পুরুষদের টি-২০ বিশ্বকাপ শেষ হয়েছে কিছুদিন আগে। এবার পালা মহিলাদের। সেমিফাইনাল থেকেই হেরে ফিরে আসতে হয়েছে ছেলেদের। সেই একই ভুল করতে রাজী নন মেয়েরা। মহিলা দলের অধিনায়ক হরমনপ্রীত কৌর(Harmanpreet Kaur) ট্রফি জয় ছাড়া আর কিছু ভাবছেন না এই মুহূর্তে। ক্যাপ্টেনের দেখানো পথেই চলেছেন স্মৃতি মন্ধানা, জেমাইমা রড্রিগেজ’রা। বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে কলকাতায় একটি ফ্যাশন শো’তে অতিথি হয়ে এসেছিলেন মহিলা ক্রিকেটের জনপ্রিয় নাম হরমনপ্রীত। ‘সিটি অফ জয়’তে এক সাক্ষাৎকারে জাতীয় দল, আসন্ন টি-২০ বিশ্বকাপ এবং মহিলাদের আইপিএল নিয়ে অকপট মন্তব্য করলেন তিনি। আসন্ন মহিলাদের আইপিএল মেয়েদের ঘরোয়া ক্রিকেটে বিপ্লব আনতে চলেছে, সে নিয়েও আশাবাদী হরমনপ্রীত(Harmanpreet Kaur)।
সাক্ষাৎকারের টুকরো ছবি রইলো এখানে
ক্রিকেটার হিসেবে সবসময় একটাই জিনিস শিখেছি, যে দায়িত্ববান হতে হবে, দলে দায়িত্ব নিতে হবে, আর দলে নিজের ভূমিকা নিয়ে সন্তষ্ট হতে। প্রতিটা মুহূর্ত খুব স্পেশ্যাল, তাকে উপভোগ করতে হয়। এগুলোই আমায় মানসিক জোর দেয়। ম্যাচে পছন্দের ফলাফল পেলে যে সন্তুষ্টি আসে, তার থেকে নিজের ১০০% দিয়েছি আজ, এটা বুঝলে আরও বেশী খুশি হই। এই ভাবনাগুলোই আমায় মোটিভেশন দেয়।
ঝুলন ও মিতালি’র প্রশংসায় পঞ্চমুখ
ওঁরা আমাদের মেয়েদের কাছে প্রেরণা ছিলেন, ওঁদের অভাব আমরা প্রতি মুহূর্তে অনুভব করি। তবে আজ যখন ওনারা সরে দাঁড়িয়েছেন, এটা আমদেরই দায়িত্ব দল’কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। যে কঠিন লড়াই ওনারা করেছিলেন, তাকে বৃথা হতে দিতে আমরা পারি না। ওঁদের জন্যই আজ আমাদের যাবতীয় নাম বা জনপ্রিয়তা। সেইকথা আমরা কখনও ভুলবো না। ঝুলন দি’র সাথে শেষ ইংল্যান্ড সিরিজ’টা খুবই স্পেশ্যাল ছিলো আমাদের কাছে। আমরা চেয়েছিলাম নিজেদের ১০০% দিতে, চেয়েছিলাম বোঝাতে যে ঝুলন দি আমাদের কাছে কতটা স্পেশ্যাল।
আইপিএল আমাদের জন্য স্পেশাল – হারমান
মেয়েদের আইপিএলের দিকে আমরা অধীর আগ্রহে তাকিয়ে রয়েছি। দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা হতে চলেছে। বিশেষ করে ঘরোয়া ক্রিকেটারদের কাচেহ, যাঁদের দারুণ প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও হয়ত আন্তর্জাতিক আঙিনায় খেলার সুযোগ মেলে না। আসন্ন আইপিএল তাঁদের কাছে আত্মপ্রকাশের একটা দুর্দান্ত মঞ্চ হতে চলেছে, যদি ভালো খেলতে পারে তাঁরা, হয়ত খুলে যাবে জাতীয় দলের দরজা’ও। এছাড়া দেশ-বিদেশের ক্রিকেট মহাতারকাদের সাথে একই ড্রেসিংরুম ভাগ করে নেওয়ার অভিজ্ঞতা হবে অনেকের। সেরা খেলোয়াড়দের পাশে খেললে আপনা-আপনি নিজের খেলা উন্নত হয়ে যায় অনেকটা। তাই আসন্ন আইপিএল অনেক কিছু শেখার সুযোগ তরুণ প্রতিভাদের কাছে। আমি নিজে যখন বিবিএল বা দ্য হান্ড্রেডের মত বিদেশী টুর্নামেন্টগুলো খেলেছি, বুঝেছি এই কথাটা। অনেক কিছু শেখা যায়। ক্রিকেট নিয়ে আমি কি ভাবছি আর বাকিরা কি ভাবছে তার একটা তূল্যমূল্য বিচার করে দেখা যায়।
মহিলা ক্রিকেটের ভবিষৎ উজ্জ্বল
বিশ্বকাপের মত মঞ্চে প্রতিটি ম্যাচেই ঐ বিশেষ দিনে প্রতিপক্ষ কেমন খেলছে তা মাথায় রাখতে হয়। আগে থেকেই কে কঠিন প্রতিপক্ষ ভাবতে গেলে নিজেদের মনেই দ্বিধাদ্বন্দ্ব চলে আসে। যে দল’ই সামনে আসুক, আমরা সেই নির্দিষ্ট ম্যাচে কি কি করণীয় তা নিয়ে আলোচনা করি। আর চেষ্টা করি মাঠে সেই ভাবনাগুলো’কে কাজে প্রতিফলিত করতে। হ্যাঁ আমরা অবশ্যই প্রতিপক্ষের শক্তি আর দুর্বল দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করি, তবে অতিরিক্ত সন্মান কাউকে দেখানোর ভাবনা আমাদের মধ্যে নেই। খেলার মাঠে প্রতিপক্ষ’কে সন্মান তো অবশ্যই করতে হয়, তবে অতিরিক্ত হয়ে গেলে নিজেদেরই চাপে পড়ে যেতে হয়। আমরা নিজেদের খেলাতেই বেশী মন দিতে চাই। আপাতত দলের হয়ে নিজেদের পারফর্ম্যান্স উন্নত থেকে উন্নততর করে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।