আইপিএলের (IPL) আসরে নজর কেড়ে নিয়েছিলেন হর্ষিত রাণা (Harshit Rana)। তরুণ ফাস্ট বোলার কলকাতা নাইট রাইডার্সের ট্রফি জয়ের অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছিলেন। মিচেল স্টার্ক, আন্দ্রে রাসেলদের মত আন্তর্জাতিক তারকাদের সাথে পাল্লা দিয়ে পারফর্ম করেছিলেন বেগুনি-সোনালী জার্সি গায়ে। তুলে নিয়েছিলেন ১৯ উইকেট। আইপিএলে (IPL) তাঁর আগ্রাসী মানসিকতা ও নজর কাড়া নিয়ন্ত্রণের প্রশংসা করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। তরুণ তুর্কি’র দক্ষতায় মোহিত হয়েছিলেন গৌতম গম্ভীর’ও (Gautam Gambhir)। নাইট রাইডার্সের মেন্টরের পদ ছেড়ে তিনি জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পরেই আন্তর্জাতিক আঙিনায় প্রথমবার পা রাখেন হর্ষিত। টি-২০ খেলার কথা ছিলো বাংলাদেশের বিপক্ষে। কিন্তু তা আর হয় নি অসুস্থতার জন্য। লাল বলের ফর্ম্যাটে ভারতের হয়ে অভিষেক হয়েছে তাঁর। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দুই টেস্টেই খেলেছেন হর্ষিত (Harshit Rana)।
Read More: “সঠিক জায়গায় পয়সা ব্যয়…” মুস্তাক আলীতে ঝড় রাহানের, সমাজ মাধ্যমে চর্চা KKR’এর !!
অ্যাডিলেডে নাস্তানাবুদ হলেন হর্ষিত-
পার্থ-এর অপটাস স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্ট ম্যাচে জসপ্রীত বুমরাহ’র (Jasprit Bumrah) অবিশ্বাস্য বোলিং-এ ভর করে ২৯৫ রানের ব্যবধানে জিতেছে টিম ইন্ডিয়া (Team India)। সেখানে বুমরাহ’র সহযোগী হিসেবে ভালোই বোলিং করেছিলেন হর্ষিত। প্রথম ইনিংসে ৩টি ও দ্বিতীয় ইনিংসে ২টি উইকেট পান। যে ডেলিভারিটিতে ফিরিয়েছিলেন ট্র্যাভিস হেড’কে (Travis Head), সেটির প্রশংসা শোনা গিয়েছিলো কিংবদন্তি ক্রিকেটারদের মুখ থেকেও। গুড লেন্থে পিচ করার পর লেট স্যুইং দেখা গিয়েছিলো হর্ষিতের ডেলিভারিতে। হেড-এর বাড়িয়ে দেওয়া ব্যাটের নাগাল এড়িয়ে তা আছড়ে পড়েছিলো তাঁর অফস্টাম্পের একদম গোড়ায়। অভিষেক ম্যাচের পারফর্ম্যান্স দেখে অনেকেই মনে করেছিলেন যে লম্বা রেসের ঘোড়া হতে পারেন হর্ষিত (Harshit Rana)। প্রশংসার ঝড় অবশ্য স্থায়ী হয় নি দীর্ঘদিন। দ্বিতীয় টেস্টের পরেই থেমেছে তা।
অ্যাডিলেড ওভালে ছিলো দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচটি। দিন-রাতের খেলায় বল হাতে রীতিমত নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে হর্ষিত’কে (Harshit Rana)। আইপিএলের (IPL) আসরে বা অভিষেক টেস্টে যে পারফর্ম্যান্স তিনি করেছিলেন তার ধারেকাছেও পৌঁছন নি । গোলাপি বল নিয়ন্ত্রণ করতে বিশেষ দক্ষতার প্রয়োজন হয়। স্টার্ক, বুমরাহ বা কামিন্সরা তা করতে সক্ষম হলেও হতাশই করেছেন হর্ষিত। । অস্ট্রেলীয় ইনিংস চলাকালীন তাঁকে অনায়াসে খেলেছেন মার্নাস লাবুশেন (Marnus Labuschagne), ট্র্যাভিস হেড’রা। বিশেষ করে ট্র্যাভিস হেড রীতিমত ছেলেখেলা করেন তাঁকে নিয়ে। ৮৬ রান খরচ করেও কোনো উইকেটই পান নি তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে আর তাঁকে দিয়ে বোলিং-ই করান নি অধিনায়ক রোহিত। তড়িঘড়ি হর্ষিতকে (Harshit Rana) জাতীয় দলে জায়গা দেওয়ার অন্যতম কারণ ছিলো ঘরোয়া ক্রিকেটে তাঁর ব্যাটিং পরিসংখ্যান। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে দুই ইনিংসে জোড়া শূন্য ছাড়া কিছু করতে পারেন নি।
ব্রিসবেনে বাদ পড়ছেন হর্ষিত ?
অ্যাডিলেডে হতাশাজনক পারফর্ম্যান্সের পরেও অধিনায়ক রোহিত শর্মা (Rohit Sharma) পাশে দাঁড়িয়েছেন হর্ষিত রাণা’র (Harshit Rana)। দিল্লীর পেসার সম্পর্কে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানান, “হর্ষিত প্রথম টেস্টে গুরুত্বপূর্ণ সময় উইকেট তুলে নিয়েছে। আমি মনে করি যে কেউ ভুল না করলে তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার কোনো মানে নেই। সেটা হলে দলে বাকি কি করে সুরক্ষিত বোধ করবে? তারা ভাববে যে আমাদের একটা মাত্র সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু পরেরটাতেই বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। সেটা কোনো খেলোয়াড় বা দলের জন্যই ভালো ব্যাপার নয়।” অধিনায়কের আশ্বাসের পরেও ব্রিসবেনের তৃতীয় টেস্ট ম্যাচে আদৌ বোলিং রান-আপে হর্ষিতকে (Harshit Rana) দেখা যাবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। সূত্রের খবর যে আকাশ দীপ’কে তৃতীয় সিমার হিসেবে প্রস্তুত রাখছে টিম ইন্ডিয়া। হর্ষিতকে রিজার্ভ বেঞ্চে রেখে বঙ্গপেসারকেই দেওয়া হতে পারে সুযোগ।