গত বুধবার আইপিএল (IPL) ট্রফি উদ্যাপনের জন্য এক বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করেছিলো রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (RCB)। ঠিক ছিলো যে বিধানা সৌধ থেকে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম অবধি হবে শোভাযাত্রা। তারপর সেখানেই হবে মূল অনুষ্ঠান। বিজয়োৎসবের প্রথম পর্ব সমাপ্ত হয় নির্বিঘ্নে। কিন্তু এরপরেই ঘটে যায় বড়সড় বিপর্যয়। ৩৫০০০ আসনবিশিষ্ট চিন্নাস্বামীতে প্রবেশের মরিয়া চেষ্টা করতে থাকে কয়েক লক্ষ সমর্থক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠি চালিয়েছিলো পুলিশ। কিন্তু হিতে বিপরীত হয় তাতে। হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারান ১১ জন। আহত হন অনেকে। মর্মান্তিক দুর্ঘটনার দায় কার? তা নিয়ে চলছে চাপানউতোর। ফ্র্যাঞ্চাইজি (RCB), অনুষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থা ও কর্ণাটক ক্রিকেট সংস্থার বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে অভিযোগ।
Read More: ভাঙন ধরছে আঠারো বছরের সম্পর্কে, RCB ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন বিরাট কোহলি !!
RCB কর্তাকে রক্ষাকবচ দিলো না কোর্ট-

বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরু কাবন পার্ক থানায় অনুষ্ঠান আয়োজনের দায়িত্বে থাকা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থা ডিএনএ এন্টারটেইনমেন্টের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। অভিযোগপত্রে নাম ছিলো রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (RCB) ও কর্ণাটক স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনেরও (KSCA)। তদন্তে নামে কাবন পার্ক থানা ও সেন্ট্রাল ক্রাইম ব্রাঞ্চের (সিসিবি)র যৌথ বাহিনী। শুক্রবার সকালে মুম্বই যাওয়ার পথে বেঙ্গালুরু বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার হয়েছিলো আরসিবি’র (RCB) মার্কেটিং হেড নিখিল সোসালে (Nikhil Sosale)। এছাড়া সুমন্ত, কিরণ ও সুনীল ম্যাথিউ নামে ডিএনএ এন্টারটেনমেন্ট সংস্থার তিন আধিকারিককেও আটক করা হয়। আরসিবি (RCB) কর্তা রাজেশ মেনন ও কর্ণাটক ক্রিকেট সংস্থার সচিব ও কোষাধ্যক্ষের খোঁজেও হানা দিয়েছিলো পুলিশ। কিন্তু পাওয়া যায় নি তাঁদের।
পরে কর্ণাটক রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার (KSCA) সচিব এ শঙ্কর (A Shankar) ও কোষাধ্যক্ষ ই এস জয়রাম’কে (ES Jayaram) খানিক স্বস্তি দেয় হাইকোর্টের রায়। বিচারপতি এস আর কৃষ্ণকুমার পুলিশকে নির্দেশ দেন তাঁদের বিরুদ্ধে দমনমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ার জন্য। ১৬ তারিখ হবে পরবর্তী শুনানি, জানান তিনি। এরপর ঘটনার নৈতিক দায় কাঁধে নিয়ে পদত্যাগ করেন তাঁরা। শঙ্কর বা জয়রাম আদালতের রক্ষাকবচ পেলেও সেই সৌভাগ্য জুটলো না নিখিল সোসালের (Nikhil Sosale) কপালে। গ্রেপ্তারির বিরুদ্ধে আবেদন করেছিলেন আরসিবি’র (RCB) মার্কেটিং হেড। তাঁর গ্রেপ্তারি বেআইনি ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, অভিযোগ করেছিলেন তিনি। কিন্তু আজ তাঁকে অন্তবর্তীকালীন জামিন দিতে অসম্মত হয়েছে বেঙ্গালুরু হাইকোর্ট। আগামীকাল অবধি রায় ‘রিজার্ভ’ করেছেন বিচারপতি।
কাঠগড়ায় কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী-

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর (RCB) বিজয়োৎসবে পদপিষ্ট হয়ে ১১ জনের প্রাণহানির ঘটনায় লেগেছে রাজনৈতিক রঙ’ও। কাঠগড়ায় কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া (Siddaramaiah)। তাঁর উদ্যোগেই ঐ অনুষ্ঠান তড়িঘড়ি আয়োজন করা হয়েছিলো বলে খবর মিলেছে। সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে’কে রাজভবনের অন্দরে এক সূত্র জানিয়েছে যে আইপিএল জয়ী বেঙ্গালুরু দলকে রাজভবনে আমন্ত্রণ জানাতে চেয়েছিলেন রাজ্যপাল থাওয়ার চাঁদ গহলৌত। কিন্তু তাঁকে বাধা দেন সিদ্দারামাইয়া। বরং বিধানা সৌধের অনুষ্ঠানে রাজ্যপালকে আমন্ত্রণ জানান তিনি। ইতিপূর্বে যদিও আরসিবি’র বিজয়োৎসবের সাথে সরকারী সংযোগ অস্বীকার করেছিলেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি, জেডিএস-এর মত বিরোধীরা মৃতদেহ নিয়ে রাজনীতি করছে, অভিযোগ করেছিলেন তিনি। সতিটা কি? তা নিয়েই এখন কৌতূহল সকলের।