IND vs AUS: পার্থ আশার আলো জ্বালিয়েছিলো। কিন্তু তা নিভিয়ে দিলো অ্যাডিলেড। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে মাত্র তিন দিনেই লজ্জার পরাজয় স্বীকার করে নিলো টিম ইন্ডিয়া (IND vs AUS)। গোলাপি বলের যুদ্ধে ২০২০ সালেও হেরেছিলো ‘মেন ইন ব্লু।’ ২০২৪-এও বদল এলো না ফলাফলে। প্রথম ব্যাটিং করতে নেমে ভারত গুটিয়ে গিয়েছিলো ১৮০ রানেই। জবাবে ৩৩৭ তুলে ফেলে অস্ট্রেলিয়া। অনবদ্য শতরান করেন ট্র্যাভিস হেড (Travis Head), অর্ধশতক মার্নাস লাবুশেনেরও। ১৫৭ রানে পিছিয়ে থামা টিম ইন্ডিয়া (Team India) ফের সম্মুখীন হয় ব্যাটিং বিপর্যয়ের। তৃতীয় দিনের সকালে ব্যাগি গ্রিন বাহিনীকে মাত্র ১৯ রানের ‘টার্গেট’ দিতে সক্ষম হয়েছিলো তারা। কোনো উইকেট না হারিয়েই লক্ষ্যমাত্রা ছুঁয়ে ফেলে তারা। জসপ্রীত বুমরাহ, নীতিশ রেড্ডির মত গুটিকয় ক্রিকেটার ছাড়া কাঠগড়ায় গোটা দলই। রোহিত-কোহলির (Virat Kohli) মত সিনিয়রের পারফর্ম্যান্স ‘আশাহত’ করেছে ক্রিকেটজনতাকে।
Read More: IND vs AUS 2nd Test: “সরে দাঁড়াক সিনিয়ররা…” অ্যাডিলেডে হার ভারতের, সোশ্যাল মিডিয়া জমছে ক্ষোভের পাহাড় !!
অ্যাডিলেডে হতাশ করলেন দুই তারকাই-
অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বরাবর ভালো খেলে এসেছেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। সব ফর্ম্যাট মিলিয়ে ১০টি শতরান রয়েছে তাঁর। ব্যাটিং গড় ৫০-এর উপরে। চলতি সিরিজের প্রথম ম্যাচেও ছুঁয়েছিলেন তিন অঙ্কের মাইলস্টোন। আশায় বুক বেঁধেছিলেন সকলে। কিন্তু অ্যাডিলেডে হতাশই করেছেন ভারতীয় মহাতারকা। প্রথম ইনিংসে উইকেট হারিয়েছিলেন ৭ রান করে। দ্বিতীয় ইনিংসে থামলেন ১১ রানে। অফস্টাম্পের বাইরের লাইনে বরাবরই দুর্বল তিনি। কিন্তু সম্প্রতি সেই দুর্বলতার বহর যেন বেড়ে গিয়েছে কয়েক গুণ। এবারের বর্ডার-গাওস্কর ট্রফিতে (BGT) তিন বার আউট হয়েছেন। তিন বারই পঞ্চম বা ষষ্ঠ স্টাম্পের লাইনে বল রেখে সাফল্য পেয়েছেন বোলাররা। বল খানিক নড়াচড়া করলেই যেভাবে উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে আসছেন তাতে বিশেষজ্ঞদের ধারণা যে দীর্ঘতম ফর্ম্যাটে ফুরিয়ে গিয়েছেন বিরাট।
রোহিত শর্মা’র (Rohit Sharma) জন্যও সুখকর অভিজ্ঞতা বয়ে আনে নি অ্যাডিলেড টেস্ট (IND vs AUS)। পার্থ-এ প্রথম ম্যাচটি ব্যক্তিগত কারণে খেলেন নি তিনি। পিঙ্ক বলের যুদ্ধেই ঘটিয়েছিলেন প্রত্যাবর্তন। হতাশ করেছেন ব্যাট হাতে। ওপেনিং স্লট ছেড়ে দিয়েছিলেন কে এল রাহুলকে (KL Rahul)। মিডল অর্ডারের অনভ্যস্ত পজিশনে ব্যর্থ হলেন রোহিত। প্রথম ইনিংসে উইকেট উপহার দিয়েছিলেন স্কট বোল্যান্ডকে। মাত্র ৩ করে ধরা পড়েছিলেন অ্যালেক্স ক্যারি’র দস্তানায়। দ্বিতীয় ইনিংসে প্রতিপক্ষ অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের (Pat Cummins) শিকার হলেন তিনি। লেট স্যুইং বুঝতেই পারেন নি ভারতীয় তারকা। তাঁকে হতভম্ব করে বল উড়িয়ে দেয় অফস্টাম্পের বেল। ১৫ বলে ৬ করেই থামতে হয় তাঁকে। লাল বলের খেলায় শেষ ১২ ইনিংসে মাত্র ১টি অর্ধশতক তাঁর। টানা ব্যর্থতার পরেও জায়গা আটকে রাখার অর্থ কি? উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন।
অস্ট্রেলিয়াতেই অবসর রোহিত-বিরাটের-
আন্তর্জাতিক টি-২০ থেকে রোহিত শর্মা (Rohit Sharma) ও বিরাট কোহলির (Virat Kohli) বিদায়টা সুখকর হয়েছিলো। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাঠে জিতেছিলেন ওয়ার্ল্ড কাপ। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে যেভাবে পারফর্ম করছেন তাঁরা, তাতে হতাশা সঙ্গী করেই হয়ত সরে দাঁড়াতে হবে তাঁদের। অ্যাডিলেডের হার বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের (WTC) পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষস্থান থেকে তিনে ঠেলে দিয়েছে টিম ইন্ডিয়াকে। যদি অজিদের বিপক্ষে (IND vs AUS) দল অবিশ্বাস্য কামব্যাক করতে না পারে, সেক্ষেত্রে আগামী বছরের ফাইনাল খেলার দৌড় থেকে ছিটকে যেতে হবে। তেমনটা ঘটলে নতুন বছরে লাল বলের ফর্ম্যাটে কোহলি ও রোহিতকে দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ বলে মনে করা হচ্ছে। ১০০০০ রানের মাইলস্টোনের সামনে দাঁড়িয়ে কোহলি। কিন্তু ধারাবাহিকতার অভাবের কারণে সেখানে আদৌ পৌঁছতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সন্দিহান অনেকেই। ৫০০০ টেস্ট রান অধরা থেকে যাবে রোহিতেরও।