ডান হাতি ফাস্ট বোলার হর্ষল প্যাটেল (Harshal Patel) ২০২১ সালে প্রথম ডাক পেয়েছিলেন টিম ইন্ডিয়াতে (Team India)। দ্রুত কুড়ি-বিশের ফর্ম্যাটে দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে ওঠেন তিনি। একইসাথে আইপিএল ও ঘরোয়া ক্রিকেটেও সাদা বলের খেলায় অনবদ্য পারফর্ম্যান্স ছিলো তাঁর। বিরাট কোহলি’র রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (RCB) ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে একের পর এক ম্যাচ জেতানো পারফর্ম্যান্স করেছেন তিনি। কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী হয় নি সেই সাফল্য। ২০২২-এর শেষ দিক থেকেই ধার কমতে শুরু করেছিলো তাঁর বোলিং-এ। ২০২৩-এর শুরুতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ব্যর্থতার পর আর তাঁকে খেলানোর ঝুঁকি নেয় নি টিম ইন্ডিয়া। তারপর থেকে বেশ কিছু টি-২০ সিরিজ খেলেছে ভারতীয় দল। মুখোমুখি হয়েছে অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, আফগানিস্তান প্রভৃতি প্রতিপক্ষের। ডাক পান নি হর্ষল (Harshal Patel)।
Read More: ৬, ৬, ৬, ৬, ৬…CSK উইকেটরক্ষকের ধুন্ধুমার ব্যাটিং, করে ফেললেন ট্রিপল সেঞ্চুরি !!
IPL-এ দারুণ পারফর্ম্যান্স হর্ষলের-
২০২১-এর আইপিএলে দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্স করেছিলেন হর্ষল প্যাটেল (Harshal Patel)। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে এক মরসুমে তুলে নিয়েছিলেন ৩২ উইকেট। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে এক মরসুমে সর্বোচ্চ সংখ্যক উইকেট তোলার রেকর্ড গড়ে তিনি। জায়গা করে নেন কিংবদন্তি ডোয়েন ব্র্যাভোর (Dwayne Bravo) পাশে। ট্রফি না জিতলেও জেতেন পার্পল ক্যাপ। এরপর দুটি মরসুম ভালো কাটে নি তাঁর। তাঁকে দল থেকে বাদ দিয়ে দেয় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স (RCB)। নিলামের পর ঠাঁই হয় পাঞ্জাব কিংস শিবিরে। ২০২৪-এ ফের ছন্দে ফেরেন তিনি। রান খরচ করলেও নিয়মিত উইকেট তুলে পাঞ্জাবকে লড়াইতে রেখেছিলেন তিনি। ১৪ ম্যাচে ১৯.৮৭ গড়ে তুলেন নেন ২৪ উইকেট। জসপ্রীত বুমরাহ, বরুণ চক্রবর্তীদের পিছনে ফেলে ফের জেতেন পার্পল ক্যাপ। ভুবনেশ্বর কুমার, ডোয়েন ব্র্যাভোদের সাথে একাধিকবার সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী হওয়ার রেকর্ড ভাগ করে নেন তিনি।
জাতীয় দলের বাইরেই রয়েছেন হর্ষল প্যাটেল-
টি-২০ ফর্ম্যাটে স্পেশ্যালিস্ট বলে মনে করা হত হর্ষল প্যাটেলকে (Harshal Patel)। ভ্যারিয়েশনের জন্য প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের কাছে ত্রাস হয়ে ওঠার ক্ষমতা ছিলো তাঁর। বিশেষ করে তাঁর স্লোয়ার ইয়র্কারগুলি সামলাতে মুশকিলে পড়তে দেখা গিয়েছে ব্যাটারদের। কিন্তু এই স্লোয়ারে অত্যধিক জোর দিতে গিয়েই সম্ভবত গতি ও নিয়ন্ত্রণ থেকে বিচ্যুত হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। যার ফলে ধারাবাহিকতার অভাব দেখা গিয়েছে তাঁর পারফর্ম্যান্সে। কোনো ম্যাচে ৩ বা ৪ উইকেট নিলেও হয়ত পরবর্তী ম্যাচেই চার ওভারে হজম করেছেন ৪০ বা ৪৫ রান। বুমরাহ, সিরাজ, আর্শদীপদের (Arshdeep Singh) সাথে প্রতিযোগিতায় হয়ত সেই কারণেই পেরে ওঠেন নি তিনি। ফলে বাদ পড়তে হয়েছে টিম ইন্ডিয়া (Team India) থেকে। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কা সিরিজে শেষ তাঁকে দেখা গিয়েছে ভারতের হয়ে মাঠে নামতে।
গম্ভীরের পছন্দের তালিকাতেও নেই হর্ষল-
রাহুল দ্রাবিড় (Rahul Dravid) জমানাতে অভিষেক হয়েছিলো হর্ষল প্যাটেলের (Harshal Patel)। তাঁকে ছেঁটেও ফেলেছিলেন তিনিই। সম্প্রতি নতুন কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন গৌতম গম্ভীর। তাঁর জমানাতেও হর্ষলের প্রত্যাবর্তনের বিশেষ সম্ভাবনা দেখছেন না ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। শ্রীলঙ্কা সফরের দল নির্বাচন থেকেই মিলেছে সেই আভাস। জসপ্রীত বুমরাহ’র (Jasprit Bumrah) মত প্রথম সারির ফাস্ট বোলার ছিলেন না। চোটের কারণে জায়গা পান নি মহম্মদ শামি’ও। তা সত্ত্বেও ডাক পান নি হর্ষল। বরং তরুণ তুর্কি হর্ষিত রাণা (Harshit Rana), খলিল আহমেদ, আর্শদীপ সিং-দের উপর আস্থা রেখেছিলেন গম্ভীর। এরপর যখন কঠিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে পূর্ণ শক্তির স্কোয়াড নিয়ে মাঠে নামবে টিম ইন্ডিয়া (Team India), তখন যে পেকিং অর্ডারে আরও পিছিয়ে পড়বেন হর্ষল, তা বলাই বাহুল্য।