোঝা কি ভাবে সামলাবে তারা? এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছিলো ইনিংসের বিরতিতে। তবে ব্যাট হাতে শুরুটা ইতিবাচকই করেছিলেন টাইগার্সরা। দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও জাকির হাসান চেয়েছিলেন দ্রুত রান তুলে নিতে। বুমরাহ’কে সমীহ করলেও সিরাজের বলে বেশ কিছু বাউন্ডারি ছিনিয়ে নেন তাঁরা। ৬২ রানের মাথায় ভাঙে জুটি। বুমরাহ’র বলে আউট হন জাকির। করেন ৩৩ রান। গালি অঞ্চলে দুর্দান্ত ক্যাচ ধরে টিম ইন্ডিয়াকে আজ প্রথম সাফল্য এনে দিতে বড় ভূমিকা নেন যশস্বী জয়সওয়াল। এরপর সাদমান’কে ফেরান রবিচন্দ্রণ অশ্বিন। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ওপেনার ধরা পড়েন শুভমান গিলের হাতে। ৬৮ বলে তিনি করেন ৩৫ রান।
প্রথম ইনিংসে একটিও উইকেট পান নি অশ্বিন। দ্বিতীয় ইনিংসে বাইশ গজ থেকে টার্ন আদায় করে নিয়ে ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছেন তিনি। মোমিনুল হক’কে বোল্ড করেন ভারতীয় কিংবদন্তি। ২৪ বলে ১৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ১১ বলে ১৩ রানের বেশী এগোতে পারেন নি মুশফিকুর রহিম’ও। বাংলাদেশের মানরক্ষার দায়িত্ব আপাতত অধিনায়ক শান্ত ও অলরাউন্ডার শাকিব আল হাসানের কাঁধে। মন্দ আলোর জন্য খেলা বন্ধ হওয়ার আগে তাদের স্কোর ৪ উইকেটের বিনিময়ে ১৫৮ রান। ৫১ করে অপরাজিত রয়েছেন শান্ত, কঠিন পরিস্থিতিতেও সাবলীল দেখিয়েছে তাঁকে। স্পিনের বিরুদ্ধে স্যুইপ’কে অস্ত্র করেছেন। স্টেপ আউট করে ছক্কা’ও হাঁকিয়েছেন অশ্বিন’কে। শাকিবের সংগ্রহ আপাতত ৫ রান। আগামীকাল বড় পরীক্ষা দুজনের জন্যই।